যোজনী কাকে বলে,যোজনী কত প্রকার ও বিভিন্ন মৌলের যোজনী কত
ক্যালসিয়ামের সকল যৌগের সংকেত ও রাসায়নিক নাম
প্রিয় পাঠক,আজকের আর্টিকেলে আমরা যোজনী কাকে বলে, যোজনী কত প্রকার ও বিভিন্ন
মৌলের যোজনী কত সে সম্পর্কে জানব। তাছাড়া আজকের আর্টিকেলে আরো থাকবে যোজনী বের
করার নিয়ম, যোজনী ও যোজ্যতা ইলেকট্রনের মধ্যে পার্থক্য,যোজনী ও জারণ সংখ্যার
মধ্যে পার্থক্য ইত্যাদি বিষয়। আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে আপনারা এ
সকল বিষয়ে এবং আরো অনেক তথ্য জানতে পারবেন।
সূচিপত্র: যোজনী কাকে বলে,যোজনী কত প্রকার ও বিভিন্ন মৌলের
যোজনী কত
ভূমিকা
বিজ্ঞান বিভাগের রসায়ন বইয়ের যোজনী একটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক। যোজনী নিয়ে আমাদের
মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী নানান ধরনের সমস্যায় পড়ে থাকে। তারা দুজনই ও জারণ
সংখ্যার মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করতে পারেনা। তাছাড়া বিভিন্ন মৌলের যোজনী কত তাও
জানে না। তাই আজকের আর্টিকেলে এ সকল বিষয়ে আলোচনা করা হবে। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি
মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
যোজনী কাকে বলে / যোজনী কত প্রকার ও কি কি
যোজনী হল রাসায়নিক যৌগ তৈরি করার সময় একটি পরমাণু অন্য একটি পরমাণুর সাথে ধারণ
ক্ষমতার পরিমাপ। সহজ কথায় বলা যায় যে কোন মৌলের একটি পরমাণু অন্য একটি পরমাণু
সাথে যুক্ত হবার জন্য যে শক্তি প্রয়োজন তাই যোজনী। যেমন: আমরা জানি হাইড্রোজেনের
যোজনী ১।
এবং এই হাইড্রোজেন যদি অন্য একটি পরমাণুর সাথে যুক্ত হয় অর্থাৎ ক্লোরিন পরমাণুর
সাথে যুক্ত হলে হাইড্রোজেন এবং ক্লোরিন একসাথে HCL যৌগ উৎপন্ন করে। এখানে
হাইড্রোজেন পরমাণুর যোজনী ১ এবং ক্লোরিন পরমাণুর যোজনী ১। আবার আমরা যদি মিথেন
(Ch4) এর যোজনী হিসাব করি তাহলে দেখতে পারবো কার্বনের C যোজনী ৪। আশা করি যোজনী
কাকে বলে বুঝতে পেরেছেন। চলুন এখন যোজনী কত প্রকার ও কি কি সে সম্পর্কে জানা যাক।
যোজনী চার প্রকার। যথা:
- পরিবর্তনশীল যোজনী।
- সক্রিয় যোজনী।
- সর্বোচ্চ যোজনী।
- সুপ্ত যোজনী।
যোজ্যতা ইলেকট্রন কাকে বলে
যোজনী ইলেকট্রন হল কোন পরমানুর রাসায়নিক বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করার সময় যে
ইলেকট্রন ব্যবহার করে বিভিন্ন বন্ধনে আবদ্ধ হয়। অন্যভাবে বলা যায় যে কোন মৌলের
সর্বশেষ শক্তি স্তরে কতটি ইলেকট্রন থাকে তার ওই সংখ্যাকে ওই মৌলের যোজ্যতা
ইলেকট্রন বলা হয়।
আরো পড়ুন:মানবদেহের তন্ত্রের তালিকা
যেমন: পটাশিয়াম এর ইলেকট্রন বিন্যাসের মাধ্যমে আমরা দেখতে পাবো যে সর্বশেষ
কক্ষপথে একটি মাত্র ইলেকট্রন রয়েছে। তাই পটাশিয়ামের যোজ্যতা ইলেকট্রন হবে একটি।
আশা করি যোজ্যতা ইলেকট্রন কাকে বলে সেই সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
যোজনী বের করার নিয়ম
কোন মৌলের যোজনী নির্ণয় করা খুব সহজ। এই যোজনী নির্ণয় করার জন্য আমরা বেশ কিছু
নিয়ম ব্যবহার করতে পারি। সেই নিয়ম গুলো ব্যবহার করলে আমরা সহজে একটি মৌলের
যোজনী সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারব। চলুন তাহলে যোজনী বের করার নিয়ম সম্পর্কে
জানা যাক।
মৌলের সংজ্ঞা দেখে যোজনী নির্ণয়:কোন মৌলের সংজ্ঞা দেখে ও ওই মৌলের সাথে
লেখা সাবস্ক্রিপ্ট দেখে আমরা নির্ণয় করতে পারবো ওই মৌলের যোজনী কত। তাছাড়া
মৌলের রাসায়নিক নাম দেখেও আমরা যোজনী নির্ণয় করতে পারবো। যেমন: মিথেন (CH4) ।
মিথেনের রাসায়নিক নামের মধ্যে মিথেনের যোজনী সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে C
এর সাবস্ক্রিপ্ট ৪ এবং কার্বনের যোজনী চার।
অক্সিডেশন টেস্ট ব্যবহার করে যোজনী নির্ণয়:কোন মূল মৌলের অক্সিডেশন টেস্ট
জানতে হবে। এই অক্সিডেন্টেশন টেস্ট হলো মৌলের যোজনী। যেমন:KMnO4 এখানে Mn
অক্সিডেশন এজেন্ট এবং অক্সিজেন এর যোজনী ৪।
লুইস স্ট্রাকচার ব্যবহার করে যোজনী নির্ণয়:মৌলের লুইস স্ট্রাকচার দেখে ও
যোজনী নির্ণয় করা যায়। সে ক্ষেত্রে মূল মৌলটি অন্য কোন মৌলের সাথে বোর্ড তৈরি
করেছে তা গণনা করতে হবে এবং সেই সংখ্যায় হবে মৌলটির যোজনী।
ভ্যালেন্স ইলেকট্রন ব্যবহার করে যোজনী নির্ণয়:কোন মৌলের ভ্যালেন্স
ইলেকট্রন সংখ্যা দেখেও যোজনী নির্ণয় করা যাবে সেক্ষেত্রে ভ্যালেন্স ইলেকট্রন
সংখ্যায় হবে যোজনী সংখ্যা।
যোজনী মনে রাখার ছন্দ
আমরা অনেকেই যোজনী সংখ্যাগুলো মনে রাখতে পারি না বা অনেকগুলো মৌলের যোজনী একসাথে
মুখস্থ করতে পারিনা। সে ক্ষেত্রে মনে রাখার জন্য এবং সহজে মুখস্ত হওয়ার জন্য
আমরা যোজনী মনে রাখার ছন্দ সম্পর্কে পড়তে পারি। যার মাধ্যমে সহজেই আমরা যোজনী
মনে রাখতে পারব। চলুন তাহলে যোজনী মনে রাখার ছন্দ গুলো কি কি জানা যাক।
ছন্দ ১: যোজনী সংখ্যা ১
ফারিহা করল লেখাপড়া অমানুষ হায়দার সোহেল সিলেটে করল বাড়ি।
- ফারিহা=F
- করল=Cl
- লেখাপড়া=Li
- অমানুষ=I
- হায়দার=H
- সুহেল=Na
- সিলেটে=Ag
- করলো=Cu
- বাড়ি=br
ছন্দ 2: যোজনী সংখ্যা ২
অন্তর্যামী কেমনে তোমার বল পাবো আমি সুলতান মামার কবিতা
- অন্তর্যামী=O
- কেমনে =Zn
- তোমার =Ca
- বল =Sn
- পাবো =Be
- আমি =Pb
- সুলতান =Fe
- মামার=Mg
- কবিতা=C
ছন্দ ৩: যোজনী সংখ্যা ৩
বিএনপি এলো ক্রোধে ফিরে
- বি=B
- এন=N
- পি=P
- এলো =Al
- ক্রোধে =Cr
- ফিরে=Fe
ছন্দ ৪: যোজনী সংখ্যা ৪
কাল ছিল যে টিন পাবে সে
- কাল=C
- ছিল=S
- যে =Ge
- টিন=P
ছন্দ ৫:যোজনী সংখ্যা ৫
প্রথা নাই
- প্রথা= P
- নাই=N
যোজনী ও যোজ্যতা ইলেকট্রনের মধ্যে পার্থক্য
আমরা অনেকেই মনে করি যোজনী ও যোজ্যতা ইলেকট্রন একই। আসলে যোজনী ও যোজ্যতা
ইলেকট্রন দুইটি ভিন্ন। যোজনী হল কোন মৌল অন্য একটি মৌলের সাথে যুক্ত হবার জন্য যে
শক্তি বা সামর্থ্য থাকে । অন্যদিকে যোজ্যতা ইলেকট্রন হলো কোন মৌলের ইলেকট্রন
বিন্যাসে সর্বশেষ কক্ষপথে যত সংখ্যক ইলেকট্রন থাকবে ওই সংখ্যায় হবে যোজ্যতা
ইলেকট্রন।
আরো পড়ুন:রুই মাছের রক্ত সংবহন তন্ত্র
কোন মৌলের বাজ যৌগের যোজনী একাধিক সংখ্যা হতে পারে কিন্তু কোন মৌলের যোজ্যতা
ইলেকট্রন একাধিক হতে পারবে না এটি একটিমাত্র ইলেকট্রন সংখ্যা হয়। যোজনী একটি মৌল
এবং যৌগ উভয়েরই রয়েছে। কিন্তু যোজ্যতা ইলেকট্রন শুধু মাত্র একটি মৌলের ক্ষেত্রে
হয়ে থাকে। আশা করি দুজনে ও যোজ্যতা ইলেকট্রনের মধ্যে পার্থক্য আপনারা জানতে
পেরেছেন।
জারণ সংখ্যা কাকে বলে?
জারণ সংখ্যা হল কোন যৌগ গঠনের সময় মৌল যত সংখ্যক ইলেকট্রন বর্জন করে ধনাত্মক
আয়ন উৎপন্ন করে এবং যতসংখ্যক ইলেকট্রন গ্রহণ করে ঋণাত্মক আয়ন উৎপন্ন করে সেই
সংখ্যা। কোন মৌল যদি ইলেকট্রন গ্রহন করে তাহলে সেলিনা ত্বক আয়নে পরিণত হয় এবং
ঋণাত্মক জারণ সংখ্যা বহন করে।
আবার কোন মৌল ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক আয়নে পরিণত হলে সেই মৌল ধনাত্মক জারণ
সংখ্যা বহন করে। যেমন:HCL এখানে Cl ইলেকট্রন গ্রহণ করে তাই এর জারণ সংখ্যা হবে -১
এবং H ইলেকট্রন বর্জন করে তাই এর জারণ সংখ্যা হবে +১।
যোজনী ইলেকট্রন কাকে বলে?
কোন পরমানুর সাথে সম্পর্কিত ইলেকট্রন যার রাসায়নিক বন্ধন গঠন করতে অংশগ্রহণ করে
তাকেই যোজনী ইলেক্ট্রন বলা হয়। এই যোজনী ইলেক্ট্রন বন্ধন টি একক সমযোজী বন্ধনে
আবদ্ধ হয়ে উভয় পরমাণুর একটি করে যোজনী ইলেকট্রন ভাগ করে নিয়ে সর্বমোট একজোড়া
ইলেকট্রন বন্ধন গঠন করে।
সক্রিয় যোজনী কাকে বলে?
আমরা জানি যোজনী কে প্রধানত চার ভাগে ভাগ করা যায়। এই চার ভাগের মধ্যে সক্রিয়
যোজনী একটি। সক্রিয় যোজনী হল এমন একটি যোজনী যার রাসায়নিক অভিক্রিয়ায়
অংশগ্রহণ করে। অন্যভাবে বলা যায় যে সক্রিয় যোজনী কোন মৌলের সাথে রিয়েক্ট করে
বা বিভিন্ন রিঅ্যাকশন এ অংশগ্রহণ কর। তাছাড়া অনেক সময় বিভিন্ন যৌগের এজেন্ট
হিসেবে ও কাজ করে।
আরো পড়ুন:জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম
যেমন:KMnO4 এখানে Mn একটি সক্রিয় যোজনী যা অক্সিডাইজিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে
থাকে। আবার NaOH এখানে Na এর যোজনী সক্রিয় যা এসিড বেস রিয়েকশনে অংশগ্রহণ করে
থাকে।
সুপ্ত যোজনী কাকে বলে?
সুপ্ত যোজনী হল কোন মৌলের সর্বোচ্চ যোজনীর চেয়ে কম অর্থাৎ কোন মৌলের যোজনী
সংখ্যা যতটুকু কম হবে সেটুকু সুপ্ত যোজনী। যেমন: আমরা জানি অক্সিজেনের সর্বোচ্চ
যোজনী হবে ২। তবে O3 যৌগে অক্সিজেনের যোজনী এক অর্থাৎ O3 অক্সিজেনের একটি সুপ্ত
যোজনী। আবার নাইট্রোজেনের সর্বোচ্চ যোজনী ৫। কিন্তু নাইট্রোজেন NH3 যৌগে যোজনী
হয় ৩। সুতরাং বলা যায় যে NH3 যৌগের নাইট্রোজেনে্য সুপ্ত যোজনী।
পরিবর্তনশীল যোজনী কাকে বলে?
পরিবর্তনশীল যোজনী পরিবেশের উপর নির্ভর করে। পরিবর্তনশীল যোজনী হল এমন এক যোজনী
যা পরিবেশের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তন হয়। যেমন: সালফারের যোজনী অক্সিডাইজিং
এজেন্ট +৬ থেকে +৪ হয়ে যায়। আবার ক্লোরিনের যোজনীর পানির সাথে মিশিয়ে দিলে -১
থেকে ০ হয়ে যায়।
নাইট্রোজেনের যোজনী অক্সিডাইজিং এজেন্ট এ +৫ থেকে+৪। উপরোক্ত পরমাণুর পরিবর্তনের
কারণ থেকে আমরা বুঝতে পারি পরিবর্তনশীল যোজনী পরিবেশের উপর নির্ভর করে পরিবর্তন
হয় তাই এর নাম পরিবর্তনশীল যোজনী।
সর্বোচ্চ যোজনী কাকে বলে?
সর্বোচ্চ যোজনী হল একটি মৌলের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক যোজনী। একটি মৌলের যোজনী
প্রতিটি মৌলের নির্দিষ্ট ব্যালেন্স ইলেকট্রনের সংখ্যার উপর নির্ধারণ করা হয়। এবং
সেই ভ্যালেন্স অর বিটাল পূর্ণ করার জন্য যতগুলো ইলেকট্রন প্রয়োজন তা ধারাও
সর্বোচ্চ যোজনী নির্ণয় করা হয়। যেমন: কার্বনের ভ্যালেন্স ইলেকট্রন চারটি সুতরাং
কার্বনের সর্বোচ্চ যোজনী হবে চার।
যোজনী ও জারণ সংখ্যার মধ্যে পার্থক্য
যোজনী হল কোন মৌলের একটি পরমাণু অন্য একটি মৌলের পরমাণুর সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য
যে শক্তি বা সামর্থ্য থাকে। অন্যদিকে জারণ সংখ্যা হল কোন যৌগ গঠনের সময় মৌল যত
সংখ্যক ইলেকট্রন বর্জন করে ধনাত্মক আয়ন এবং যত সংখ্যক ইলেকট্রন গ্রহণ করে
ঋনাত্মক আয়ন উৎপন্ন করে।
দুজনে সাধারণত স্থির অবস্থায় থাকে তবে কিছু কিছু মৌলের ক্ষেত্রে তা পরিবর্তনশীল
যোজনী রূপ ধারণ করে। আর জারণ সংখ্যা হল ভিন্ন ভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়া সংগঠনের
সময় যে ভিন্ন ভিন্ন মান পাওয়া যায়। যোজনী একটি মৌল এর সাথে অন্য একটি মৌলের
যুক্ত হওয়ার ক্ষমতা। অন্যদিকে জারণ সংখ্যা হল যৌগ গঠনের সময় মৌলের ইলেকট্রনের
আদান-প্রদানের সংখ্যা।
যোজনীর সংখ্যা সবসময় ধনাত্মক। এবং জারণ সংখ্যা ধনাত্মক ও ঋণাত্মক উভয় হতে পারে।
কোন মৌলের যোজনী পূর্ণ সংখ্যা বা 0 হতে পারবে। অন্যদিকে জারণ সংখ্যা পূর্ণ
সংখ্যা, ভগ্নাংশ বা শূণ্য হতে পারে। আশা করি যোজনী ও জারণ সংখ্যার মধ্যে পার্থক্য
আপনারা জানতে পেরেছেন।
যোজনী ও জারণ সংখ্যা এক নয় কেন?
যোজনী এবং জারণ সংখ্যা ১৯ কারণ যোজনী হল একটি মৌল অন্য মৌলের সাথে যুক্ত হওয়ার
ক্ষমতা আর জারণ সংখ্যা হল কোন মৌল অন্য একটি মৌলের সাথে যুক্ত হয়ে ইলেকট্রন
গ্রহণ করে ঋণাত্মক এবং ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক সংখ্যা। যোজনী ও জারণ সংখ্যা
দুইটি ভিন্ন পদ্ধতি।
পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে কোন কোন মৌল?
আমরা জানি অবস্থানান্তর মৌলসমূহ সব সময় পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে। কারণ
তাদের সর্ব বহিঃস্থ শক্তি স্তরে একাধিক অর বিটাল ফাঁকা থাকে। এবং ওই সকল
মৌলগুলোকে উত্তেজিত অবস্থায় ফাঁকা অরবিটাল গুলোতে ইলেকট্রন স্থানান্তর করা যায়।
তাই তারা পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে। পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে যে সকল
মৌল:
Cu,Fe,S,P,Mn,Cr ইত্যাদি। অবস্থানান্তর মৌল সংখ্যা হল ২৮ টি।
কোন মৌলের যোজনী শূন্য?
নিষ্ক্রিয় গ্যাসের পরমাণু গুলোর যোজনী শূন্য হয়ে থাকে। নিষ্ক্রিয় গ্যাসের
পরমাণু গুলোর ব্যালেন্স শেলটিতে আটটি ইলেকট্রন থাকে যা অষ্টক নিয়ম মেনে চলে। তাই
নিষ্ক্রিয় গ্যাসের পরমাণু গুলোর যোজনী শূন্য হয়ে থাকে। পরমাণুগুলো হল:
- He
- Ne
- Ar
- Kr
- Xe
- Rn
উপরোক্ত মৌলগুলো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না। তাই তাদেরকে নিষ্ক্রিয়
গ্যাস বলা হয়। নিষ্ক্রিয় গ্যাস হওয়ায় মৌলগুলোর যোজনী শুন্য।
সালফারের যোজনী কত?
সালফারের প্রাথমিক অবস্থায় যোজনী ২। সালফারকে তাপ দিলে সালফারের যোজনী হয় ৪।
আবার উত্তর তো অবস্থায় সালফার আরেকটি যোজনী প্রদর্শন করে তা হল ৬। তাই বলা হয়ে
থাকে সালফারের যোজনী ২,৪,৬।
সালফার পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে কেন?
আমরা জানি অবস্থানান্তর মৌলগুলি পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে। অবস্থানান্তর
মৌল গুলো হলো যে সকল মৌলের d অরবিটাল ফাঁকা থাকে।d অরবিটাল ফাঁকা থাকার কারণে
সালফার বিভিন্ন অবস্থায় বিভিন্ন যোজনী প্রদর্শন করে। প্রাথমিক অবস্থায় সালফারের
যোজনী ২।
আরো পড়ুন:পড়ালেখায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়
যখন সালফার কে কিছুটা তাপ প্রয়োগ করা হয় তখন তার d অরবিটালে ইলেকট্রন
স্থানান্তর হয় যার ফলে এর যোজনী হয় ৪। আবার সালফারকে যখন আরো তা প্রয়োগ করা
হয় তখন তার যোজনী প্রদর্শন করে ৬। মূলত সালফার অবস্থানান্তর মৌল হওয়ায়
পরিবর্তনশীল যোজনী প্রদর্শন করে থাকে।
অক্সিজেনের যোজনী কত?
অক্সিজেনের প্রাথমিক যোজনী ২। অক্সিজেন অন্য মৌলের সাথে সমযোজী বা আয়নিক বন্ধন
ধারা যৌগ গঠন করে থাকে।
অক্সিজেনের যোজনী ও যোজ্যতা ইলেকট্রন ভিন্ন কেন?
আমরা জানি অক্সিজেনের যোজনী হল ২। কারণ অক্সিজেনের ইলেকট্রন বিন্যাস করলে দেখা
যায় যে এর শেষ কক্ষপথে দুইটি বিজর ইলেকট্রন রয়েছে। আবার আমরা জানি কোন মৌলের
শেষ কক্ষপথে যতটি ইলেকট্রন থাকবে তার মোট সংখ্যাকে বলা হয় যোজনী ইলেকট্রন। তাই
অক্সিজেনের ইলেকট্রন বিন্যাস করলে আমরা দেখতে পাবো যে এর শেষ কক্ষপথে ছয়টি
ইলেকট্রন রয়েছে। তাই বলা হয় অক্সিজেনের যোজনী ইলেকট্রন ৬। আশা করি অক্সিজেনের
যোজনী ও যোজ্যতা ইলেকট্রন ভিন্ন কেন বুঝতে পেরেছেন।
নাইট্রোজেন এর যোজনী কত?
নাইট্রোজেনের যোজনী ৩ এবং যোজ্যতা ইলেকট্রন ৫।
কার্বনের যোজনী কত?
কার্বনের যোজনী হল ২।
সিলভার (Ag) এর যোজনী কত?
সিলভার (Ag) এর যোজনী ১।
জিংক (Zn) এর যোজনী কত?
জিংক (Zn) এর যোজনী ২।
লেড (Pb) এর যোজনী কত?
লেড (Pb) এর যোজনী ৪।
ক্রোমিয়াম এর যোজনী কত?
ক্রোমিয়াম এর যোজনী ২।
ফসফেট এর যোজনী কত?
ফসফেট এর যোজনী ৩।
কোবাল্ট এর যোজনী কত?
কোবাল্ট এর যোজনী ২।
মন্তব্য
আশাকরি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারেছেন যোজনী কাকে বলে, যোজনী কত
প্রকার ও বিভিন্ন মৌলের যোজনী কত,যোজনী ও যোজ্যতা ইলেকট্রনের মধ্যে
পার্থক্য,যোজনী ও জারণ সংখ্যার মধ্যে পার্থক্য রসায়নের এ সকল গুরুত্বপূর্ণ
টপিক।
মনোযোগ দিয়ে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ এবং শিক্ষার্থী
বন্ধুরা অবশ্যই সহপাঠীদের সাথে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো জানানোর জন্য অবশ্যই
আর্টিকেলটি শেয়ার করুন। এমন আরো তথ্য পেতে
www.twestinfo.com পেজে চোখ রাখুন।
টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।
comment url