দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় ও একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়

মাসিকের রক্ত কালো হলে করনীয় আপনি কি মাসিক হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে গুগলে সার্চ করেছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়, কি খেলে মাসিক বেশি হয়, মাসিক হওয়ার দোয়া, দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ, এক মাসে দুইবার মাসিক হওয়ার কারণ ও প্রতিকার, একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায় ও ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয় ইত্যাদি বিষয়।
দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় / একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়
মাসিক সম্পর্কে আমাদের সবার জ্ঞান রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই আজকের আর্টিকেলে আমি মাসিক সম্পর্কে যাবতীয় বিস্তারিত আলোচনা করব। দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় ও একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।
সূচিপত্র: দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় / একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়

দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়

অনেক মেয়েরাই রয়েছে যাদের মাসিক অনিয়মিত হয়। মাসিক বা পিরিয়ড অনিয়মিত হওয়ার কারণে তাদের শরীরে নানান ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। আবার অনেকের দেখা যায় এক মাস কিংবা দুই মাস পর পর মাসিক হচ্ছে। এতে করে শরীরে আরো অনেক বেশি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাই এখন আলোচনা করব দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় সমূহ সম্পর্কে। যাদের অনিয়মিত মাসিক হয় তাদের জন্য দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় জানা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। চলুন তাহলে আলোচনা করা যাক দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় নিয়ে।

  • টক জাতীয় খাবার: টক জাতীয় খাবার খেলে দ্রুত মাসিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। টক জাতীয় খাবার গুলোর মধ্যে রয়েছে তেতুল, আমড়া, বরই ইত্যাদি। তাছাড়া এ সকল উপাদানে ভিটামিন সি রয়েছে। ভিটামিন সি আমাদের শরীরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই বলা যায় যে টক জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে দ্রুত মাসিক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়
  • আদা: দ্রুত মাসিক বা পিরিয়ড হওয়ার জন্য আদা বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিন আদা খাওয়ার ফলে আপনার অনিয়মিত মাসিক হবে না। দ্রুত মাসিকের জন্য প্রতিদিন আদা দিয়ে চা খেতে পারেন। যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী হবে।
  • মেথি বীজ: আমরা মেথির কাজ সাধারণত চুলে ব্যবহারের কথা জানি‌। কিন্তু এই মেয়েটি আমাদের দ্রুত মাসিক বা পিরিয়ড হতে সাহায্য করবে। তাই দ্রুত মাসিক হওয়ার জন্য মেথি বিছানো পানি খেতে পারেন। যা অনিয়মিত মাসিক এ ঠিক করবে এবং দ্রুত মাসিক হতে সাহায্য করবে।
  • মৌরি: মৌরি কে আমরা মসলা হিসেবেই বেশি ব্যবহার করি। কিন্তু এই মৌরি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। আপনার যদি অনিয়মিত মাসিক হয়ে থাকে তাহলে আপনি প্রতিদিন মৌরি ভেজানো পানি খেতে পারেন। এতে করে আপনার মাসিক নিয়মিত হয়ে যাবে।
  • তিল: তিলের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। তিল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য যেমন উপকারী তেমনি নিয়মিত মাসিক হওয়ার জন্য তিলের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তাই আপনার যদি অনিয়মিত মাসিক হয়ে থাকে তাহলে আপনি তিল ভেজানো পানি খেতে পারেন।
  • পেঁপে: পেঁপের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ এর ভিটামিন রয়েছে। এই ভিটামিন গুলোর মধ্যে রয়েছে ক্যারোটিন যা একজন মেয়ের মাসিক হতে সাহায্য করেন। তাই অনিয়মিত মাসিক কে ঠিক করার জন্য কাঁচা পেঁপে খেতে পারেন।
  • দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকুন: আমরা হয়তো কখনো ভাবতে পারবো না যে দুশ্চিন্তা করার কারণেও আমাদের মাসিকে সমস্যা হতে পারে। আসলে এটি সত্য কথা যে দুশ্চিন্তার জন্য মাসিকে সমস্যা দেখা দিতে পারে সেজন্য আপনাকে দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণের ঘুমানো: আমাদের ঘুম মাসিকের ওপর বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই আপনাকে স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণের ঘুমাতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ এর ঘুমালে আপনার মাসিক নিয়মিত হবে এবং দ্রুত মাসিক হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে।
  • ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে আমাদের শরীরে নানান ধরনের পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। ব্যায়াম করার কারণে শরীরের মাংস বেশি সচল হবে এবং অতিরিক্ত চর্বি কমে যাবে। তাই অনিয়মিত মাসিককে ঠিক করার জন্য অবশ্যই আপনাকে ব্যায়াম করতে হবে।
উপরুক্ত নিয়মগুলো মানলে আপনি দ্রুত মাসিক আনতে পারবেন। আপনার যদি মাসিকে অনিয়মিত হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই অনিয়মিত মাসিক করা অত্যন্ত প্রয়োজন। উপরোক্ত নিয়মগুলো হল দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় সমূহ। আশা করি দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।

কি খেলে মাসিক বেশি হয়

মাসিক ঠিকমত না হলে আমরা দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে যাই। মাসিক না হওয়ার পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। এর মধ্যে বিশেষ কারণ হলো আমরা অনেকেই খাওয়া-দাওয়া ঠিক মতো করি না। অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং পুষ্টিকরহীন খাবার খাওয়ার কারণে আমাদের মাসিকের সমস্যা হয়ে থাকে। সেই ক্ষেত্রে আপনাদের মনে প্রশ্ন হতে পারে কি খেলে মাসিক বেশি হয়।
দ্রুত মাসিক হওয়ার জন্য আমাদেরকে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। তবে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার গুলো একটু বেশি করে খেতে হবে। ভিটামিন সি যুক্ত খাবার গুলো হলো লেবু, টমেটো, কমলালেবু, ব্রকলি, কিউই ইত্যাদি। আবার টক জাতীয় ফল খাওয়ার ফলেও দ্রুত মাসিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
টক জাতীয় ফলগুলো হল আমড়া, তেতুল ইত্যাদি। তাই আপনার যদি অনিয়মিত মাসিক হয়ে থাকে উপরোক্ত খাবারগুলো খেতে পারেন। আশা করি কি খেলে মাসিক বেশি হয় আপনারা জানতে পেরেছেন।

মাসিক হওয়ার দোয়া বাংলায়

ইসলামিক উপায়েও কিছু দোয়া রয়েছে যার মাধ্যমে দ্রুত মাসিক হয়। আপনি যদি দোয়া এর মাধ্যমে মাসিক ঠিক করতে চান তাহলে নিচের দোয়াটি পড়তে পারেন। একজন অবিবাহিত ও বিবাহিত মহিলা উভয়ের জন্য এই দোয়াটি উপযুক্ত। মাসিক হওয়ার দোয়া আমাদেরকে জানতে হবে। চলুন তাহলে মাসিক হওয়ার দোয়া বাংলায় জানা যাক।

সুম্মুম বুকমুন উম‌ইয়ুন ফাহুম লা ইয়ারজি'ঊন।

উপরোক্ত দোয়াটি পড়লে আপনার দ্রুত মাসিক হবে। মাসিকে অনিয়মিত হলে নিয়মিত এই দোয়াটি পড়তে পারেন। ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী ব্যক্তিদের জন্য অবশ্যই এই দোয়াটি উপকার করবে। আশা করি মাসিক হওয়ার দোয়া বাংলায় আপনারা জানতে পেরেছেন।

দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ

অনিয়মিত মাসিকগুলোর কিছু লক্ষণ রয়েছে এর মধ্যে দুই মাস পর পর মাসিক হওয়াও একটি লক্ষণ। একজন মহিলার যদি দুই মাস পর পর‌ও মাসিক হয় না তাহলে বুঝতে হবে তার শরীরে অবশ্যই কোন সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যাগুলোর মধ্যে হতে পারে:

  • অতিরিক্ত ওজন কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া।
  • পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ না করা।
  • অতিরিক্ত কফি পান করা।
  • ধূমপান করা, দুশ্চিন্তা করা।
  • অপরিষ্কার পরিবেশে জীবনযাপন করা।
  • নিজেকে অপরিষ্কার রাখা।
  • অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া।
  • জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল গ্রহণ করা।
  • অতিরিক্ত ইনজেকশন গ্রহণ করা।
উপরোক্ত বিষয়গুলোর কারণে একজন মহিলার অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে বা দুই মাস পর পর‌ও পিরিয়ড হয় না। অবশ্যই এই অভ্যাস গুলো আমাদেরকে পরিবর্তন করতে হবে। আশা করি দুই মাস মাসিক না হওয়ার কারণ আপনারা জানতে পেরেছেন।

১৫ দিন পর পর মাসিক হওয়ার কারণ কি

নিয়মিত মাসিক না হওয়া যেমন একটি সমস্যা তেমনি কিছুদিন পর পর মাসিক হওয়াও একটি সমস্যা। যাদের ১৫ দিন পর পর মাসিক হওয়াও এক ধরনের রোগ হিসেবে বলা যায়। তবে 15 দিন পর পর মাসিক হওয়া একেক বয়সের কিশোরী বা তরুণীদের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে। যদি কোন কিশোরীর বাড়ন্ত বয়সে কিছুদিন পর পর মাসিক হয় তাহলে এটা স্বাভাবিক হিসেবেই ধরা হয়।
কিন্তু একজন প্রাপ্ত বয়স্ক তরুণীর যদি ১৫ দিন পর পর বা কিছুদিন পরপর মাসিক হয় তাহলে তাদের শরীরে সমস্যা দেখা দেয়। এ সকল তরুণীদের শরীরে হরমোনাল ডিজিজ হয়ে থাকে। থাইরয়েড হরমোন কম বা বেশি হলে তখন মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।

যদি করো তরুণীর ১৫ দিন পর পর মাসিক হয় তাহলে বুঝতে হবে তার হরমোনাল ডিজিজ বা থাইরয়েডের সমস্যা হয়েছে। এমন সমস্যায় পড়লে অবশ্যই তাদেরকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করতে হবে। আশা করি ১৫ দিন পর পর মাসিক হওয়ার কারণ কি সেই সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।

এক মাসে দুইবার মাসিক হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

অনেক কিশোরী বা তরুণীদের এক মাসে দুইবার করে পিরিয়ড বা মাসিক হয়ে থাকে। যা একজন কিশোরী বা তরুনীর ক্ষেত্রে এক ধরনের ট্রমা হিসেবে ধরা হয়। একসময় অতিরিক্ত পিরিয়ড হওয়া কিশোরী বা তরুনীর কাছে বিরক্তি কর একটি জিনিস হয়ে দাঁড়ায়। তাই আমাদেরকে অবশ্যই জানতে হবে এক মাসে দুইবার মাসিক হওয়ার কারণ কি। এবং এর প্রতিকার সম্পর্কেও আমাদেরকে জ্ঞান রাখতে হবে। তাহলে চলুন জানা যাক এক মাসে দুইবার মাসিক হওয়ার কারণসমূহ:

  • হরমোনাল ডিজিস: আমাদের শরীরে এক ধরনের থাইরয়েড গ্রন্থি রয়েছে যা শরীরের সকল কার্য পদ্ধতিকে স্বাভাবিক রাখে। যদি কোন কারনে এই থাইরয়েড গ্রন্থি কম অথবা বেশি হয়ে যায় তখন হরমোন নিঃসৃত হয়। ফলে পুরো শরীরে কার্যকলাপ অনিয়মিত হয়ে পড়ে। এতে করে পিরিয়ড অনিয়মিত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • ওজন কমে যাওয়া: অনেক কিশোরী এবং তরুণীরা ডায়েট করার জন্য নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করে না। ফলে একসময় তাদের অস্বাভাবিক ভাবে ওজন কমে যায়। এই ওজন কমার কারণে ও পিরিওড অনিয়মিত হয়ে থাকে।
  • জরায়ুতে টিউমার: কিশোরী বা তরুণীদের যদি জরায়ুতে টিউমার হয়ে থাকে তাহলে ঘনঘন মাসিক হতে পারে। এই টিউমারকে পলিপ এর মত হয়ে থাকে। তাই আপনার যদি প্রতিমাসে দুইবার করে পিরিয়ড হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
  • পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম: পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম এক ধরনের হরমোনাল সমস্যা যা তিনটি হরমোন এস্ট্রোজেন, প্রজেস্টেরন ও টেস্টোস্টেরন উৎপাদন করে। এই তিনটি জরুরি হরমোনের উৎপাদনের মাত্রা কমে গেলে তখন সেই রোগকে পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম বলা হয়। যদি কোন কিশোরী বা তরুনীর শরীরে এরকম রোগ দেখা দেয় তখন এক মাসে দুইবার বা অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে।
  • মানসিক চাপে ভোগা: অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকলেও আমাদের পিরিয়ডের সমস্যা হতে পারে। যদি কোন কিশোরী বা তরুণী অতিরিক্ত মানসিক চাপে ভেঙ্গে পড়ে তখন ওই কিশোরী বা তরুনীর হাইপোথ্যালামিক অ্যামেনোরিয়া হতে পারে। এই রোগের কারণে পিরিয়ড দেরিতে হয়।
উপরোক্ত বিষয়গুলো পড়ে অবশ্যই আপনারা বুঝতে পেরেছেন অতিরিক্ত পিরিয়ড হলে নানান বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই উপরোক্ত কোন বিষয়ে যদি আপনার শরীরে হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই তা ঠিক করার চেষ্টা করতে হবে। চলুন তাহলে জানা যাক এক মাসে দুইবার মাসিক হওয়ার প্রতিকার:

  • এক মাসে দুইবার মাসিক হলে অবশ্যই আপনাকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
  • প্রতিদিন তরল খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
  • অতিরিক্ত স্ট্রেস থেকে দূরে থাকতে হবে।
  • আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
  • গরম পানি দিয়ে গোসল করতে হবে।
  • বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাকসবজি খেতে হবে।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
  • অতিরিক্ত কফি খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
  • মানসিক চাপ কমাতে হবে।
  • অতিরিক্ত পরিশ্রম করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চললে আশা করি আপনার মাসিক ঠিক হয়ে যাবে। তাই যাদের অনিয়মিত মাসিক বা অতিরিক্ত মাসিক হয়ে থাকে তারা অবশ্যই নিয়মগুলো মেনে খাদ্যাভাস গড়ে তুলুন এবং দৈনন্দিন জীবনের রুটিন পরিবর্তন করুন। আশা করি এক মাসে দুইবার মাসিক হওয়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।

পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করণীয়

অনেক বিবাহিত মহিলারা জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য পিল খেয়ে থাকেন। পিল্ম মূলত মাসিক হওয়ার জন্য খেতে হয়। অনেক সময় দেখা যায় পিল খাওয়ার পর‌ও মাসিক হয় না। সে ক্ষেত্রে মহিলারা একটু চিন্তিত হয়ে পড়েন। পিল খাওয়ার পর যদি আপনার মাসিক না হয় সেক্ষেত্রে আপনাকে প্রেগনেন্সি টেস্ট করাতে হবে। কারণ যদি আপনি প্রেগনেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে পিল খাওয়ার পর মাসিক হবে না। 

কিন্তু প্রেগনেন্সি টেস্ট করার পর যদি আপনি দেখতে পান যে আপনি প্রেগন্যান্ট না তারপরও পিল খাওয়ার পর আপনার মাসিক হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। মাসিক একটি মেয়ের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যদি হঠাৎ করে এই মাসিক বন্ধ হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে আমরা একটু চিন্তিত হতে পারি। 

এবং হঠাৎ করে মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে নানান ধরনের সমস্যাও হতে পারে। তাই সর্বশেষ বলা যায় যে পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করণীয় হল আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং সঠিকভাবে পরীক্ষা করতে হবে যে আপনার শরীরে কোন প্রকার সমস্যা বাসা বেধেছে কিনা। আশা করি পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করণীয় কি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।

একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়

একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায় এ কথাটি শুনে হয়তো একটু আশ্চর্য হচ্ছেন যে আদৌ কি এটা সম্ভব। আসলে বলা যায় যে একদিনে মাসিক হওয়া সম্ভব নয় তবে কিছু টিপস ফলো করলে তাড়াতাড়ি আপনার মাসিক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে। আমাদের অনেকেরই নিয়মিত মাসিক না হওয়ার কারণে অথবা হঠাৎ করে মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে চিন্তিত হয়ে পড়ি। তাই আজকে আলোচনা করব একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে।

  • ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়া: আমাদের আশেপাশে এমন ফল রয়েছে যাতে প্রচুর পরিমাণ এর ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি যুক্ত ফলগুলো হল লেবু, টমেটো, ব্রকলি, কমলা ,মালটা ইত্যাদি। তাই আপনি যদি চান একদিনে মাসিক হওয়াতে তাহলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেতে পান।
  • টক জাতীয় খাবার খাওয়া: আমরা জানি টক জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে পিরিয়ড বা মাসিক হয়। সে ক্ষেত্রে আপনি যদি এক দিনে মাসিক হওয়াতে চান তাহলে টক জাতীয় খাবার যেমন: আমড়া,তেতুল,আনারস ইত্যাদি খেতে পারেন। আশা করি টক জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে তাড়াতাড়ি পিরিয়ড হয়ে যাবে।
  • প্রচুর পরিমাণে ঝাল খাওয়া: ঝাল খাওয়ার কারণেও মাসিক বা পিরিয়ড হয়। তাই আপনি প্রচুর পরিমাণে ঝাল খাবার খেতে পারেন এতে করে একদিনে মাসিক হয়ে যাবে।
উপরুক্ত উপায়গুলো মানলে আশা করি একদিনে মাসিক হবে। যদিও একদিনে মাসিক হওয়ানো তেমন একটা সহজ বিষয় নয় তারপরও আপনারা উপরোক্ত উপায়গুলো মানতে পারেন। আশা করি একদিনের মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।

ইমার্জেন্সি পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয়

অনেক তরুণীরা তাড়াতাড়ি মাসিক হওয়ার জন্য ইমার্জেন্সি পিল খেয়ে থাকে। এই ইমারজেন্সি পিল আরেকটি কারণেও খাওয়া হয় সেটা হল প্রেগন্যান্ট না হওয়ার জন্য। তাই আমাদের অনেকেরই প্রশ্ন যে ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয়।

ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার প্রায় ৫ থেকে ৭ দিন পর মাসিক হয়। তবে যাদের নিয়মিত মাসিক হয় তাদের ক্ষেত্রে এই সময়টা কিছুটা কম হতে পারে। আবার যাদের একটু দেরিতে মাসিক হয় তাদের ক্ষেত্রে এই সময়ের একটু বেশি লাগতে পারে। আশা করি ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয় আপনারা জানতে পেরেছেন।

নোরিক্স ১ খাওয়ার কতদিন পর মাসিক হয়

নোরিক্স ১ পিল খাওয়ার সাথে সাথে মাসিক হয় কিনা বা কতদিন পর মাসিক হয় সেই সম্পর্কে আমাদের মধ্যে অনেক মতামত রয়েছে। নোরিক্স ১ পিল সাধারণত জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল অথবা তাড়াতাড়ি মাসিক হওয়ার জন্য খাওয়া হয়। 

নোরিক্স ১ খাওয়ার ১০ থেকে ১৫ দিন পর মাসিক হয়। এই সময়টা কারো ক্ষেত্রে বেশি লাগতে পারে আবার কারো ক্ষেত্রে কমও হতে পারে। সেটা নির্ভর করবে আপনার মাসিক নিয়মিত হয় নাকি অনিয়মিত। আশা করি নোরিক্স ১ খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয় আপনারা জানতে পেরেছেন।

নরমেনস ট্যাবলেট খাওয়ার কতদিন পর মাসিক হয়

নরমেনস ট্যাবলেট হল জন্মনিরোধক ঔষধ। এটি বিবাহিত মহিলারা বেশি খেয়ে থাকে। তাই তাদের মধ্যে প্রশ্ন জাগে নরমেনস ট্যাবলেট খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয়। আপনি যদি একটানা প্রায় ২১ দিন নরমেনস ট্যাবলেট খান তাহলে ৭ থেকে ১০ দিন পর মাসিক হয়।

নরমেনস ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম হলো আপনাকে একটানা ২১ দিন নরমেলস ট্যাবলেট খেতে হবে এরপর ৭ দিন খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। ৭ দিন বন্ধ রাখার পর আপনার পিরিয়ড কিছুদিনের মধ্যেই হয়ে যাবে। আশা করি নরমেনস ট্যাবলেট খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয় আপনারা জানতে পেরেছেন।

ফেমিকন পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয়

ফেমিকন ট্যাবলেট জন্মনিয়ন্ত্রক ট্যাবলেট।ফেমিকন ট্যাবলেট আপনাকে মাসিক শেষ হওয়ার ১০ দিন পর থেকে খেতে হবে। আপনাকে ফেমিকন ২১ দিন খেতে হবে। ফেমিকনের ২১ টি সাদা ট্যাবলেট খাওয়ার পরের দিন থেকে ৭ দিনে একটি করে ৭টি বাদামি রঙের ট্যাবলেট খেতে হবে। 

এই নিয়মে খাওয়ার পর কিছুদিন অপেক্ষা করলেই আপনার মাসিক হয়ে যাবে। সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৭ দিন পর আপনার মাসিক হয়ে যাবে। আশা করি ফেমিকন পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয় আপনারা জানতে পেরেছেন।

মন্তব্য

একজন কিশোরী বা তরুনীর জন্য নিয়মিত মাসিক হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। অনিয়মিত মাসিকের কারণে কিশোরী বা তরুণী নানান রকমের রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এই রোগ থেকে বাঁচার জন্য এবং সহজেই মাসিক কিভাবে হবে সে সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেল লেখা। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়,একদিনে মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়, নোরিক্স ১ খাওয়ার কতদিন পর মাসিক হয়,

ফ্যামিকন পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয়, নরমেনস ট্যাবলেট খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয় ইত্যাদি বিষয়ে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সকলকে সতর্ক করার জন্য অবশ্যই আর্টিকেলটি শেয়ার করুন এবং এমন আরো অনেক তথ্য পেতে www.twestinfo.com পেজে চোখ রাখুন ‌।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।

comment url