রুই মাছের রক্ত সংবহন তন্ত্র,বৈজ্ঞানিক নাম,আইশ ও পটকার গঠন ও কাজ
পড়ালেখায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়
প্রিয় পাঠক, রুই মাছ আমাদের সকলের কাছে পরিচিত ও সুস্বাদু একটি মাছ। রুই মাছ
চিনা নেই এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে। আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ রুই মাছ
শুধু খাওয়া যায় এর জন্যই চিনে থাকে। কিন্তু পড়ালেখার জন্য রুই মাছ সম্পর্কে
নানান তথ্য আমাদেরকে জানতে হয়।
তাই আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে রুই মাছ সম্পর্কে যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর নিয়ে
এসেছি। আজকের আর্টিকেলে আপনারা রুই মাছ কোন পর্বের প্রাণী, রুই মাছের বৈজ্ঞানিক
নাম কি, রুই মাছের ইংরেজি নাম, রুই মাছের শ্বসনতন্ত্র, রুই মাছের রক্ত সংবহন
তন্ত্র, রুই মাছের আইশ কোন ধরনের, রুই মাছের বায়ুথলি বা পটকার গঠন ও কাজসহ আরো
অনেক তথ্য বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
সূচিপত্র:
আশা করি আজকের আর্টিকেল পড়ার পর রুই মাছ সম্পর্কে যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর আমাদের
শিক্ষার্থী বন্ধুরা পেয়ে যাবেন। চলুন তাহলে দেরি না করে রুই মাছ সম্পর্কে জানা
যাক।
রুই মাছ কোন পর্বের প্রাণী / রুই মাছের বৈশিষ্ট্য
রুই মাছ সম্পর্কে জানতে প্রথমেই আমাদের মনে প্রশ্ন আসবে রুই মাছ কোন পর্বের
প্রাণী বা রুই মাছের বৈশিষ্ট্য কি। রুই মাছ কর্ডাটা পর্বের প্রাণী। কর্ডাটা
পর্বের প্রাণীদের জীবন দশায় কখনো না কখনো নটোকর্ড থাকে, পৃষ্ঠীয় স্নায়ু রজ্জু
ও গলবিলীয় ফুলকা বন্ধ থাকে। রুই মাছ সাধারণত কার্প জাতীয় মাছ। কার্প জাতীয়
মাছের আকৃতি বড়-বর্ধনশীল হয়ে থাকে। আশা করি রুই মাছ কোন পর্বের প্রাণী তা
আপনারা জানতে পেরেছেন। চলুন তাহলে রুই মাছের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানা যাক।
- রুই মাছ কার্ব জাতীয় মাছ।
- রুই মাছের দেহ কান্ড ও লেজে স্লাইকোয়েড ধরনের আইশ রয়েছে
- রুই মাছ অনেকটা চ্যাপ্টা আকৃতি হয়।
- রুই মাছ সাধারণত মিঠা পানির মাছ।
- রুই মাছের অন্তঙ্কাল অস্থি দ্বারা তৈরি।
- রুই মাছের শ্বসন অঙ্গ বিহীন।
- রুই মাছের মাথা আইশ বিহীন।
- রুই মাছে দাঁতবিহীন চোয়াল রয়েছে।
- রুই মাছ সাধারণত ফুসফুসের মাধ্যমে শ্বাস গ্রহণ করে।
- রুই মাস জুলাই এবং আগস্ট মাসে প্রজনন ঘটায়।
- রুই মাছের প্রধান খাদ্য হিসেবে ভেজো শৈবাল এবং বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ খেয়ে থাকে।
রুই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম কি / রুই মাছের ইংরেজি নাম
রুই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম হল Labeo rohita। রুই মাছ পরোটা পর্বের প্রাণী।
এবং রুই মাছের উপ- পর্ব হল ভার্টিব্রাটা। রুই মাছের ইংরেজি নাম হল Rohu Carp। রুই
মাছ সাধারণত কাঠ জাতীয় মাছ হওয়ায় একে ইংরেজিতেও কার্প বলা হয়ে থাকে। তবে
বিভিন্ন দেশে রুই মাছের বিভিন্ন ধরনের নাম হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক ভাবে রুই মাছ
রোহু মাছ হিসাবে পরিচিত। তবে এরার নাম রয়েছে যেমন: রোহিতা, রোহিত, রাউ, গরমা,
নওসি,নলা ইত্যাদি।
রুই মাছের শ্বসনতন্ত্র
রুই মাছ সাধারণত ফুলকার মাধ্যমে শ্বসন কাজ সম্পন্ন করে। শ্বসন হলো যে
প্রক্রিয়ায় কোষ খাদ্য জারিত হয়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত করে এবং খাদ্যের
স্থিতিশক্তিকে গতিশক্তিরূপে পরিণত করে। রুই মাছের শ্বসনতন্ত্র হলো ফুলকা। রুই
মাছের চার জোড়া ফুলকা রয়েছে। এগুলো মাথার দুই পাশে কাকনে আবদ্ধ ও এর ভিতর
রক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।
কানকোর কিনারায় একটি পাতলা ঝিল্লি রয়েছে যার নাম ব্রাঙ্কিওস্টেগাল ঝিল্লি। এই
ঝিল্লি রুই মাছের মাথার অংকীয় দেশে থাকে। ঝিল্লি গুলো কতটি অস্থির দণ্ড বহন করে
। এই দণ্ড কানকোকে দেহের সাথে আটকে রাখে এবং ফুলকা বাহির থেকে বন্ধ করে। এভাবে
ফুলকা পানি আটকে রাখে এবং মাছকে শ্বসনে সাহায্য করে। আশা করি রুই মাছের
শ্বসনতন্ত্র সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
রুই মাছের রক্ত সংবহন তন্ত্র
রক্ত সংবহন তন্ত্র হলো রক্তবাহিকা সমৃদ্ধ এবং হৃদপিণ্ড দিয়ে নিয়ন্ত্রিত যে
প্রান্তের মাধ্যমে রক্ত দেহের বিভিন্ন অংশে সঞ্চালিত হয়। রুই মাছের রক্ত রক্তরস
ও রক্তকণিকা নিয়ে গঠিত হওয়ায় রুই মাছের রক্ত লাল রঙের। আবার রক্তকণিকা দুই
ধরনের হয়ে থাকে লোহিতরক্তকণিকা ও শ্বেতরক্ত কণিকা।
এই লোহিত কণিকা ডিম্বাকার ও নিউক্লিয়াসযুক্ত হয়ে থাকে।এবং সে তো কণিকাগুলো
দেখতে অ্যামিবার মত হয়। হৃদপিণ্ড, ধমনী, শিরা ও কৈশিক নালীর সমন্বয়ে রুই মাছের
রক্ত সংবহন তন্ত্র গঠিত। আশা করি রুই মাছের রক্ত সংবহন তন্ত্র সম্পর্কে আপনারা
জানতে পেরেছেন।
রুই মাছের হৃদপিন্ডের মাধ্যমে রক্ত সংবহন
আমরা জানি সংকোচন ও প্রসারণ এর মাধ্যমে হৃদৎপিণ্ড রক্ত পরিবহন করে। রুই মাছের
কপাটিকা সমূহের ফলের হৃদপিন্ডের প্রকোষ্ঠগুলোর মধ্যে রক্ত সংবহনের একমুখী দেখা
যায়। রুই মাছের হৃদপিন্ডে শুধুমাত্র কার্বন-ডাই-অক্সাইড সমৃদ্ধ রক্তবাহিত হয়
বলে রুই মাছের হৃদপিণ্ডকে ভেনাস হার্ট বলা হয়ে থাকে।রুই মাছের হৃদপিণ্ড থেকে
কার্বন-ডাই-অক্সাইড সমৃদ্ধ রক্ত প্রবাহ হয় এবং এই রক্ত ফুলকায় প্রেরিত হয়।
রক্ত প্রথমে সাইনাস ভেনোসাসে আছে সংকোচন ঘটে। পর্যায়ক্রমে
অ্যাট্রিয়াম,ভেন্টিকল,বাল্পাস আর্টারিওসাসে সংকুচিত হয়। হৃদপিন্ডের এই প্রতিবার
সংকোচন কে সিস্টোল বলে। সিস্টোল সম্পূর্ণ হলে হৃদপিণ্ড প্রসারিত হয়ে আগের
অবস্থায় ফিরে যায় এবং এই আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়া বা প্রসারণ প্রক্রিয়াকে
ডায়াস্টোল বলে।
রুই মাছের ফুলকা কয়টি / রুই মাছের ফুলকার গঠন
রুই মাছের ফুলকা চার জোড়া বা ১৬ টি। রুই মাছ এই ফুলকার সাহায্যে শ্বসন কাজ
সম্পন্ন করে। তাই ফুলকাকে রুই মাছের শ্বসন অঙ্গ বলা হয়। চলুন তাহলে রুই মাছের
ফুলকার গঠন সম্পর্কে জানা যাক।
ফুলকার গঠন: রুই মাছের প্রতিটি ফুলকা দেখতে সুতার মতো। এবং প্রতিটি ফুলকা পূর্ণ
ফুলকা বা হোলব্রাঙ্ক। প্রতিটি ফুলকা ২ টি সদ্যৃশ অংশ নিয়ে গঠিত হওয়ায় এদেরকে
পূর্ণ ফুলকা বলা হয়।
এবং প্রতিটি ফুলকার অর্ধেককে অর্ধ ফুলকা বলা হয়। রুই মাছের প্রত্যেক হেমিব্রাঙ্ক
বা অর্ধফুলকা এক সারি করে ফুলকা সুদৃশ বা ফুলকা ল্যামেলা বহন করে। প্রতিটি ফুলকা
ঘোরায় যুক্ত এবং শীর্ষের দিকে মুক্ত। প্রতিটি সদ্যৃশ এপিথেলিয়াম আবৃত সংখ্যক
অনুপ্রস্থ প্লেট বহন করে।এপিথেলিয়াম গুলো রক্ত জালিকা সমৃদ্ধ।
রুই মাছের ফুলকা যে অস্থির মধ্যে যুক্ত থাকে তাকে ফুলকা আর্চ বলে। প্রতিটি আর্চে
দুইটি করে ফুলকা সারি যুক্ত থাকে। আর্চের কিনারায় প্রসারিত হয়ে কাঁটাযুক্ত
পাতলা ফুলকা রেকার গঠন করে। উপরোক্ত ভাবে একটি রুই মাছের ফুলকা গঠন হয়ে থাকে।
আশা করি রুই মাছের ফুলকার গঠন সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
রুই মাছের ফুলকা আর্চ কতটি
রুই মাছের ফুলকার প্রকোষ্ঠ একজোড়া, এবং রুই মাছের ফুলকা আর পাঁচ জোড়া অর্থাৎ
দশটি।
রুই মাছের বায়ুথলির বা পটকার গঠন / রুই মাছের বায়ুথলির বা পটকার কাজ
রুই মাছের বায়ু থলি বা পটকার গঠন: রুই মাছের মেরুদন্ডের নিচে এবং
পৌষ্টিকনালির উপরে একটি পাতলা প্রাচীর বিশিষ্ট থলি রয়েছে যার নাম বায়ুথলি বা
পটকা। এই পটকা দেখতে সাদা চকচকে থলির মত। বায়ু থলি বা পটকায় বিভিন্ন ধরনের
গ্যাসে পরিপূর্ণ থাকে। যেমন:অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড।
বায়ু থলি বা পটকা সামনের দিক দিয়ে ছোট এবং পেছনে বড় প্রকোষ্ঠে বিভক্ত রয়েছে।
দুটি প্রকোষ্ঠের মধ্যে একই খাঁজ রয়েছে। সামনের প্রকোষ্ঠ একটি নল দিয়ে অন্যনালীর
সাথে যুক্ত যার নাম নিউম্যাটিক নালী। যা অন্তঃকরণের ওয়েবেরিয়ান আসিকল এর সাথে
যুক্ত। বায়ুথলির বাহিরে ঘন রক্ত জাল দিয়ে আবদ্ধ। এর প্রাচীর দুইটি স্তর নিয়ে
গঠিত।
বাইরের স্তরের নাম টিউনিকা এক্সটার্না যা যোজক টিসু দ্বারা গঠিত। ভেতরের স্তরের
নাম টিউনিকা ইন্টারনা যা মসৃণ পেশী ধারা নির্মিত। বায়ুথলির আন্তঃপ্রাচীরে
এপিথেলিয়াম সংলগ একটি লাল রঙের গ্যাস গ্রন্থি রয়েছে। এই গ্রন্থিতে ঘন অসংখ্য
কৈশিক নালী থাকে যা রেটিয়া মিরবিলিয়া নামে পরিচিত। সামনের প্রকোষ্ঠে যে গ্রন্থি
রয়েছে তা থেকে মিশ্রিত গ্যাসে বায়ুথলি পূর্ণ হয় এবং পিছনের প্রকোষ্ঠে অবস্থিত
গ্রন্থি গ্যাস শোষণ করে।
রুই মাছের বায়ুথলি বা পটকার কাজ: রুই মাছের বায়ুথলি বা পটকা বিভিন্ন কাজ
করে থাকে। বায়ুথলির কাজগুলো হলো:
- রুই মাছের বায়ুথলি প্রবণতা রক্ষাকারী অঙ্গ হিসেবে কাজ করে।
- বায়ুথলি শব্দ উৎপাদনে সাহায্য করে।
- অক্সিজেন সংগ্রহ করার জন্য বায়ুথলি ব্যবহৃত হয়।
- বায়ুথলির প্রাচীরে অবস্থিত কৈশিক নালী বায়ুথলিতে অতিরিক্ত গ্যাস সরবরাহ করে। এইভাবে রক্ত গ্যাস শোষণের মাধ্যমে মাছ তার আপেক্ষিক গুরুত্ব নিয়ন্ত্রণ করে।
- মাছ বায়ুথলির মাধ্যমে শব্দ গ্রহণ করতে পারে।
- বায়ুথলিতে থাকা ওয়েবেরিয়ান অসিকল এর মাধ্যমে অন্তঃকর্ণের সংযোগ থাকে ।যার ফলে শব্দ তরঙ্গ বায়ুথলি থেকে ওয়েবেরিয়ান অসিকল এর মাধ্যমে অন্তঃকর্ণে প্রবেশ করে।
- বায়ুথলি মাছের আপেক্ষিক গুরুত্ব নিয়ন্ত্রণ করতে পারে বলে মাছ গভীর পানিতে স্থির অবস্থায় থাকতে পারে।
একটি মাছ বায়ুথলির মাধ্যমে উপরোক্ত কাজগুলো সম্পূর্ণ করতে পারে। তাই বলা যায় যে
মাছের জন্য বায়ুথলি বা পটকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। আশা করি রুই মাছের
বায়ু থলি বা পটকার কাজ সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
রুই মাছের হৃদপিন্ডে কয়টি প্রকোষ্ঠ আছে / রুই মাছের হৃদপিন্ডের গঠন
রুই মাছের হৃদপিণ্ডে সাধারনত দুই প্রকোষ্ঠ রয়েছে।
রুই মাছের হৃদপিন্ডের গঠন:রুই মাছের ফুলকার পেছনে পেরিকার্ডিয়াল গহবর
রয়েছে। এই গহব্বরের হৃদপিন্ডের অবস্থান। পেরিকার্ডিয়াম নামক আবরণ দিয়ে
হৃদপিণ্ড আবৃত থাকে। রুই মাছের হৃৎপিণ্ড দুই প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট যথা: এট্রিয়াম বা
অলিন্দ ও ভেন্ট্রিকল বা নিলয়। তাছাড়া রুই মাছে আরেক ধরনের প্রকোষ্ঠ রয়েছে যার
নাম সাইনাস ভেনোসাস।
সাইনাস ভেনোসাস: এটি পাতলা প্রাচীরবিশিষ্ঠ প্রকোষ্ঠ যার হৃদপিণ্ডের ওপরে
অবস্থিত এবং সাইনো-আ্যাট্রিয়াল ছিদ্রপথে অ্যাট্রিয়ামের সাথে যুক্ত। এটি শিরা
থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড সমৃদ্ধ রক্ত অ্যাট্রিয়ামে প্রবেশ করায়।
ভেন্ট্রিকল: এটি হৃদপিন্ডের সর্বশেষ প্রকোষ্ঠ যা পেরিকার্ডিয়াল গহবরের
অঙ্কীয় দেশে অবস্থিত। এ প্রকোষ্টের প্রাচীর পুরু এবং মাংসাশাল। এবং সম্মুখে
বাল্বাস আর্টারিওসাসে উন্মুক্ত।
বাল্বাস আর্টারিওসাস: রুই মাছের হৃদপিন্ডে কোনাস আর্টারিওসাস নেই তাই তার
পরিবর্তে বাল্বাস আর্টারিওসাস নামক একটি গঠন দেখা যায় যা ডেন্টাল অ্যান্ডার্টার
ক্ষীত গৌড়াদেশীয় অংশ। এই অংশ হৃদপিণ্ড থেকে ভেন্ট্রাল অ্যাওর্টায় রক্ত চলাচল
নিয়ন্ত্রণ করে।
উপরোক্ত অংশগুলো নিয়ে রুই মাছের হৃদপিণ্ড গঠিত। আশা করি রুই মাছের হৃৎপিণ্ডের
গঠন সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন। আরো তথ্য পেতে নিচে লক্ষ্য করুন।
রুই মাছের হৃদপিন্ডকে ভেনাস হার্ট বলা হয় কেন
আমরা জানি সংকোচন ও প্রসারণ এর মাধ্যমে হৃদপিণ্ড রক্ত পরিবহন করে।রুই মাছের
হৃদপিন্ডে থাকা কপাটিকা গুলোর কারণে হৃদপিন্ডের প্রকোষ্ঠগুলোর মধ্যে রক্ত সংবহনে
একমুখী তা দেখা যায়। রুই মাছের হৃদপিন্ডের মধ্য দিয়ে কেবল কার্বন-ডাই-অক্সাইড
সমৃদ্ধ রক্তবাহিত হয় বলে রুই মাছের হৃদপিণ্ডকে ভেনাস হার্ড বা শিরায় হৃদপিণ্ড
বলা হয়ে থাকে।
রুই মাছের আইশ কোন ধরনের
মাছের দেহ তোকে যে সব পাতলা অস্থিময় গঠন দিয়ে আবৃত থাকে তাদেরকে আইশ বলা হয়।
এমনি রুই মাছের দেহ ত্বকে ও পাতলা অস্থিময় গঠন দিয়ে আবৃত। এ আইশ গুলো দেখতে
পাতলা ,গোলাকার ,অস্থিময় ,রূপালী বর্ণের হয়ে থাকে। যেসব আইশ চাক্তির মতো
গোলাকার এবং কিনারা রয়েছে তাদেরকে সাইক্লয়েড আইস বলা হয়। রুই মাছের আইশ
সাইক্লয়েড আইশ। এ আইশ চুন এবং কোলাজেন তন্তু দিয়ে গঠিত। রুই মাছের আইস হল
সাইক্লয়েড ধরনের।
রুই মাছের ক্লিভেজ কোন ধরনের
রুই মাছের ক্লিভেজ মেরোরাস্টিক ধরনের।
রুই মাছের পাখনা সমূহের নাম কি
মাছ যে অঙ্গের সাহায্যে চলাচল করে তাকে পাখনা বলে। রুই মাছের মোট পাঁচ ধরনের
পাখনা রয়েছে। পাখনা গুলো হলো:
পৃষ্ঠ পাখনা: রুই মাছের দেহ কাণ্ডের মাঝ বরাবর পেছনে বড় রম্বস আকারের
একটি পৃষ্ঠ পাখনা রয়েছে। এই পৃষ্ঠ পাখনাতে ১৪ থেকে ১৬ টি পাখনা রশ্নি রয়েছে।
বক্ষ পাখনা: কানকুর পেছনে দণ্ডকারের পার্শ্ব দিকে একজোড়া বক্ষ পাখনা আছে।
বক্ষ পাখনাতে ১৭ থেকে ১৮ টি পাখনা রশ্মি রয়েছে।
শ্রোণি পাখনা: বক্ষপাখনার পেছনে একজোড়া শ্রোনি পাখনা অবস্থিত। এই পাকনাতে
নয়টি করে পাখনা রশ্নি রয়েছে।
পায়ু পাখনা: পায়ুর পেছনের অংকীয় দেশ বরাবর মাঝে একটি পায়ু পাখনা
রয়েছে। পায়ু পাখনাতে ছয় থেকে সাতটি পাখনার রশ্নি রয়েছে।
পুচ্ছ পাখনা: লেজের পশ্চাত দিকে যে পাখনা তার নাম পুচ্ছ পাখনা। এই পাখনাতে
১৯ টি পাখনা রশ্নি রয়েছে। পুচ্ছ পাকনা মাছের চলাচল এবং দেহের ভারসাম্য রক্ষার
কাজ করে থাকে।
রুই মাছের প্রধান চলন অঙ্গ কোনটি
রুই মাছের প্রধান চলন অঙ্গ হলো পুচ্ছ পাখনা। এ পাখনাটি রুই মাছের লেজের পশ্চাদ
দিকে অবস্থিত। এতে প্রায় ১৯ টি পাখনা রশ্নি রয়েছে। এই পাখনা রুই মাছের চলাচলে
সাহায্য করে এবং দেহের ভারসাম্য রক্ষা করে। এটি রুই মাছের দেহের দুই পাশে এক সারী
ছোট গর্তে আইশের নিচে অবস্থিত। এবং একটি লম্বা খাদের সঙ্গে যুক্ত থাকে।
রুই মাছের প্রজনন ঋতু কোনটি
বেশি পানিতে রুই মাছের প্রজননে অংশ নেই। সেক্ষেত্রে বর্ষাকাল রুই মাছের প্রজননের
জন্য উত্তম ঋতু। বর্ষাকালের প্লাবিত নদীতে রুই মাছ প্রজননের জন্য অংশ নিয়ে থাকে
এবং একটি মা রুই মাছ প্রায় ২ থেকে ৩০ লাখ ডিম দেয়। ডিম দেওয়ার পরিমান মাছের
দৈর্ঘ্য ওজনের ওপর নির্ভর করে কিছুটা কম বেশি হতে পারে। একটি রুই মাছ দুই থেকে
তিন বছরে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যায়। তাই বলা হয়ে থাকে রুই মাছের প্রজনন ঋতু
বর্ষাকাল।
রুই মাছ কোন স্তরের খাবার খায়
রুই মাছ সাধারণত মধ্যস্তরের খাবার গ্রহণ করে। এরা জলের মধ্যস্তরে চলাচল করে। জলজ
উদ্ভিদ, আগাছা, তলদেশের পচা জৈব পদার্থ খেয়ে রুই মাছ জীবন যাপন করে। রুই মাছকে
শাকাশী প্রাণী বলা হয়। তাছাড়া চাষের জন্য রুই মাছকে খৈলের গুড়া, কুরা ইত্যাদি
খাওয়ানো হয়। ছোট অবস্থায় রুই মাছের প্রধান খাদ্য প্লাংকটন বা প্রাণী কণা।
১ পিস রুই মাছে কত ক্যালরি
রুই মাছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন এবং ভিটামিন রয়েছে। যা আমাদের সকলের জন্য অত্যন্ত
প্রয়োজনীয়। প্রতি এক পিস রুই মাছের ৯৭ ক্যালরি থাকে। অন্যান্য মাছের মতেও রুই
মাছের আরো প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে।
মন্তব্য
আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা রুই মাছ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানতে
পেরেছেন। আজকের আর্টিকেলে ছিল রুই মাছের রক্ত সংবহনতন্ত্র, রুই মাছের বৈজ্ঞানিক
নাম, রুই মাছের বায়ুথলি বা পটকার গঠন ও কাজ ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে। এমন আরো
অনেক তথ্য পেতে www.twestinfo.com পেজে
চোখ রাখুন এবং কমেন্টের মাধ্যমে আপনাদের মতামত শেয়ার করুন।
টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।
comment url