বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সিসি লোন ও কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি জানুন
মোবাইলে জন্ম নিবন্ধন যাচাই করার নিয়ম জানুন
বর্তমানে আমরা অনেকেই কৃষি ব্যাংক লোন, কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন, বাংলাদেশ কৃষি
ব্যাংক সিসি লোন সহ কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি জানতে চাই।বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেবা
প্রধান কারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম এবং অন্যতম হচ্ছে কৃষি ব্যাংক।তবে
সঠিক তথ্য না জানার কারণে বা সঠিক পদ্ধতি না জানার কারণে অনেকেই ব্যাংক থেকে লোন
পাস করতে পারে না।
অনেকেই আবার কৃষি ব্যাংক লোন পেতে নানারকম হয়রানির শিকার হয়।তাই আজকের এই
আর্টিকেলে আমি আপনাদেরকে কৃষি ব্যাংক লোন, কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন, বাংলাদেশ কৃষি
ব্যাংক সিসি লোন,কৃষি ব্যাংক লোন পাওয়ার শর্তাবলী সহ কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতির সঠিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।তাই
যারা কৃষি ব্যাংক লোন পেতে চান অথবা কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি জানতে আগ্রহী তারা
অবশ্যই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সিসি লোন ও কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি জানুন
কৃষি ব্যাংক লোন
কৃষি ব্যাংক লোন হলো শস্য, পশুপালন, প্রানিসম্পদ, মৎস্য চাষ ও ফলমূল চাষের জন্য
যে লোন প্রদান করা হয় তাকে কৃষি ব্যাংক লোন বুঝায়।বাংলাদেশ সরকার দ্বারা
পরিচালিত ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক।বাংলাদেশের কৃষি
ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষকরা ঋণ নিতে পারেন এবং কৃষি কাজ চালিয়ে নিতে
আর্থিক সহায়তা পায়।
আরো জানুনঃ কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা ব্যাংক স্টেটমেন্ট
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে কৃষকরা নানান ধরনের সহায়তা ও ঋণ পাওয়ার সুযোগ
থাকে। যেমন :কৃষি ব্যাংক লোন, কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক
সিসি ও লোন কৃষি ব্যাংক গাভী লোন সহ আরো অনেক ধরনের সহায়তা পেয়ে থাকেন।বাংলাদেশ
কৃষি ব্যাংকের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্জন করা এবং এর
পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী করে তোলা।
বাংলাদেশের কৃষি কাজের চাহিদা বৃদ্ধি করার জন্য এবং কৃষকের কাজে সহায়তা করার
জন্য বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে।কৃষি ব্যাংক লোন হলো বাংলাদেশের অন্যতম
একটি লোন বিশেষ করে কৃষক বা কৃষি কাজের মানুষদের জন্য বাংলাদেশের অন্যান্য
ব্যাংকিং সেবার গুলোর মধ্যে কৃষি ব্যাংক অন্যতম।মূলত কৃষি কাজের সকল চাহিদা পূরণ
করার জন্য বা কৃষিকাজে সহায়তা করতে কৃষি ব্যাংকের মূল লক্ষ্য।
কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন
বর্তমানে বাংলাদেশের গরীব ও দরিদ্র কৃষকদের জন্য পার্সোনাল লোন সুবিধা চালু করেছে
সরকার।একজন কৃষক চাইলে এখন কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন নিতে পারেন। আমাদের দেশের
অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণভাবে ভূমিকা পালন করে কৃষকরা।
তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বাংলাদেশের কৃষি পণ্য তৈরি হয়।তাই কৃষি ব্যাংক
পার্সোনাল লোন প্রদান করা শুরু করেছে। কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন পেতে হলে একজন
ব্যক্তিকে কৃষি কাজের সাথে জড়িত থাকতে হবে তাহলে ওই ব্যক্তি বাংলাদেশ কৃষি
ব্যাংক থেকে তার পার্সোনাল কাজের জন্য লোন পাবে।
কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোনের হার ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন গ্রহণের জন্য আবেদনকারী ব্যক্তির জাতীয়
পরিচয় পত্র সহ কৃষি কাড প্রয়োজন হবে। আবেদনকারীর এবং জামানত কারীর পাসপোর্ট
সাইজের ছবি এবং জামানত কারীর ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি বিশেষ প্রয়োজন হবে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোনের হার ৮% করা হয়েছে।এছাড়া
আপনারা চাইলে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন সম্পর্কিত আরো সকল তথ্য
বিস্তারিত জানতে চাইলে আপনার উপজেলা কৃষি ব্যাংক শাখায় যোগাযোগ করে ব্যাংক
কর্মকর্তার সাথে এ বিষয়ে সম্পূর্ণ আলোচনা করুন।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সিসি লোন
বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সিসি লোন প্রদান করে। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সিসি
লোন পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে আপনার সম্পদ জমা রাখতে হবে। সিসি লোন
বলতে আমাদের বোঝানো হয় ক্রাস ক্রেডিট লোনকে।সাধারণত সিসি লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে
যে পরিমাণ লোন নিবেন সেই লোনের দ্বিগুণ সম্পদ ব্যাংকে জমা রাখতে হবে।
বড় অংকের টাকা লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে কৃষকরা সিসি লোন নিয়ে থাকে।বাংলাদেশ কৃষি
ব্যাংক সিসি লোন সাধারণত ১৮ মাস থেকে পাঁচ বছর মেয়াদী পর্যন্ত দিয়ে থাকে।যারা
বড় কোন কৃষি প্রকল্প বা গরুর খামার করতে চায় তারা সাধারণত সি সি লোন নিয়ে
থাকে।
সিসি লোন নিতে হলে কৃষি কাজে অভিজ্ঞতা সহ দক্ষতা থাকতে হবে। এবং বাংলাদেশ কৃষি
ব্যাংক থেকে সিসি লোন নেওয়ার পরে সেই লোন পরিশোধ করার ক্ষমতা থাকতে হবে।আশা করি
সকলেই বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সিসি লোন সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
কৃষি ব্যাংক গাভী লোন
বর্তমান সরকার কৃষকদের কে কৃষি ব্যাংক গাভী লোন প্রদান করা হচ্ছে। বর্তমানে
বেশিরভাগ কৃষকরা যারা গাভী পালন করে বা গরুর খামার করে তারা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক
থেকে গাভী লোন নিয়ে থাকে।যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে গাভী কিনতে চায় বা গরুর
খামার করতে চায় তারা চাইলে খুব সহজেই বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে গাভী লোন নিতে
পারবে।
কৃষি ব্যাংক থেকে গাভী লোন দেওয়া হয় মধ্যম মেয়াদি ঋণ হিসেবে। কৃষি ব্যাংক গাভী
লোন পাওয়ার জন্য মাধ্যম দুইটি :
- সরাসরি কৃষি ব্যাংকে গিয়ে গাভী লোন আবেদন করা যায়।
- অনলাইনের মাধ্যমে কৃষি ব্যাংকে গাভী লোন আবেদন করা যায়।
উপরে উল্লেখিত এই দুইটি মাধ্যমে খুব সহজে আপনি কৃষি ব্যাংকে গাভী লোনের জন্য
আবেদন করতে পারবেন। কৃষি ব্যাংক গাভী লোন পাওয়ার জন্য আবেদনে যে সকল তথ্য দিতে
হবে তা নিচে উল্লেখ করা হলো :
- আবেদনকারীর নাম।
- আবেদনকারীর ঠিকানা।
- আবেদনকারীর নিজস্ব সচল মোবাইল নাম্বার।
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার অথবা জন্ম নিবন্ধন।
- পিতা মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রর ফটোকপি।
- যে ধরনের জন্য ঋণ নিতে চায় তার নাম।
- যে ব্যক্তি আপনার ঋণের জন্য জামিনদার হবে তার জাতীয় পরিচয় পত্র ফটোকপি।
- নিজের এবং জামিনদারের পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
উপরে উল্লেখিত এ সকল কাগজপত্র আবেদনের সাথে সংযুক্ত করে জমা দিলেই ইনশাআল্লাহ
আপনার আবেদনটি সম্পন্ন হবে। আশা করি কৃষি ব্যাংক গাভী লোন কি এবং কৃষি ব্যাংক
গাভী লোন পেতে কি কি প্রয়োজন তা জানতে পেরেছেন।
কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি
বাংলাদেশের দরিদ্র কৃষকদের কৃষি ব্যাংক লোন প্রদান করে থাকে। তবে অনেক কৃষক
ব্যাংক থেকে লোন পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা না থাকার কারণে বারবার লোন নিতে ব্যর্থ
হয়।তাই কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পেতে হলে অবশ্যই কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে এবং প্রয়োজনে কিছু
কাগজপত্র থাকতে হবে।মূলত কৃষকদেরকে শস্য খাতে লোন প্রদান করা হয় এর জন্য তাদের
নিজস্ব কিছু পরিমাণ জমি থাকতে হবে এবং কৃষি কাজে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। যাদের জমি
আছে কিন্তু জমিতে চাষাবাদ করার জন্য তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে টাকা নাই।
তারা যদি কৃষি ব্যাংকের যেকোনো শাখায় সঠিক তথ্য দিয়ে আবেদন করে তাহলে অতি সহজেই
কৃষি ব্যাংক লোন পেয়ে যাবে।দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং কৃষকদের জীবন যাত্রার
মান উন্নতি করতে কৃষি ব্যাংকের ভূমিকা রয়েছে অনেক।বর্তমানে প্রায় বাংলাদেশের
অধিকাংশ জেলায় কৃষি ব্যাংকের সেবা চালু রয়েছে।
এছাড়া কৃষি ব্যাংক থেকে অনেকগুলো উপায়ে আপনি গুণ গ্রহন করতে পারবেন তবে এই লোন
১৮ মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। কৃষি ব্যাংকটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন খাতে
কৃষকদের জীবনযাত্রা মান উন্নয়ন করতে পাঁচ বছর মেয়াদি পর্যন্ত লোন প্রদান করে
থাকে।কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পেতে হলে আপনার যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন :
- আপনার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
- আপনার নিজস্ব দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
- আপনার এলাকার চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট।
- আপনার জামিনদারের ভোটার আইডি কার্ড এবং দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
উপরের উল্লেখিত কাগজপত্র গুলো সঠিকভাবে জমা দিতে পারলে আপনি খুব সহজেই কৃষি
ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন। এছাড়া যদি আপনি যদি পাঁচ থেকে দশ লাখ অথবা তারও
বেশি ঋণ নিতে চান তাহলে অবশ্যই তার দ্বিগুণ পরিমাণ সম্পদ ব্যাংকে জমা দিতে হবে।
আশাকরি কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি সম্পর্কে আপনাদেরকে বিস্তারিত জানাতে পেরেছি।
কৃষি ব্যাংক লোন পাওয়ার শর্তাবলী
বাংলাদেশের যে কোন ব্যাংকের লোন নিতে গেলে সেই ব্যাংকের কিছু শর্তাবলী থাকে। ঠিক
তেমনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার জন্য কিছু শর্তাবলী রয়েছে।কৃষি
ব্যাংকের শর্তাবলী গুলো পূরণ করলেই কেবলমাত্র আপনি কৃষি ব্যাংক থেকে থেকে লোন
পাবেন। চলুন জেনে কৃষি ব্যাংক লোন পাওয়ার শর্তাবলী গুলো।
- বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
- কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে হলে প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে।
- যাদের ঋণ খেলাপি রয়েছে তারা নতুন করে ঋণ পাবে না।
- যারা কৃষি ঋণ নিতে চায় তারা সরাসরি কৃষিকাজে নিয়োজিত থাকতে হবে।
- ঋণ নেওয়ার পর ঋণ পরিষদের ক্ষমতা থাকতে হবে।
- প্রকল্প ঋণ নিতে হলে অবশ্যই শিক্ষিত এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- কোন দেউলিয়া জমিতে কৃষি ব্যাংক ঋণের জন্য বিবেচিত হবে না।
- যে সকল খাতে ঋণ নিতে চায় সে সকল কাজে পেশাদারী অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা থাকতে হবে।
উপরে উল্লেখিত এ সকল শর্তাবলী যদি আপনি সঠিকভাবে মানতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনি
কৃষি ব্যাংক থেকে কৃষি ব্যাংক লোন, কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন, বাংলাদেশ কৃষি
ব্যাংক সিসি লোন সহ কৃষি ব্যাংক গাভী লোন পেতে পারেন।
লেখকদের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আপনারা যদি কৃষি ব্যাংক লোন নিতে চান তাহলে অবশ্যই আপনারা কৃষি কাজে
অভিজ্ঞ হয়ে নিবেন। কৃষি ঋণ পাওয়ার জন্য কৃষিকাজে সরাসরি নিয়োজিত থাকতে
হয়।বর্তমানে বাংলাদেশে কৃষি কাজে অভিজ্ঞতা হওয়ার জন্য অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠান
রয়েছে যেখানে গিয়ে আপনি কৃষি কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।
আশাকরি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে কৃষি ব্যাংক লোন, কৃষি ব্যাংক পার্সোনাল লোন,
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সিসি লোন,কৃষি ব্যাংক গাভী লোন, কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি সহ
কৃষি ব্যাংক লোন পাওয়ার শর্তাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।এরকম আরো
ব্যাংকিং সেবা পেতে চোখ রাখুন টুইস্ট ইনফো ওয়েবসাইটে ধন্যবাদ।
টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।
comment url