ভুট্টা চাষ পদ্ধতি,ভুট্টা চাষের উপযুক্ত সময় ও উন্নত জাতের ভুট্টার নাম
বিটরুট খাওয়ার নিয়ম
আপনি কি ভুট্টা চাষ পদ্ধতি, ভুট্টা চাষের উপযুক্ত সময়, উন্নত জাতের ভুট্টার নাম,
হাইব্রিড ভুটার জাত ও হাইব্রিড ভুট্টা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে গুগলে সার্চ
করেছেন। তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে ভুট্টা
সম্পর্কিত যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর জানতে পারবেন ।
এই আর্টিকেলে আরো রয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে ভুট্টার দাম, ভারতে ভুট্টার দাম, এক
কেজি ভুট্টার দাম কত, ভুট্টার রোগ ও তার প্রতিকার, ভুট্টা কোন মাটিতে ভালো হয় ও
ভুট্টা উৎপাদনে শীর্ষ জেলা কোনটি এবং ভুট্টা উৎপাদনের শীর্ষ দেশ কোনটি ইত্যাদি
বিষয়ে। তাই ভুট্টা সম্পর্কে জানতে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।
সূচিপত্র: ভুট্টা চাষ পদ্ধতি,ভুট্টা চাষের উপযুক্ত সময় ও উন্নত জাতের
ভুট্টার নাম
ভুট্টা ইংরেজি কি
ভুট্টার বিভিন্ন ধরনের ইংরেজি নাম রয়েছে। বিভিন্ন দেশে ভুট্টা বিভিন্ন নামে
পরিচিত। তবে বাংলাদেশে ভুট্টার ইংরেজি হল Corn । এর অন্য একটি ইংরেজি নাম হল
Maize । ভুট্টার বৈজ্ঞানিক নাম হল Zea mays ।
উন্নত জাতের ভুট্টার নাম
ভুট্টা চাষ করার পূর্বে আমাদেরকে জানতে হবে উন্নত জাতের ভুট্টার নাম। ভুট্টা সঠিক
জাত নির্বাচন না করতে পারলে চাষ করার ফলাফল তেমন ভালো পাওয়া যায় না। তাই আজকে
আমি আলোচনা করব উন্নত জাতের ভুট্টার নাম। নিচে কিছু উন্নত জাতের ভুট্টার নাম
উল্লেখ করা হলো।
- বর্ণালী
- শুভ্রা
- খই ভুট্টা
- মোহর
- বারি ভুট্টা ৫
- বারি ভুট্টা ৬
- বারি ভুট্টা ৭
- বারি মিষ্টি ভুট্টা ১
- বারি বেবি কর্ণ ১
উপরোক্ত সকল জাতির ভূট্টা গুলো উন্নত জাতের ভুট্টা। এই ভুট্টা গুলোর মধ্যে আপনি
যেকোনো একটি ভুট্টা চাষ করার মাধ্যমে ভালো ফলাফল পেতে পারেন। অবশ্যই সঠিক নিয়মে
চাষ করতে হবে এবং প্রতিটা ভুট্টা জাতকে ভালো মতো পরিচর্যা করতে হবে। আশাকরি উন্নত
জাতের ভুট্টার নাম আপনারা জানতে পেরেছেন।
হাইব্রিড ভুট্টার জাত
ভুট্টার জাতের মধ্যে কিছু প্রকার জাত রয়েছে যাদেরকে হাইব্রিড বলা হয়। এ
হাইব্রিড জাতের ভুট্টার চাষ করলে অল্প পরিচর্যার মাধ্যমে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
বর্তমান সময়ের সবাই হাইব্রিড ভুট্টা জাত চাষে একটু বেশি আকর্ষণ দেখাচ্ছে। কারণ
হাইব্রিড ভুট্টা অল্প চাষের মাধ্যমে ভালো ফলন পাওয়া যায়। চলুন তাহলে কিছু
হাইব্রিড ভুট্টার জাত সম্পর্কে জানা যাক।
- বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১
- বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৩
- বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৪
- বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৫
- বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৬
- বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৭
- বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৮
- বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৯
- বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১০
- বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১১
- বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১২
- বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৩
- বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৪
- বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৫
- বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৬
- বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৭
- বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা ১
- বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড বেবি কর্ণ ১
- বিডাব্লিউএমআরআই হাইব্রিড ভুট্টা ২
উপরোক্ত ভুট্টার হাইব্রিড গুলো বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত
করেছেন। এ সকল হাইব্রিড ভুট্টা জাতগুলো উচ্চ ফলনশীল হয়ে থাকে। তাই বর্তমান সময়ে
অনেক কৃষকের পছন্দের ভুট্টা জাত হিসেবে হাইব্রিড ভুট্টা জাতগুলো বেশি জনপ্রিয়তা
লাভ পেয়েছে । আশা করি হাইব্রিড ভুট্টার জাত আপনারা জানতে পেরেছেন।
ভুট্টা চাষ পদ্ধতি
ভুট্টা চাষ করার মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়া যায় বলে বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের
অধিকাংশ জেলায় ভুট্টা চাষের দিকে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। আপনিও ভুট্টা চাষ করে
স্বল্প খরচের মাধ্যমে ভালো টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ভুট্টা চাষ করার জন্য প্রথমেই আপনাকে ভুট্টা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হবে।
আপনিও ভুট্টা চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারেন এর জন্য আজকের আর্টিকেলে ভুট্টা চাষ
পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করব। চলুন তাহলে জানা যাক ভুট্টা চাষ পদ্ধতি।
বীজ নির্বাচন: ভুট্টা চাষ করার পূর্বে আপনি কোন জাতির ভুট্টার চাষ করতে
চাচ্ছেন সে অনুযায়ী বীজ নির্বাচন করতে হবে। আপনি যদি হাইব্রিড ভুট্টা চাষ করতে
ইচ্ছুক হন তাহলে অবশ্যই হাইব্রিড ভুট্টার বীজ সংগ্রহ করতে হবে। তাছাড়া হাইব্রিড
ব্যতীত অন্য অনেক ধরনের ভুট্টার বীজ রয়েছে যা অল্প ফলনে ভালো ফলাফল দেয়। বীজ
নির্বাচন করার পূর্বে অবশ্যই সুস্থ বীজ নির্বাচন করতে হবে।
জমি প্রস্তুত করা: এরপর আপনাকে জমি নির্বাচন করতে হবে। জমির মাটি অবশ্যই
হালকা নরম হতে হবে। শক্ত মাটিতে ভুট্টা চাষ করলে তেমন ভালো ফলাফল নাও আসতে পারে।
জমি নির্বাচন করার পর বীজ বপনের জন্য জমিতে সমান পরিমাণে লাইন তৈরি করতে হবে।
আরো পড়ুন:লবঙ্গ (clove) এর ব্যবহার
প্রতিটি লাইনের মধ্যে দূরত্ব ৭৫ সেন্টিমিটার হতে হবে। এবং একটি গাছ থেকে অন্য
গাছের দূরত্ব ২৫ সেন্টিমিটার হতে হবে। আপনি যদি বেশি জমি নিয়ে চাষ করতে চান
তাহলে প্রতি এক একরে বীজের পরিমাণ ১০ থেকে ১২ কেজি হতে হবে। অবশ্যই আপনি কতটুকু
জমি নিয়েছেন এর ওপর নির্ভর করে বীজ বপন করতে হবে।
বীজ বপনের সময়: ভালো ফলন পাওয়ার জন্য অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বীজ
বপন করতে হবে। বাংলাদেশে অক্টোবর ও নভেম্বর মাস থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারি ও
মার্চ মাস পর্যন্ত বীজভবনের উপযুক্ত সময় হিসেবে ধরা হয়। তাই আপনাকেও এই সময়ের
মধ্যেই বীজ বপনের চেষ্টা করতে হবে।
সেচ: বীজ বপনের পর অবশ্যই নির্দিষ্ট সময় পর পর জমিতে সেচ দিতে হবে। বীজ
বপনের পর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে প্রথম সেচ সম্পন্ন করতে হবে। প্রথম সেজে অবশ্যই
খেয়াল রাখতে হবে যাতে গাছের ৬ নম্বর পাতা পর্যন্ত সেচের পানি পৌঁছায়। দ্বিতীয়
সেচ দিতে হবে নিজের বয়স যখন ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মতো হয়ে যাবে ।
তৃতীয় সেচ দিতে হবে বীজের বয়স ৭০ থেকে ৭৫ দিনের মতো হলে। এরপর চতুর্থ সার্চ
দিতে হবে বীজের বয়স ৯০ থেকে ৯৫ দিনের মধ্যে হলে। ৯০ থেকে ৯৫ দিন বীজের বয়স হয়ে
গেলে তখন দানা বাধার সময় হয়ে যাবে। দানা বাধার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে
জমিতে পানি জমে না থাকে।
আগাছা পরিষ্কার করা: জমিতে অবশ্যই আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। অতিরিক্ত
আগাছা হলে তা দমন করতে হবে নয়তো ভুট্টা গাছে পোকা আক্রমণ করতে পারে। তাই যখনই
গাছের গোড়ায় বা জমিতে আগাছা জন্মে যাবে বা বড় হয়ে যাবে তখনই আগাছা পরিষ্কার
করে দিতে হবে।
সার প্রয়োগ: জমিতে অবশ্যই নির্দিষ্ট সময় পর পর সার প্রয়োগ করতে হবে।
ইউরিয়া সার ভুট্টা খেতে ব্যবহার করা উত্তম । প্রথম পর্যায়ে ইউরিয়ার এক
তৃতীয়াংশ পুরো জমিতে ভালো করে ছিটিয়ে দিতে হবে। এরপর দুইভাবে ইউরিয়া সার
প্রয়োগ করতে হবে। প্রথমত বীজ এর গাছ ২৫ থেকে ৩০ দিন বয়স হলে ইউরিয়া দিতে হবে।
দ্বিতীয়বার গাছের বয়স ৪০ থেকে ৫০ দিন হলে তখন আবার দিতে হবে।
আরো পড়ুন:ব্লুবেরি চাষ করে লাখ টাকা ইনকাম
উপরোক্ত নিয়মে আপনারা জমিতে ভুট্টা চাষ করতে পারেন। ভুট্টা চাষ করে সঠিক
পরিচর্যা করলে অবশ্যই ভালো পরিমাণের ফলাফল পাওয়া যাবে। আন্তর্জাতিক বাজারে এবং
দেশীয় বাজারে ভুট্টার প্রায় বেশ দাম রয়েছে। তাই আপনি যদি স্বাবলম্বী হতে চান
আপনার পরিত্যক্ত জমিতে ভুট্টা চাষ করতে পারেন। আশা করি ভুট্টা চাষ পদ্ধতি
সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
ভুট্টা বীজ বপন পদ্ধতি
ভুট্টার বীজ বপন করার সময় অবশ্যই আমাদেরকে কিছু নিয়ম অবলম্বন করতে হবে। নিয়ম
না মেনে বীজ বপন করলে ভুট্টার গাছ হবে কিন্তু ভালো ফল পাওয়া যাবে না। চলুন তাহলে
জানা যাক ভুট্টা বীজ বপন পদ্ধতি।
- বীজ অবশ্যই লাইন আকারে বপন করতে হবে। প্রতিটি লাইনের মধ্যকার দূরত্ব ৭০ সেন্টিমিটার হতে হবে। একটি বীজ থেকে অন্য বীজের দূরত্ব ১০ ইঞ্চি অর্থাৎ ২৫ সেন্টিমিটার করতে হবে। বীজ অবশ্যই ৪ থেকে ৫ সেন্টিমিটার গভীরতায় বপন করতে হবে।
- বীজ বপন করার পূর্বে অবশ্যই জমি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। জমিতে কোন প্রকার আগাছা থাকলে তা আগেই পরিষ্কার করে নিতে হবে।
- বীজ বপনের সময় লাইনগুলোর মধ্যে সমপরিমাণের বীজ বপন করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যাতে একই জায়গায় অতিরিক্ত বীজ বপন না করা হয়।
- বীজ বপনের সময় অবশ্যই অল্প পরিমাণের বীজ বপন করতে হবে। অতিরিক্ত বীজ বপন এর ফলে গাছ হবে কিন্তু তেমন ফল আসবেনা। আবার গাছের পরিমাণ বেশি হলে ভুট্টা ছোট হয়।
ভুট্টার বীজ বপনের সময় অবশ্যই আমাদেরকে উপরোক্ত বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।
নয়তোবা আমাদের এত পরিশ্রমের ফল আমরা পাব না। আশা করি ভুট্টা বীজ বপন পদ্ধতি
আপনারা জানতে পেরেছেন।
হাইব্রিড ভুট্টা চাষ পদ্ধতি
আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি যে ভুট্টা সাধারণত দুই রকম হয়ে থাকে। এর মধ্যে হাইব্রিড
ভুট্টা একটি। হাইব্রিড ভুট্টার ধরন হলো এটি চাষ করার ফলে ভুট্টার আকার একটু বড়
হয়। এবং অল্প গাছে প্রচুর পরিমানে ভুট্টার ফলন দেখা যায়। তাই বাংলাদেশ ও দেশের
বিভিন্ন জায়গায় হাইব্রিড ভুট্টা চাষ পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ পেয়েছে। চলুন
তাহলে আমরা এখন হাইব্রিড ভুট্টা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানি।
আরো পড়ুন:আনারকলি ফল কোথায় পাওয়া যায়
হাইব্রিড ভুট্টার বীজ নির্বাচন: হাইব্রিড ভুট্টা গুলোর মধ্যে কিছু সংখ্যক
ভুট্টা রয়েছে। এর মধ্যে আপনি কোন হাইব্রিড ভুটার বীজ চাষ করবেন তা আপনাকে
নির্বাচন করতে হবে। অবশ্যই বীজ নির্বাচন করার পূর্বে বীজ সুস্থ এবং হাইব্রিড
ভুট্টার বীজ কিনা সে সম্পর্কে যাচাই করতে হবে।
জমি প্রস্তুতকরণ: হাইব্রিড ভুট্টা চাষ করার জন্য আপনাকে জমি ভালোমতো
প্রস্তুত করতে হবে। হাইব্রিড ভুট্টা চাষের জন্য জমিতে নির্দিষ্ট সংখ্যক লাইন তৈরি
করতে হবে। প্রতিটি লাইনের মাঝখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে জায়গা রাখতে হবে। লাইনের
মধ্য দিয়ে পানি চলাচল করতে পারবে এমন জায়গা রাখতে হবে। জমির মাটি অবশ্যই নরম
হতে হবে।
আরো পড়ুন:খুবানি বা এপ্রিকট ফল কোনটি
বীজ বপন: প্রতিটি লাইনের সমপরিমাণ বীজ বপন করতে হবে। প্রতিটি বীজের মধ্যে
২৫ সেন্টিমিটার করে জায়গা রাখতে হবে। এবং বীজগুলো নির্দিষ্ট গভীরতায় প্রবেশ
করাতে হবে।
সেচ: অন্য ভুট্টার বীজ বপন এর মত হাইব্রিড ভুট্টার বীজেও সেচ দিতে হবে।
অবশ্যই নিয়ম মেনে জমিতে সেচ দিতে হবে এবং জমিতে পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল
রাখতে হবে।
আগাছা পরিষ্কার করা: নিয়মিত জমির আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। আগাছা
পরিষ্কার না করলে ভুট্টা গাছ পর্যাপ্ত পরিমাণের পুষ্টি সংগ্রহ করতে পারবে না।
অন্য ভুট্টা জাতের গাছে যেরকম করে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে হাইব্রিড গাছেও ঠিক
সেইভাবে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
উপরোক্ত নিয়মে আপনারাও পড়ে থাকা জমিতে হাইব্রিড ভুট্টা চাষ করতে পারেন।
হাইব্রিড ভুট্টা চাষ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতার সাথে জমির পরিচর্যা করতে হবে।
সঠিক পরিচর্যা না পেলে ভালো ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। আশা করি হাইব্রিড
ভুট্টা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
ভুট্টা চাষের উপযুক্ত সময়
বাংলাদেশে ভুট্টা চাষের উপযুক্ত সময় হলো অক্টোবর, নভেম্বর মাস। এ সময়কে যদি
বাংলা মাসে হিসেব করে বলা হয় তাহলে হবে মধ্য আশ্বিন থেকে মধ্য অগ্রহায়ন। আবার
ফাল্গুন থেকে চৈত্র মাস অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাস পর্যন্ত ভুট্টা চাষের
উপযুক্ত সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ভুট্টা বীজের দাম
ভুট্টা বীজের দাম বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন দরে বিক্রি করা হয়। ভুট্টার জাত এবং
হাইব্রিড ভুট্টার জাতের বীজের দামের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। তাছাড়া অনেক
ব্র্যান্ডের ভুট্টার বীজ বাজারে বিক্রি করা হয়। যদি সকল ব্র্যান্ডের বীজের দাম
তুলনা করে বলা হয় তাহলে সর্বনিম্ন আপনি ৬৫০ টাকায় পেয়ে যাবেন।
আরো পড়ুন:দিনে কয়টি ব্রাজিল বাদাম খেতে হয়
আর হাইব্রিড ভুট্টা জাতের বীজের দাম প্রায় ১০০০ টাকার বেশি হতে পারে। ভুট্টার
ধরন এবং ফলনের ওপর ভিত্তি করে বীজের দাম কিছুটা কম বেশি হতে পারে। আশা করি ভুট্টা
বীজের দাম আপনারা জানতে পেরেছেন।
ভুট্টা কোন মাটিতে ভালো হয়
ভুট্টা সাধারণত নরম মাটিতে ভালো ফলন হয়। তবে বেলে দোআশ ও দোআশ মাটি ভুট্টা চাষের
জন্য ভালো বলা হয়। তাই আপনারা যদি ভুট্টা চাষ করতে চান তবে অবশ্যই বেলে দোআশ
মাটি ও দোআশ মাটিতে চাষ করার চেষ্টা করবেন। এতে করে ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা
বেড়ে যায়। আশা করি ভুট্টা কোন মাটিতে ভালো হয় জানতে পেরেছেন।
ভুট্টা চাষে সারের পরিমান
ভুট্টা চাষের জন্য অবশ্যই জমিতে সার প্রয়োগ করতে হবে। ভুট্টা চাষের জন্য আপনাকে
জমিতে ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি, জিসাম সার ব্যবহার করতে হবে। ইউরিয়া সার প্রতি
হেক্টর জমিতে ১৭০ থেকে ৩০০ কেজি প্রয়োগ করতে হবে। টিএসপি সার প্রতি হেক্টরে ১৬০
থেকে ২০০ কেজি প্রয়োগ করতে হবে।জিপসাম আপনাকে প্রতি হেক্টর জমিতে ১৫০ থেকে ১৬০
কেজি সার ব্যবহার করতে হবে।
এমওপি সার আপনাকে ১০০ থেকে ১৫০ কেজি সার প্রতি হেক্টরে ব্যবহার করতে হবে। তাছাড়া
আপনাকে জমিতে গোবর ও বোরন সার যুক্ত করতে হবে। গোবর আপনি ৫ টন প্রয়োগ করলে ভালো
ফলাফল পাবেন। এবং বোরন সার ৭ কেজি ব্যবহার করতে পারেন। আশা করি ভুট্টা চাষের
সারের পরিমাণ আপনারা জানতে পেরেছেন।
বিঘা প্রতি ভুট্টার ফলন
আপনি যদি এখন জানতে চান বিঘা প্রতি ভুট্টার ফলন কত হবে। সে ক্ষেত্রে আমি বলবো
প্রতি বিঘা জমিতে আপনি ৪০ থেকে ৪৫ মন ভুট্টা উৎপাদন করতে পারবেন। এ পরিমাণ
সম্পর্কে জানতে পেরে আসলেই কি বুঝতে পেরেছেন অল্প খরচে কত ভালো ফলন পাওয়া যায়।
যা একজন কৃষকের স্বাবলম্বী হতে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। আশা করি বিঘা প্রতি
ভুট্টার ফলন সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
ভুট্টার পাতা ঝলসানো রোগ
ভুট্টা গাছের এক ধরনের রোগ দেখা যায় যার নাম ভুট্টার পাতা ঝলসানো রোগ। এ রোগ
হওয়ার কারণে ভুট্টার ক্ষেত ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। ভুট্টার পাতা ঝলসানো রোগ
সাধারণত ছত্রাকের আক্রমণে হয়ে থাকে। এই রোগটি দেখা দিবে যখন ভুট্টা গাছ বাড়ন্ত
পর্যায়ে থাকবে। ভুট্টার পাতা ঝলসানো রোগের লক্ষণ হিসেবে আপনারা দেখতে পাবেন
পাতার নিচে ধূসর দাগ এবং পাতার ওপর দিকেও দেখা যাচ্ছে।
এ রোগ হলে ভুট্টার পাতা শুকিয়ে যায় এবং আস্তে আস্তে গাছ মারা যায়। ভুট্টার
পাতা ঝলসানো রোগে দুই ধরনের ছত্রাকের আক্রমণ হয়। এই ছত্রাকের নাম হল:
Heliminthosporium turcicum ,
Heliminthosporium maydis । এই দুই ধরনের ছত্রাকের আক্রমণে ভুট্টার
গাছে ঝলসানো রোগ হয়ে থাকে।
ভুট্টার পাতা ঝলসানো রোগ থেকে আপনার জমি কে রক্ষা করার জন্য অবশ্যই
জীবাণুমুক্ত বীজ বপন করতে হবে। নিয়মিত আগাছা দমন করতে হবে ও সঠিক মাত্রায় সার
প্রয়োগ করতে হবে। আক্রান্ত গাছ তুলে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলতে হবে যাতে করে একটি গাছ
থেকে অন্য গাছে এই রোগ না ছড়াতে পারে। আশা করি ভুট্টার আর পাতা ঝলসানো রোগ
সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
ভুট্টার ফল আর্মি ওয়ার্ম পোকা
ভুট্টার ফলে এক ধরনের পোকা দেখা যায় যার নাম আর্মি ওয়ার্ম পোকা। এটি ভুট্টার
ফলের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ও ধ্বংসাশী হয়ে থাকে। ভুট্টা গাছে এই পোকাটি হওয়ার
ফলে গাছের পাতা ও ফল খেয়ে ফেলে। একটি গাছে এই পোকা হলে সম্পূর্ণ জমিতে ছড়িয়ে
যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই ক্ষতিকারক পোকা থেকে রক্ষা পেতে আপনাকে কিছু নিয়ম ও
পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।
আপনি যদি ভুট্টা ক্ষেতে আর্মি ওয়ার্ম পোকা দেখতে পান তাহলে কিছু পদ্ধতিতে সহজেই
এর সমাধান করতে পারবেন। এ পোকা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দশ লিটার পানিতে ফুলটাইম
৫০ ডব্লু ডি জি ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে সন্ধাবেলা সম্পূর্ণ গাছে স্প্রে করে দিন।
এই শার্ট টি সঠিকভাবে স্প্রে করলে সহজেই ভুট্টার ফল আর্মি ওয়ার্ম পোকা থেকে
রক্ষা পাবেন।
ভুট্টার মাজরা পোকা দমনে কীটনাশক
ভুট্টা গাছে আরেক ধরনের পোকা আক্রমণ করে তার নাম হলো মাজরা। এই পোকা দমনে আপনি
কার্বোসালফান, কার্বোফুরান, টায়োডিকার ইত্যাদি কীটনাশক এর ব্যবহার করতে পারেন।
এর মধ্যে যেকোনো একটি কীটনাশক ব্যবহার করলে মাজরা পোকা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
আশা করি ভুট্টার মাজরা পোকা দমনে কীটনাশক আপনারা জানতে পেরেছেন।
ভুট্টা কত দিনের ফসল
আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে ভুট্টা কত দিনের ফসল। ভুট্টা সাধারণত ১৩৫
থেকে ১৫০ দিনের ফসল হয় যদি রবি মৌসুমে এর করা হয়। আবার ১০০ থেকে ১০৫ দিনের ফলন
হয় যদি তা খরিস মৌসুমে বপন করা হয়।
আন্তর্জাতিক বাজারে ভুট্টার দাম
আন্তর্জাতিক বাজারে ভুট্টার বেশ দাম রয়েছে। বিগত ২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রতি
মন ১২০০ টাকা করে বিক্রি করা হয়েছে। তবে এই টাকার পরিমাণ কিছুটা কম বেশি হবে
ভুট্টার গুণগত মানের উপর বিবেচনা করে।আপনি যদি ভালো জাতির ভোটার চাষ করতে পারেন
তাহলে প্রতি মনে আপনি ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকা পেয়ে যাবেন। আশা করি আন্তর্জাতিক
বাজারে ভোটার দাম আপনারা জানতে পেরেছেন ।
ভারতে ভুট্টার দাম
ভারতেও ভুট্টার চাহিদা রয়েছে প্রচুর। ভারতে ভুট্টার দাম প্রতি কেজিতে ৩৫ টাকা
করে পাওয়া যাচ্ছে। এই দাম বিবেচনা করে প্রতিমনের দাম হচ্ছে প্রায় ১৩০০ টাকা।
তাছাড়া প্রতিবছর এই দামের কিছুটা পরিবর্তন হচ্ছে। ভালো ফলন হলে ভুট্টার দাম
বেড়ে যাচ্ছে এবং কম ফলন হলে কিছুটা কমেও যাচ্ছে। আশা করি ভারতে ভুট্টার দাম
আপনারা জানতে পেরেছেন।
ভুট্টা উৎপাদনে শীর্ষ জেলা কোনটি
ভুট্টা উৎপাদনে শীর্ষ জেলা হিসেবে বাংলাদেশের দিনাজপুর বিশ্ব খ্যাতি। প্রতিবছর
দিনাজপুরের অর্ধশতাধিক ভুট্টা চাষ করা হচ্ছে। এর জন্য ভুট্টা উৎপাদনে শীর্ষ জেলা
হিসেবে দিনাজপুরকে বিবেচিত করা হয়।
ভুট্টা উৎপাদনে শীর্ষ দেশ কোনটি
যদি প্রশ্ন করা হয় ভুট্টা উৎপাদনে শীর্ষ দেশ কোনটি। তাহলে ইতিহাস ঘেটে দেখলেও
এবং বর্তমান সময়েও ভুট্টা উৎপাদনে শীর্ষ দেশ হলো আমেরিকা। আমেরিকাতে খাদ্যশস্য
হিসেবে ভুট্টা বেশ জনপ্রিয়।
১ কেজি ভুট্টার দাম কত
বাংলাদেশে এক কেজি ভুট্টার দাম প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে
ভুট্টা জাতের ওপর নির্ভর করে এর কিছুটা কম বেশি হতে পারে। বাংলাদেশের রাজধানী
ঢাকাতে ১ কেজি ভুট্টা প্রায় ৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। আশা করি এক কেজি ভোটার
দাম কত আপনারা জানতে পেরেছেন।
ভুট্টার পুষ্টি উপাদান
ভুট্টাতে প্রচুর পরিমাণ এর পুষ্টি রয়েছে। ভুট্টাতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, আশঁ,
প্রোটিন, চর্বি ও ক্যালরি। ১০০ গ্রাম ভুট্টায় ১৯ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট,১ গ্রাম
আশ, ২ গ্রাম প্রোটিন, ২ গ্রাম চর্বি ও ৮৫ গ্রাম ক্যালরি পাওয়া যায়।
আরো পড়ুন:কিউই ফল এর পুষ্টিগুণ
তাছাড়া আপনি যদি ভুট্টার পপকন তৈরি করে খান তাহলে ১০০ গ্রাম পপকরনে আপনি ৯০
গ্রাম ক্যালরি, ২ গ্রাম প্রোটিন, ১৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও এক গ্রাম চর্বি পেয়ে
যাবেন। তাই বলা যায় যে ভুট্টার পুষ্টি উপাদান এর সমাহার।
ভুট্টা খেলে কি ওজন বাড়ে
আমরা জানি ভুট্টাতে প্রচুর পরিমাণ এর ফাইবার রয়েছে যা আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে
ধীর করে দেয়। এতে করে আমাদের কম ক্ষুধা পায় এবং শরীরের দীর্ঘ সময় কাজ করার
শক্তি বজায় থাকে। তাই বলা যায় যে ভুট্টা খেলে ওজন বাড়ে না বরং ভুট্টা ওজন
কমাতে সাহায্য করে।
ভুট্টা খাওয়ার নিয়ম
ভুট্টা আমরা বিভিন্নভাবে খেতে পারি। ভুট্টা একটি স্বাস্থ্যকর খাবার। আমাদের শরীরে
বিভিন্ন পুষ্টির যোগান দিয়ে থাকে। তাই আপনি প্রতিদিন ভুট্টা খেলেও কোন ক্ষতি
হওয়ার দুশ্চিন্তা থাকবে না। কচি ভুট্টাকে আপনি রোস্ট করে খেতে পারেন। আবার অনেকে
কচি ভুট্টাকে আগুনে পুড়ে গ্রিল করেও খেতে পছন্দ করে।
আরো পড়ুন:এলোভেরা জেল ত্বকে ব্যবহারের নিয়ম
ভুট্টার কচি দানাগুলো আপনি নুডুলস কিংবা পাস্তার সাথে দিয়েও খেতে পারবেন।
তাছাড়া শুকনো ভুট্টা কে পপকন বানিয়েও খাওয়া বেশ জনপ্রিয়। ভুট্টা আপনি যেকোনো
সময় খেতে পারবেন। তবে সকালের নাস্তা ও বিকেলের স্ন্যাকস হিসেবে খেলে বেশি উপকার
হবে। আশা করি ভুট্টা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
ভুট্টা খাওয়ার উপকারিতা
ভুট্টাতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। ফলে ভুট্টা খাওয়ার কারণে আমাদের
শরীরের স্বাস্থ্য উন্নত হয়। তবে ভুট্টা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে যদি জানতে চান
তাহলে কিছু বিশেষ উপকারিতা সম্পর্কে বলা যায়। চলুন তাহলে জানা যাক ভুট্টা
খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
- ভুট্টাতে প্রচুর পরিমাণ এর কার্বোহাইড্রেট রয়েছে যা আমাদের শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে। ফলে আমরা বেশি কাজ করার ক্ষমতা পেয়ে থাকি।
- ভুট্টাতে রয়েছে আশ যা আমাদের খালি পেটকে অনেক সময় ভরা রাতে সাহায্য করে ফলে অতিরিক্ত ক্ষুধা পায় না। খুদা না পাওয়ার কারণে আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- ভুট্টা খাওয়ার ফলে শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। এতে করে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
- ভুট্টাতে রয়েছে ভিটামিন যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- ভুট্টা খাওয়ার ফলে শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর হয় কারণ ভুট্টাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ এর লৌহ পদার্থ।
আরো পড়ুন:খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা
আপনি যদি নিয়মিত ভুট্টা খেয়ে থাকেন তাহলে উপরোক্ত উপকারগুলো অবশ্যই আপনার মধ্যে
পরিলক্ষিত হবে। আশা করি ভুট্টা খাওয়ার উপকারিতা আপনারা জানতে পেরেছেন।
পরিশেষে কথা
বর্তমান সময়ে ভুট্টার বেশ জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা গিয়েছে। তাই আপনি যদি
স্বাবলম্বী হতে চান তাহলে ভুট্টা চাষ করতে পারেন। আন্তর্জাতিক বাজারে ভুট্টার দাম
প্রচুর। তাই আপনি ভুট্টা চাষ করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারেও বিক্রি করতে
পারবেন। আপনাদের সুবিধার্থে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে ভুট্টা চাষ
পদ্ধতি, ভুট্টা চাষের উপযুক্ত সময়, হাইব্রিড ভুট্টার জাত,উন্নত জাতের ভুট্টার নাম,হাইব্রিড ভুট্টা চাষ
পদ্ধতি, ভুট্টা কোন মাটিতে ভালো হয়,ভুট্টা উৎপাদনে শীর্ষ জেলা কোনটি ইত্যাদি
বিষয়ে। ’
আশা করি আজকের আর্টিকেলটি আপনার উপকারে আসবে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই
শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট এর মাধ্যমে মতামত প্রকাশ করবেন এমন আরও অনেক তথ্য জানতে
www.twestinfo.com পেইজে চোখ রাখুন।
টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।
comment url