আম খাওয়ার নিয়ম ও আম খাওয়ার ১০টি উপকারিতা জানতে পড়ুন

ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়মগ্রীষ্মকালে পাকা আমের সুমিষ্ট স্বাদ আর ঘ্রাণের কারণেই তীব্র গরম অনেকটাই ভুলে যাওয়া সম্ভব হয়।আম শুধু স্বাদ নয় আমে আছি অনেক পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা। তাই আজকের আর্টিকেলে আম খাওয়ার নিয়ম, আম খাওয়ার উপকারিতা, গর্ভ অবস্থায় আম খাওয়ার উপকারিতা, এবং শিশুদের আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব।
আম খাওয়ার নিয়ম ও  আম খাওয়ার ১০টি উপকারিতা
আম হলো সবার কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ফল যা গ্রীষ্মকালে পাওয়া যায়। আমের বৈজ্ঞানিক নাম হল ম্যাংগিফেরা ইন্ডিকা।আমকে ফলের রাজা বললে ভুল হবে না।আম জনপ্রিয় ফল হলেও আমের উপকারিতা ও আম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই।তাই আম খাওয়ার নিয়ম, আম খাওয়ার উপকারিতা, গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার উপকারিতা এবং শিশুদের আম খাওয়ার উপকারিতা জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সূচিপত্র: আম খাওয়ার নিয়ম ও  আম খাওয়ার ১০টি উপকারিতা

আম খাওয়ার নিয়ম

আমরা অনেকেই আম খেতে অনেকটাই পছন্দ করি কিন্তু আম খাওয়ার নিয়ম রয়েছে যেগুলো আমরা জানিনা যার কারণে আমরা সঠিকভাবে আম খাওয়ার উপকারিতা পাই না।তাই আমের উপকারিতা পেতে হলে আম খাওয়ার নিয়ম আগে সঠিকভাবে জানতে হবে।আম বাজার থেকে কিনে আনুন বা নিজের গাছের আম হোক আম খাওয়ার আগে অবশ্যই সর্বনিম্ন এক ঘণ্টা পর্যন্ত ভিজিয়ে রাখুন।
কারন আমে রয়েছে ফাইটিক এসিড নামক উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।তাই আম খাওয়ার আগে ভালোমতো ভিজিয়ে রাখুন।আম ভিজিয়ে রাখার পরে খাওয়ার আগে আবার পরিষ্কার পানি দিয়ে একবার ধুয়ে নিন। আম খাওয়ার আগে মনে রাখবেন আম ও দুই এক সঙ্গে কখনোই খাবেন না। কারণ আমের মধ্যে থাকা কিছু উপাদান দই এর সঙ্গে একসাথে খেলে বিক্রিয়া ঘটাতে পারে। যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
আম খাওয়ার সাথে সাথে কখনোই পানি খাবেন না এতে আপনার হজমের সমস্যা হতে পারে কারণ আমের উপাদানগুলো হজম হয়ে শরীরে মিশতে বেশ সময় লাগে। আম খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পরে পানি পান করবেন।তারা হলে আপনার এসিডিটি হতে পারে।আশা করি আম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন এবার চলুন আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।

আম খাওয়ার উপকারিতা

সুস্বাদু একটি ফল হল আম আর এই আম পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আমরা অনেকেই কাঁচা বা পাকা আমের চাটনি, আমের জুস বা গোটা আম খেতে পছন্দ করি।খালি আম খেলেই হবে না আম খাওয়ার উপকারিতা জানতে হবে।

  • চোখের সমস্যা দূর করে: আমে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ এর উপস্থিতি। এটা আমাদের চোখের ড্রাই আই প্রবলেম সমস্যা অনেকটাই কমায়,চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে, রাতকানা সমস্যা দূর করে।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: আমি রয়েছে ২০ এর অধিক পর্যাপ্ত পরিমাণের ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। গবেষণায় দেখা গেছে আমের মধ্যে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট স্তন বা কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে দেয়।
  • কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে: আমে থাকে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন সি, প্যাকটিন এবং আঁশ যা আমাদের শরীরের রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
  • শরীরের ত্বক ও চুল সুন্দর রাখতে সাহায্য করে: আমে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, ও ই। যা আমাদের শরীরের ত্বক ও চুল সুন্দর রাখতে অনেকটা সাহায্য করে। যাদের ত্বকের সমস্যা ও চুল পড়ে যাচ্ছে তারা প্রতিদিন নিয়মিত কিছু পরিমাণ আম খেতে পারেন।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: ২৫ টি ধরনের ক্যারোটিনয়েড সহ আমি রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি রয়েছে। যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বৃদ্ধি করে এবং গ্রীষ্মকালে যে সকল রোগ বালাই ছড়ায় সেগুলো থেকে রক্ষা করে।
  • হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষা করে: গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড রোদে আমাদের মাথা অনেকটাই গরম হয়ে থাকে যার ফলে আমরা হিট স্ট্রোক হতে পারি।তাই আপনি যদি আমের জুস বা আম খান তাহলে আপনার শরীরটা অনেক ঠান্ডা থাকবে এবং ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে সহজে।এতে আপনার হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যাবে।
  • ঘুমের ঘাটতি পূরণ করে: বিশেষজ্ঞদের মতে আপনি যদি রাতে ঠিকমতো না ঘুমাতে পারেন বা আপনার ঘুমের অভাব থেকে থাকে তাহলে আপনি পাকা আম খেতে পারেন। কারণ আম খাওয়ার ফলে আপনার পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম আসবে এবং আপনার ঘুমের অভাব পূরণ করে দিবে।
  • ওজন কমাতে সাহায্য করে: আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ফাইবার যা আমাদের শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে অনেকটাই সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত আম খাওয়া যাবেনা নিয়ম অনুযায়ী আম খেতে হবে তাহলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
  • শরীরকে ক্ষারীয় করে: আমি থাকা ম্যালিক এসিড,টারটারিক এসিড এবং সাইট্রিক এসিড থাকার ফলে আমাদের শরীরের ক্ষারীয় বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: আমে থাকা উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম ও ফাইবার যা শরীরে গ্লুকোজ, কোলেস্টেরল, ওজন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করে হৃদপিন্ডের সার্বিক সুস্থতা নিশ্চিত করে। যার ফলের হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
আশা করি উপরে উল্লেখিত আম খাওয়ার উপকারিতা গুলো সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন।আম যেমন স্বাদ হয় তেমন উপকারিতা ও মিলে অনেক।আম খাওয়ার উপকারিতা বিস্তারিত জানা হলে এবার চলুন গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানি

গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভবতী নারীদের খাদ্য তালিকা অন্যান্য সময়ের খাদ্য তালিকার মত নয় এ সময়ে মায়েদের খাবার তালিকা রাখতে হবে বিশেষ নজরে। গ্রীষ্মকালের অন্যতম সুস্বাদু ফল হলো আম এই ফলের আশায় সারা বছর অনেকেই বসে থাকে। তবে গর্ভবতী নারীরা আম খেতে পারবে কিনা গর্ভাবস্থায় এ বিষয়ে অনেক চিন্তিত। তবে বিশেষজ্ঞদের গবেষণা দেখা গেছে গর্ভবতী নারীরা আম খেতে পারবে।
গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার ফলে মিলব অনেক উপকারিতা।আম খেলে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি অনেক উপাদান পাওয়া যায়। গর্ভাবস্থায় নারীরা শরীরের বাড়তি পুষ্টির প্রয়োজন পড়ে কারণ তখন তার ভেতরে আরেকটি মানব শরীর গঠিত হতে থাকে।তাই গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার ফলে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬ পরিপূর্ণভাবে শরীরে প্রবেশ করে।গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার উপকারিতা গুলো নিচু উল্লেখ করা হলো:

  • ব্রেনের বিকাশ: গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার ফলে শিশুদের ব্রেনের সঠিক বিকাশ ঘটে। সুস্বাদু আম খাওয়ার ফলে শুধু মায়েরই নয় গর্ভে থাকা সন্তানেরও অনেক উপকার মিলে।
  • কিশোর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : আমে থাকা ভিটামিন গুলো গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার ফলে মায়ের পাশাপাশি সন্তান ও উপকৃত হয়। আগত শিশু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা বাড়িয়ে তুলে এবং অসুখ-বিসুখের সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার উপকারিতা গুলো জানতে পেরেছেন তবে অতিরিক্ত মাত্রায় আম খাওয়া যাবেনা। গর্ভাবস্থায় সবকিছু নিয়ম মত রাখতে হয়।অতিরিক্ত মাত্রায় গর্ব অবস্থায় কোন কিছু খাওয়াই ভালো হয়।

শিশুদের আম খাওয়ার উপকারিতা

আমরা সকলেই চাই আমাদের সন্তানদের সঠিক বিকাশ ঘটুক এবং তারা সুস্থ থাকুক।শিশুরা অল্পতেই অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কম থাকে। তাই আপনি আপনার শিশুকে সুস্থ এবং সবল রাখতে চাইলে সুস্বাদু আম খাওয়াতে পারেন। শিশুদের আম খাওয়ার উপকারিতা গুলো হলো:

  • খাবারে হজমের সহায়ক করে।
  • চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখে।
  • মস্তিষ্কের বিকাশ সঠিকভাবে ঘটাতে সাহায্য করে।
  • শিশুদের ত্বক ভালো রাখে।
  • রক্তস্বল্পতার ঝুঁকি প্রতিরোধ করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে।
  • স্বাস্থ্যকর ভাবে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
  • সানস্ট্রোক প্রতিরোধ করে।
শিশুদের আম খাওয়ার উপকারিতা গুলো সকল মায়েদের জানা উচিত।এবং সঠিক নিয়মে সঠিকভাবে শিশুদের প্রতিনিয়ত আম খাওয়ানো উচিত।

লেখক এর মন্তব্য

আম আমাদের অতি পরিচিত এবং প্রিয় একটি ফল। ছোট বড় আমরা সকলে আম খেতে খুব পছন্দ করে থাকি। তাই আমাদেরকে আম খাওয়ার নিয়ম, আম খাওয়ার উপকারিতা,গর্ভাবস্থায় আম খাওয়ার উপকারিতা ও শিশুদের আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদেরকে উপরোক্ত বিষয় সম্পর্কে জানাতে পেরেছি কিনা কমেন্টের মাধ্যমে মতামত প্রকাশ করুন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। এমন আরো তথ্য সম্পর্কে জানতে www.twestinfo.com পেজে চোখ রাখুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।

comment url