ইসলামে মাসিকের কতদিন পর সহবাস করা যায়

খেজুর খেলে কি বীর্য ঘন হয় আমাদের মধ্যে অনেকেরই মাসিক নিয়ে নানান ধরনের ভুল ধারণা ও মতামত থাকে। সে সকল ভুল ধারণার ওপর ভিত্তি করে আমাদের মনে নানান ধরনের প্রশ্ন ওঠে। যেমন: ইসলামে মাসিকের কতদিন পর সহবাস করা যায়, মাসিকের কত দিন পর সহবাস করা উচিত, মাসিকের সময় সহবাস করলে বাচ্চা হয় কিনা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে।
ইসলামে মাসিকের কতদিন পর সহবাস করা যায়
তাই আজকের আর্টিকেলে এ সকল বিষয় নিয়ে যাবতীয় আলোচনা করব। সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে আপনারা আরো যে বিষয়গুলো জানতে পারবেন তা হল মাসিকের কত দিন পর নামাজ পড়া যায়, মাসিকের কতদিন পর কোরআন পড়া যায়, মাসিকের সময় সহবাস করলে কি হয় ও মাসিকের কত দিন পর রোজা রাখা যায় ইত্যাদি বিষয়ে। তাই সকল প্রশ্নের উত্তর পেতে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সূচিপত্র: ইসলামে মাসিকের কতদিন পর সহবাস করা যায়

মাসিকের কত দিন পর সহবাস করা উচিত

প্রতিটি মেয়েরই নিয়মিত প্রত্যেক মাসে মাসিক বা পিরিয়ড হয়ে থাকে। তবে যারা বিবাহিত মহিলার রয়েছে তাদেরকে মাসিক বা পিরিয়ড হওয়ার পর কিছু নিয়ম মেনে সহবাস করতে হয়। এবং প্রতিটি পুরুষের এই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে যে স্ত্রীর মাসিক হয়েছে কিনা বা শেষ হয়েছে কিনা। অবশ্যই মাসিক হওয়ার পর নিয়ম মেনে এবং সকল দিক খেয়াল রেখে সহবাস করা উচিত।
অনেক পুরুষরাই মাসিকের কত দিন পর সহবাস করা উচিত সেই সম্পর্কে ধারণা রাখেনা। সাধারণত স্ত্রীর মাসিক হওয়া থেকে শুরু করে মাসিক শেষ হওয়া পর্যন্ত সহবাস করা নিষিদ্ধ। সহবাস করার পূর্বে স্ত্রীর পুরোপুরি মাসিক শেষ হয়েছে কিনা সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। মাসিক শেষ হওয়ার চার থেকে পাঁচ দিন পর সহবাস করা উত্তম। 
তাছাড়া যদি বাচ্চা নেওয়ার ইচ্ছে থাকে তাহলে এই সময়টা আপনার জন্য সঠিক সময় হবে। মাসিকের কত দিন পর সহবাস করা উচিত এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর হল মাসিক শেষ হওয়ার পর চার থেকে পাঁচ দিন পর সহবাস করায় উত্তম।

মাসিকের কত দিন পর নামায পড়া যায়

একজন নারী সর্বোচ্চ মাসিকের সময় হলো সাত দিন। কারো কারো আবার তিনদিন বা পাঁচ দিনেও মাসিক সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে যায়। যদি কোন সমস্যা না হয়ে থাকে তাহলে এই সময়ের মধ্যে এই মাসিক ঠিক হয়ে যাবে। ইসলামের রীতিনীতিতে মাসিক শেষ হওয়ার পর ফরজ গোসল সম্পূর্ণ করে নামাজ পড়তে হবে। 
সেক্ষেত্রে আপনি মাসিক শেষ হওয়ার এক থেকে দুই দিনের মধ্যেও ফরজ গোসল করতে পারেন। তবে আপনার মনে যদি আশংকা থাকেন যে মাসিক ঠিকমতো শেষ হয়নি তাহলে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে পারেন। ইসলামে বলা হয়েছে যে মাসিকের সময় নামাজ বা বিভিন্ন ইসলামিক কার্যকলাপ না করলেও কোন গুনাহ হয় না। আশাকরি মাসিকের কতদিন পর নামাজ পড়া যায় আপনারা বুঝতে পেরেছেন।

মাসিকের কত দিন পর কুরআন পড়া যায়

মাসিক ঠিক হওয়ার পর অবশ্যই আপনাদেরকে ফরজ গোসল করতে হবে। ফরজ গোসল না করা পর্যন্ত আপনি ইসলামিক কোন কার্যকলাপ করতে পারবেন না। তাই মাসিকের কতদিন পর কোরআন পড়া যায় এই সম্পর্কে বলব যে আপনার মাসিক হওয়ার পর দুই থেকে তিন দিন অপেক্ষা করে ফরজ গোসল করতে পারেন এবং তারপর কুরআন পড়তে পারেন। আশা করি মাসিকের কতদিন পর কুরআন পড়া যায় আপনারা বুঝতে পেরেছেন।

মাসিকের কত দিন পর রোজা রাখা যায়

মাসিক শেষ হওয়ার পর দুই থেকে তিন দিন অপেক্ষা করতে পারেন। এরপর ফরজ গোসল সম্পূর্ণ করে আপনি রোজা রাখতে পারবেন। তবে সকলের জন্য মাসিকের কত দিন পর রোজা রাখা যায় এই প্রশ্নের সঠিক জবাব দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ একেক জন মহিলার একেক সময় পর্যন্ত মাসিক হয়। 
কারো বেশি সময় ধরে হয় আবার কারো কম সময় নিয়েও হয়। তাই আপনাকে আপনার মাসিকের সময় অনুযায়ী শেষ হওয়ার পর দুই থেকে তিন দিন আশঙ্কা মুক্ত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে পারেন। তারপর ফরজ গোসল সম্পন্ন করে রোজা রাখতে পারেন। আশা করি মাসিকের কতদিন পর রোজা রাখা যায় সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

মাসিকের সময় সহবাস করলে বাচ্চা হয় কিনা

মাসিক সম্পর্কে ভুল ধারণার মধ্যে একটি ধারণা হলো মাসিকের সময় সহবাস করলে বাচ্চা হয় কিনা সেই সম্পর্কে। অনেক সময় একজন স্ত্রী মাসিক হওয়ার পর তার স্বামী সহবাস করার ইচ্ছুক জানায়। সেই সময় সহবাস করার কিছু ঝুঁকি থাকে বলে সহবাস করা সম্ভব হয় না। যদি আপনি প্রশ্ন করেন মাসিকের সময় সহবাস করলে বাচ্চা হয় কিনা তাহলে এই প্রশ্নের উত্তরে বলব বাচ্চা হওয়া সম্ভব তবে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকে।
যে সকল ক্ষেত্রে মাসিকের সময় সহবাস করলে বাচ্চা হয় তা হলো: যদি স্ত্রীর বয়স 20 থেকে 30 বছরের মতো হয় তাহলে বাচ্চা হওয়ার চান্স থাকে। আবার যদি ৩০ বছরের বেশি বয়স্ক কোনো স্ত্রী বা নারী হয় তাহলে তার বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা কমে যায়। তবে যাদের নিয়মিত মাসিক বা পিরিয়ড হয় তাদের ক্ষেত্রে মাসিকের সময় সহবাস করলে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। 
কারণ শুকরান ও একজন মেয়ের শরীরে পাঁচ দিনের মতো বেঁচে থাকতে পারে। আর এই পাঁচ দিনের মধ্যে ওভুলেশন হলে একটি মহিলার গর্ভধারণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পরিশেষে বলা যাবে যে মাসিকের সময় সহবাস করলে বাচ্চা হয় কিন্তু তার সকলের ক্ষেত্রে নয় বা সব সময় হয় না। তবে এ সকল ঝুঁকি থেকে রক্ষা পেতে অবশ্যই আপনাকে মাসিকের সময় সহবাস করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আশা করি মাসিকের সময় সহবাস করলে বাচ্চা হয় কিনা সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

মাসিকের সময় সহবাস করলে কি হয়

মাসিকের সময় সহবাস করলে নানান ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেনা মাসিকের সময় সহবাস করলে কি হয়। মাসিকের সময় সহবাস করলে একজন নারীর শরীরে নানান ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। মাঝে মাঝে এই সমস্যা প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়াতে পারে। চলুন তাহলে জানা যাক মাসিকের সময় সহবাস করলে কি হয়:

  • সাধারণত বেশিরভাগ মেয়েদের মাসিক বা পিরিয়ড হলে পেটে ব্যথা অনুভূত হয়। এই ব্যথা অসহ্য ব্যথা হয়ে থাকে। আর সেই সময়ই সহবাস করলে মেয়েদের পেটে বেশি ব্যথা অনুভূত হবে।
  • মাসিকের সময় মেয়েদের যৌন আকাঙ্ক্ষা কম থাকে। সেক্ষেত্রে একজন পুরুষ যদি জোর করে যৌন সঙ্গম বা সহবাস করতে চায় তাহলে তা ওই মেয়ের জন্য ক্ষতি টেনে আনবে।
  • মাসিকের সময় একজন মেয়ের ডিম্বক ফুলের মত ফুটে থাকে। তাই সে সময় যদি সহবাস করা হয় তাহলে স্প্যাম গিয়ে সরাসরি ডিম্বকের মধ্যে প্রবেশ করে। এতে করে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • অনেকেই আবার মাসিকের সময় সহবাস করতে গিয়ে কনডম ব্যবহার করে না। যার কারণে একজন মেয়ে সহজে এইডস রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যা একটি মরণব্যাধি রোগ।
তাছাড়া আরো অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে যা একজন নারীর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই অবশ্যই মাসিকের সময় সহবাস করা থেকে বিরত থাকাই উত্তম। আশা করি মাসিকের সময় সহবাস করলে কি হয় সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

ইসলামে মাসিকের কতদিন পর সহবাস করা যায়

ইসলামে মাসিকের সময় সহবাস করা নিয়ে বেশ কিছু হাদিস রয়েছে। সে সকল হাদিস সম্পর্কে জানলে আমরা বুঝতে পারবো মাসিকের কত দিন পর সহবাস করা যায় বা মাসিকের সময় সহবাস করার ইসলামিক মতামত। ইসলামের মাসিকের সময় সহবাস করা একদম নিষিদ্ধ।
সে ক্ষেত্রে আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন তাহলে ইসলামে মাসিকের কত দিন পর সহবাস করা যায়। ইসলামে বলা হয়েছে একজন মহিলার মাসিক শেষ হওয়ার পর সর্বোচ্চ ৯ থেকে ১০ দিন বা ৭ দিন অপেক্ষা করতে হবে। এবং মহিলাকে অবশ্যই মাসিকের পর ফরজ গোসল করতে হবে। ফরজ গোসল না করলে ঐ মহিলার সাথে সহবাস করা ইসলামে নিষিদ্ধ।
ইসলামে সহবাস নিয়ে বেশ কিছু হাদিস রয়েছে চলুন তাহলে সে হাদিসগুলো সম্পর্কে জানা যাক। ইসলামে উল্লেখ করা হয়েছে যে মাসিকের সময় স্ত্রী থেকে দূরে থাকতে হবে এবং পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের কাছে যাওয়া যাবে না। আরো বলা হয়েছে মাসিকের সময় সহবাস করলে কঠিন পাপ হবে।
হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন ভুলবশত কোন ব্যক্তি মাসিকের সময় স্ত্রীর সাথে সহবাস করলে তাকে কোন কাফফারা দিতে হবে না। কিন্তু জেনেশুনে এই কাজ করলে তাকে এক দীনার বা অর্থ দীনার কাফফারা দিতে হবে। এক দীনার পরিমাণ হলো ২৫.৪ গ্রাম স্বর্ণ। অথবা সমপরিমাণ মূল্যের অর্থ। আশা করি ইসলামে মাসিকের কতদিন পর সহবাস করা যায় এবং সহবাস নিয়ে ইসলামে কিছু হাদিস সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।

মন্তব্য

একজন মেয়ের মাসিক বা পিরিয়ড হলে অবশ্য সতর্কতার সাথে জীবন যাপন করতে হবে। এবং মাসিক সম্পর্কে সকল জ্ঞান রাখতে হবে। তাই আপনাদেরকে মাসিক সম্পর্কে সকল তথ্য দিতে আজকের আর্টিকেলে প্রকাশ করা হয়েছে ইসলামে মাসিকের কতদিন পর সহবাস করা যায়, মাসিকের কত দিন পর সহবাস করা উচিত, মাসিকের সময় সহবাস করলে কি হয় সহ আরো অনেক তথ্য। মাসিক সম্পর্কে আরো তথ্য পেতে www.twestinfo.com পেজে চোখ রাখুন। কমেন্টের মাধ্যমে আপনাদের মতামত প্রকাশ করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।

comment url