গর্ভবতী মায়ের কোন খাবার খাওয়া যাবে না ও গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে
গর্ভাবস্থায় কচু শাক খাওয়ার উপকারিতা গর্ভাবস্থায় বিশেষ কিছু প্রশ্নের উত্তর আমাদের সবাইকেই জানতে হয়। সেই প্রশ্নগুলো হল গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে, গর্ভবতী মায়ের কোন খাবার খাওয়া যাবে না, গর্ভাবস্থায় কি খেলে রক্ত বাড়ে, গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে কি, গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না, গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না,গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না ও গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ।
উপরোক্ত সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর আমাদের সকলেরই জানা উচিত। এর মধ্যে একটি প্রশ্ন
রয়েছে যা সকল গর্ভবতী মহিলা কে জানতে হয় সেটি হল গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে
বাচ্চার ওজন বাড়ে।আপনাদের মাঝে আজকে এ সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর তুলে ধরতে চেষ্টা
করব। আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
সূচিপত্র: গর্ভবতী মায়ের কোন খাবার খাওয়া যাবে না ও গর্ভাবস্থায়
কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে
গর্ভবতী মায়ের কোন খাবার খাওয়া যাবে না
গর্ভাবস্থায় আমাদের খাবারের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হতে হয়। স্বাস্থ্যকর খাবার
খাওয়া এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে বিরত থাকার জন্য আমাদের কে জানতে হবে কোন
খাবারগুলো থেকে আমরা বিরত থাকবো। গর্ভবতী মায়ের কোন খাবার খাওয়া যাবেনা এই
সম্পর্কে অনেকের অনেক ধরনের মতামত রয়েছে। তবে এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো
গর্ভাবস্থায় খেলে নবাগত শিশুর নানান ধরনের সমস্যা হতে পারে।
আরো পড়ুন:গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা
আমাদের মধ্যে অনেকেই এই সকল খাবার সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। ভুলবশত নিষিদ্ধ
খাবারগুলো খাওয়ার ফলে শিশুর বিকাশে এবং শারীরিকভাবে নানান ধরনের সমস্যা দেখা
দিতে পারে। চলুন তাহলে জানা যা গর্ভবতী মায়ের কোন খাবার খাওয়া যাবে না। আমরা
সকলেই জানি গর্ভাবস্থায় একজন মাকে পুষ্টিকর ও খনিজ পদার্থ সম্পূর্ণ খাবার খেতে
হয়। এর মধ্যে কিছু খাবার রয়েছে যা খাওয়ার ফলে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে
যায় সেগুলো হল:
- আমরা জানি মাছের প্রচুর পরিমাণ এর পুষ্টি রয়েছে। কিন্তু এমন অনেক মাছ রয়েছে যা গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য খারাপ করতে পারে। তাই একজন গর্ভবতী মাকে কাঁচা মাছ ও সীফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ কাঁচা মাছ ও সিফুডে প্রচুর পরিমাণ এর ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবী থাকে। এ সকল ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবী মায়ের পেটে নানান ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- গর্ভবতী মাকে কাঁচা দুধ ও পাস্তুরায়ন ছাড়া দূর থেকে তৈরি বিভিন্ন ধরনের কোমল পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এ সকল দুধে লিস্টটেরিয়া নামের এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যা লিস্টটেরিওসিস নামের রোগ তৈরি করে।
- মার্কেট থেকে ক্রয় করা মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এ সকল খাবারে ব্যাকটেরিয়া তৈরি হতে পারে যা গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্ষতিকর।
- আধা সিদ্ধ বা সম্পূর্ণ রূপে রান্না করা হয়নি এমন মাংস বা তরকারি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ কাঁচা মাংস ও অর্ধ সিদ্ধ মাংসের মধ্যে টোকসোপ্ল্যাজমা গনডির মতো পরজীবী ও ব্যাকটেরিয়া থাকে।
-
যে সকল খাবারের উচ্চমাত্রায় মার্কারি থাকে সেগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে
হবে। হাঙ্গর,মারলিং ও কিং ম্যাককেরেলে নামক মার্কারি থাকে।
- কাঁচা বীজ বা খাদ্যশস্য খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া কাঁচামোলার শিম ও বিভিন্ন ধরনের সবজি দিয়ে তৈরি সালাত এ সকল খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এ সকল খাবারের লিস্টএরিয়া ও ই কোলির মত ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে।
- গরুর যকৃত ও অন্যান্য অংশের মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ যুক্তিতে প্রচুর পরিমাণ এর আয়রন থাকার ফলে গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে মানা করা হয়। এরকম মাংস খাওয়ার ফলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে।
- কাঁচা বা অর্ধ সিদ্ধ ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে সালমোনিয়া ব্যাকটেরিয়া থাকে যা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
একজন গর্ভবতী মহিলাকে তার খাবারের প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হয়।
অনিয়ন্ত্রিত খাবার ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়ের যেমন ক্ষতি
হয় তেমনি শিশুরও নানান ধরনের ক্ষতি হয়ে থাকে। এজন্য গর্ভবতী মায়ের খাবার
নিরাপদ ভাবে প্রস্তুত করে খেতে হবে। আশা করি গর্ভবতী মায়ের কোন খাবার খাওয়া
যাবে না এই সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে
সকল গর্ভবতী মায়েদের একটি বিশেষ প্রশ্ন থাকে যে গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে
বাচ্চার ওজন বাড়ে। সাধারণত একটি শিশুর বিকাশ গর্ভাবস্থায় শেষ তিন মাসের মধ্যে
বেশি হয়ে থাকে। তবে প্রথম দিকেও গর্ভবতী মাকে অবশ্যই তার নিজের শরীরের দিকে এবং
স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হতে হবে।
আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন চার্ট
বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি করার জন্য গর্ভবতী মাকে প্রচুর পরিমাণ এর কার্বোহাইড্রেট
সম্পূর্ণ খাবার ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এবং ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবারও খেতে
হবে এতে করে মায়ের স্বাস্থ্য যেমন ভালো হবে তেমনি বাচ্চারও সঠিক বিকাশ হবে। চলুন
তাহলে জানা যাক গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে।
- ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার: আমরা জানি ক্যালসিয়াম আমাদের হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে তেমনি শিশুর হাড়ের সঠিক বিকাশ ও মজবুত করার জন্য ক্যালসিয়ামের বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। এই ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করার জন্য বাদাম,দই,দুধ ইত্যাদি খাবার খেতে পারেন।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: আলট্রাসনোগ্রাফি করার মাধ্যমে আপনি আপনার শিশুর ওজন জানতে পারবেন এরপর ডাক্তার প্রয়োজনীয় প্রোটিন জাতীয় খাবার কতটুকু খেতে হবে তার পরিমাণ বলে দিবেন। এই প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করার জন্য মাছ, ডিম, ডাল ও সবুজ শাক-সবজি খেতে পারেন। যা বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
- ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার: ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলেও বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি করা সম্ভব। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারগুলো হলো চাল, শাকসবজি, মটরশুঁটি, নারিকেল, বাদাম, চিনা বাদাম ও কাজুবাদাম ইত্যাদি।
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি করার জন্য আপনি বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন সমৃদ্ধ ও
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন। বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি করার জন্য বাদাম বিশেষ
ভূমিকা পালন করে। সে ক্ষেত্রে আপনি প্রতিদিন কিছু পরিমাণ বাদাম খেতে পারেন।
আরো পড়ুন:গর্ভাবস্থায় ৮ মাসে বাচ্চার ওজন
তাছাড়া ডিমের সাদা অংশ, দুধ, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি খাবার খেলেও গর্ভাবস্থায়
বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি করা সম্ভব। আশা করি গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন
বাড়ে এই সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে কি
গর্ভাবস্থায় খাবারের ওপর বিশেষ যত্ন রাখতে হয় বলে অনেক গর্ভবতী মায়ের প্রশ্ন
থাকে গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে কি? চিড়াতে প্রচুর পরিমাণ এর আয়রন রয়েছে
যা গর্ভবতী মায়ের শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। তাছাড়া চিড়া
গর্ভবতী মায়ের রক্তস্বল্পতা দূর করতেও সাহায্য করে। অনেক সময় গর্ভবতী মায়ের
শরীরের রক্তস্বল্পতা দেখা যায়।
আরো পড়ুন:গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়
এই রক্তস্বল্পতা পূরণের জন্য আয়রন ও ভিটামিন বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। চিড়ার
মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকার ফলে এটি গর্ভবতী মায়ের শরীরের রক্তস্বল্পতা
দূর করতে সাহায্য করে। শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে ফলে সহজেই রক্ত
উৎপন্ন হতে পারে। তাই বলা যায় যে গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া উচিত। আশা করি
গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে কি এই সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না
আমরা জানি গর্ভাবস্থায় সবজি আমাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কিন্তু এমন অনেক ধরনের
সবজি রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় নানান ধরনের সমস্যা বয়ে আনতে পারে। তাই আমাদেরকে
জানতে হবে গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না।
- করলা
- সজনে
- পেঁপে
- অ্যালোভেরা
গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ করলাতে
গ্লাইকোলাইসিস,সেপনইক, মারোডিসিস নামক ক্ষতিকর পদার্থ রয়েছে। এই সকল পদার্থ
গর্ভবতী মা এবং সন্তানের ক্ষতি করতে পারে। এরপর খাওয়া যাবেনা সজনে। কারণ সজনেতে
আলফা সিটেস্টরল নামক এক ধরনের উপাদান রয়েছে যা গর্ভবতী মায়ের গর্ভপাত গঠাতে
পারে।
তারপর হল এলোভেরা। অ্যালোভেরা তে এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে যা গর্ভপাতের
সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। তাই গর্ভাবস্থায় অ্যালোভেরার জুস খাওয়া থেকে বিরত
থাকতে হবে। আমাদের অনেকেরই কাঁচা বা পাকা পেঁপে খেতে খুব পছন্দ।
আরো পড়ুন:গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড খাওয়ার নিয়ম
কিন্তু গর্ভাবস্থায় পাকা বা কাঁচা পেঁপে খাওয়ার ফলে গর্ভের সন্তানের নানান
ধরনের ক্ষতি হতে পারে। এজন্য গর্ভাবস্থায় পেঁপে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে ।
আশা করি গর্ব অবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না এই সম্পর্কে আপনারা জানতে
পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না
ফলে প্রচুর পরিমাণ এর ভিটামিন, প্রোটিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে। যা একজন গর্ভবতী
মহিলার জন্য অত্যন্ত উপকারী। কিন্তু এত ফলের মধ্যে কিছু ফল রয়েছে যা
গর্ভাবস্থায় খাওয়া নিষিদ্ধ। চলুন তাহলে জানা যাক গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া
যাবে না।
- পেঁপে
- আঙ্গুর
- আনারস
- স্ট্রবেরি
- চেরি
- নাশপাতি
- আম
- তরমুজ
- কমলালেবু
গর্ভবতী মায়ের জন্য ফল অত্যন্ত উপকারিতা তবে এই ফল খাওয়ার পূর্বে আমাদেরকে
জানতে হবে কি ফল খেতে হবে এবং কি ফল খাওয়া নিষেধ। উপরোক্ত ফলগুলো গর্ভাবস্থায়
খাওয়া একদমই নিষেধ। গর্ভাবস্থায় পেঁপে খাওয়ার ফলে অকাল গর্ভপাত হওয়ার
সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আনারস অত্যন্ত সুস্বাদু একটি ফল হলেও এটি গর্ভাবস্থায়
খাওয়া একদমই ঠিক হবে না।
আরো পড়ুন:গর্ভাবস্থায় আনারস খেলে কি হয়
কারণ আনারস খাওয়ার ফলে গর্ভের সন্তানের যেমন ক্ষতি হবে তেমনি গর্ভপাতের সমস্যা
হতে পারে। আরো কিছু ফল যেমন:চেরি, নাশপাতি, আম, তরমুজ ও কমলালেবু খাওয়ার ফলেও
গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। তাই গর্ভাবস্থায় উপরোক্ত
ফল খাওয়া থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। আশা করি গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া
যাবে না এ সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না
গর্ভাবস্থায় আমাদেরকে কিছু মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আমরা জানি মাছে
প্রচুর পরিমাণ এর ভিটামিন ও মিনারেল উপাদান রয়েছে যা গর্ভবতী মায়ের জন্য
অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তবে এরই মধ্যে কিছু মাছ রয়েছে যাতে প্রচুর পরিমাণ এর পারদ
থাকার কারণে গর্ভাবস্থায় খাওয়া একদমই উচিত নয়। গর্ভাবস্থায় সাধারণত সামুদ্রিক
মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
আরো পড়ুন:গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
সামুদ্রিক মাছের মধ্যে রয়েছে সার্ক,টুনা সেলমন ইত্যাদি। কারণ এ সকল মাছের মধ্যে
প্রচুর পরিমাণে পারদ জাতীয় উপাদান রয়েছে যা একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য ক্ষতি
সাধক। তাছাড়া চিংড়ি,তেলাপিয়া, মাগুর ইত্যাদি মাছ মাত্রা অতিরিক্ত খাওয়া থেকেও
বিরত থাকতে হবে। আশা করি গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না আপনারা জানতে
পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ
একজন গর্ভবতী মাকে বিশেষ সতর্কতার সাথে গর্ভাবস্থার সময় জীবন যাপন করতে হয়। সেই
সময় শারীরিক ও মানসিক ভাবে নানান ধরনের পরিবর্তন হতে পারে ফলে কিছু কাজ যা
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য করা একেবারেই নিষেধ। চলুন তাহলে জানা যাক গর্ভাবস্থায় কি
কি কাজ করা নিষেধ।
গর্ভাবস্থায় বেশি সময় দাঁড়িয়ে কাজ করা যাবে না। আবার নিচু জায়গায় বেশিক্ষণ
ঝুঁকে কাজ করা যাবে না।
- গর্ভাবস্থায় পেটে চাপ লাগে এমন কোন ধরনের কাজ করা যাবে না।
- ভারি কোন বস্তু টানা,তোলা ও হেছড়ানো জাতীয় কাজ করা যাবে না।
- আমরা বাথরুম পরিষ্কার করার জন্য বিভিন্ন ধরনের এসিড ব্যবহার করি। যে সকল এসিড একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকীকর। তাই গর্ভাবস্থায় এসব কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
- গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পানি দিয়ে কাজ করা যাবে না। এতে করে গর্ভবতী মায়ের ঠান্ডা বা জ্বর হতে পারে যা গর্ভের সন্তানের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
- গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকা যাবে না। সব সময় হাসি খুশি এবং টেনশনমুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।
- উপরে উঠে করতে হয় এমন কোন কাজ করা যাবে না যেমন: পর্দা টানানো বা ফ্যান পরিষ্কার করা। এতে করে গর্ভবতী মা পড়ে যেয়ে পেটে ব্যথা পেতে পারে।
- গর্ভবতী মাকে সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। নোংরা পরিবেশে থাকা গর্ভবতী মা এবং গর্ভে সন্তানের জন্য ক্ষতি করতে পারে।
উপরোক্ত বিষয়গুলো পড়ার মাধ্যমে আপনারা জানতে পেরেছেন গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ
করা নিষেধ। তাই প্রতিটি গর্ভবতী মায়েরা চেষ্টা করতে হবে উপরোক্ত কাজ গুলো করা
থেকে বিরত থাকা।
গর্ভাবস্থায় কি খেলে রক্ত বাড়ে
গর্ভাবস্থার সময় গর্ভবতী মায়ের শরীরের রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। কারণ গর্ব
অবস্থায় শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায় ফলে একসময় শরীরের রক্তস্বল্পতা
দেখা দেয়। গর্ভাবস্থায় এই রক্তস্বল্পতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আপনারা বিশেষ
কিছু উপায় মেনে চলতে পারেন। চলুন তাহলে জানা যাক গর্ভাবস্থায় কি খেলে রক্ত
বাড়ে।
আরো পড়ুন:কনসিভ করলে কি পেটে ব্যথা হয়
গর্ভাবস্থায় সাধারণত শরীরের রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় কারণ শরীরে ভিটামিন ও
আয়রনের ঘাটতি কারণে। এ ভিটামিন ও আয়রনের ঘাটতি পূরণ করার জন্য আপনি কলিজা,
মাংস, ডিম, সবুজ শাকসবজি, মটরশুঁটি ,কলা ,শিম, পেয়ারা, আনার এসকল খাবার খেতে
পারেন। এ সকল খাবারে প্রচুর পরিমাণ এর ভিটামিন ও আয়রন রয়েছে যা শরীরে
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
এর পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আপনি আয়রন কিংবা ফলিক এসিডের ট্যাবলেট
খেতে পারেন। এ সকল ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে ও শরীরের রক্তস্বল্পতা কমে যেতে পারে।
আশা করি গর্ভাবস্থায় কি খেলে রক্ত বাড়ে এই সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
পরিশেষে কথা
গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলার তার শরীরের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হতে হয়।
গর্ভের সন্তান ও গর্ভবতী মায়ের শরীর সুস্থ রাখতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ
উপাদান সমৃদ্ধ খাবার খেতে হয়। আবার শরীর সুস্থ রাখার জন্য কিছু খাবার খাওয়া
থেকেও বিরত থাকতে হয়। তাই আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে গর্ভবতী মায়ের কোন
খাবার খাওয়া যাবে না, গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে বাচ্চার ওজন বাড়ে,
গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে কি, গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না,
গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না, গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ ও
গর্ভাবস্থায় কি খেলে রক্ত বাড়ে এই বিষয়ে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের
উপকারে আসবে। এমন আরো তথ্য পেতে www.twestinfo.com পেজে চোখ রাখুন এবং কমেন্টের মাধ্যমে মতামত প্রকাশ করুন।
টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।
comment url