গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা ও ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার তালিকা

গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড খাওয়ার নিয়ম আজকের আর্টিকেলে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার, গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা, ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার তালিকা, ক্যালসিয়াম যুক্ত ফল ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হবে। 
গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা/ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার তালিকা
একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য যেমন ক্যালসিয়াম অত্যন্ত প্রয়োজনীয় তেমনি আমাদের সকলের জন্য পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই ক্যালসিয়াম সম্পর্কে সকল তথ্য পেতে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।
সূচিপত্র: গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা/ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার তালিকা

ভূমিকা

ক্যালসিয়ামের অভাবে আমাদের শরীরে নানান ধরনের রোগ দেখা দেয়। তাছাড়া গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম না খেলে নবাগত শিশুর নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর জন্য গর্ভাবস্থায় ডাক্তাররা একজন মাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট এবং ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। 
তাই আজকের আর্টিকেলে কোন মাছে ক্যালসিয়াম বেশি, ক্যালসিয়াম ঘাটতি লক্ষণ, ক্যালসিয়াম অভাবজনিত রোগ, গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা, ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার তালিকা ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার

আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ ক্যালসিয়ামের অভাবে ভোগে কারণ তারা জানে না ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার কি কি। অনেকেই মনে করে আমিষ খাবারের মধ্যেই একমাত্র ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। আসলে কিছু কিছু নিরামিষ খাবারের মধ্যেও প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারের কথা মনে হলে প্রথমে মাথায় আসবে সবুজ রঙের শাকসবজি।
বিভিন্ন ধরনের সবুজ রঙে শাকসবজি যেমন: পালং শাক, বাঁধাকপি, কলমি শাক ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণ এর ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। তারপর আবার মনে আসবে বিভিন্ন ধরনের ফল। ফলের মধ্যে রয়েছে এপ্রিকট,আনারস,কিউই,লিচু,পেয়ারা ইত্যাদি।
তাছাড়া দুগ্ধ জাতীয় খাবারের মধ্যেও ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। বুদ্ধ জাত খাবার গুলোর মধ্যে রয়েছে পনির ,দই, গরুর দুধ ইত্যাদি। দৈনন্দিন খাবার তালিকায় যদি আপনি এরকম খাবার রাখতে পারেন তাহলে আপনাকে ক্যালসিয়ামের অভাবে কখনোই রোগাক্রান্ত হতে হবে না।

ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার তালিকা

এতক্ষণ আমরা ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার সম্পর্কে জানতে পেরেছি এখন আমরা দেখব ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার তালিকা। এই খাবার তালিকা দেখলে আপনারা সহজেই মনে রাখতে পারবেন কোন কোন খাবার গুলোর মধ্যে ক্যালসিয়াম রয়েছে। চলুন তাহলে ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার তালিকা জানা যাক।

সবুজ শাকসবজি: বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণ এর ক্যালসিয়াম রয়েছে। শাক সবজির মধ্যে রয়েছে পালং শাক, কলমি শাক, বাঁধাকপি, লাউ শাক ইত্যাদি। এসকল সবুজ শাকসবজির মধ্যে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ অন্যান্য খাবারের চেয়ে বেশি।

ফল: আমরা সকলেই জানি ফলে প্রচুর পরিমাণ এর ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে। এ সকল খনিজ পদার্থের মধ্যে ক্যালসিয়াম রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফলে। ফলগুলো হল আঙ্গুর, কমলালেবু, পেঁপে, স্ট্রবেরি, পেয়ারা, আনারস ইত্যাদি।

ডাল: বিভিন্ন ধরনের ডালের মধ্যেও প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। মুগ ডাল, মসুর ডাল, ছোলার ডাল এ সকল ডালে যেমন ক্যালসিয়াম রয়েছে তেমনি আরো আয়রন জাতীয় উপাদান রয়েছে। যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় তাই প্রতিদিন খাবার তালিকায় ডাল রাখলে আপনাকে ক্যালসিয়ামের অভাবে কখনোই পড়তে হবে না।

দুগ্ধ জাত খাবার: দুধের মধ্যেও প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। তাই দুধ দিয়ে তৈরি এমন খাবার গুলোর মধ্যেও ক্যালসিয়াম রয়েছে। যেমন দই,পনির, চিজ, ছানা ইত্যাদি। তাই নিয়মিত দুধ এবং দুধ দিয়ে তৈরি এমন খাবার খাওয়ার কারণে আপনার শরীরের বিভিন্ন উপকার করবে এবং ক্যালসিয়ামের অভাব দূর করবে।

তৈল জাতীয় খাবার: বিভিন্ন ধরনের নিরামিষ খাবারেও রয়েছে ক্যালসিয়াম। এই নিরামিষ খাবার গুলোর মধ্যে সয়াবিন ও তোফু হলো অন্যতম। হে সকল তৈল জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে।

মাছ: সামুদ্রিক মাঝে ও প্রচুর পরিমাণ এর ক্যালসিয়াম রয়েছে সামুদ্রিক মাছগুলোর মধ্যে সালমান ও সারডিন মাছ ক্যালসিয়ামের উৎস হিসেবে ধরা হয়।এতে প্রচুর পরিমাণ এর ওমেগা থ্রি ফাটি এসিড রয়েছে। যা আমাদের মস্তিষ্ক ও হাড়ের জন্য খুব উপকারী।
উপরোক্ত খাবারগুলো আপনি দৈনন্দিন খাবার তালিকায় রাখলে আপনার কখনো ক্যালসিয়ামের অভাবে ভুগতে হবে না। আশা করি ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার তালিকা সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।

ক্যালসিয়াম যুক্ত ফল

ফলে ও প্রচুর পরিমাণ এর ক্যালসিয়াম থাকে। তাই নিয়মিত একটি বা দুইটি ফল খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম পেতে পারবে। ক্যালসিয়াম যুক্ত ফল হল: কমলালেবু, পেঁপে, কলা, এপ্রিকট, কিউই, আনারস, আপেল, স্ট্রবেরি, আঙ্গুর, ব্ল্যাকবেরি ইত্যাদি। 
এ সকল ফল খাওয়ার কারণে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হবে। তাছাড়া গর্ভাবস্থায় এই ফলগুলো আপনার বিশেষভাবে উপকার করবে। তাই গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন এই ফলগুলো খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

সাদা তিলে ক্যালসিয়াম

সাদা দিলে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। নিয়মিত সাদা তিল খাওয়ার কারণে ম্যাজিকের মত আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হবে। প্রতি 100 গ্রাম সাদা তিলের রয়েছে হাজার মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। তাই গর্ভাবস্থায় বা বৃদ্ধদের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করার জন্য নিয়মিত সাদা তিল খেতে পারেন।
এতে করে আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হওয়ার সাথে সাথে জিংক, ফসফরাসের ঘাটতিও পূরণ হবে। ফলে আপনার হার মজবুত করবে এবং নানান সমস্যা থেকে রক্ষা করবে। তাই বলা যেতে পারে সাদা তিলে ক্যালসিয়াম এর প্রধান উৎস।

কোন মাছে ক্যালসিয়াম বেশি

সব মাছের ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় না। তবে কিছু কিছু মাছের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে যেমন: রুই, কাতলা, শিং, ইলিশ, টুনা ইত্যাদি। তাছাড়া কিছু সামুদ্রিক মাছেও ক্যালসিয়াম রয়েছে যেমন: সেলমন ও সার্ডিন। বাচ্চাদের কিংবা প্রাপ্তবয়স্কদের নিয়মিত এ সকল মাছ খাওয়ালে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হবে এবং বাচ্চারা দ্রুত বড় হবে।

ক্যালসিয়ামের অভাবে কি হয়

শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব হলে নানান রকম সমস্যা বা লক্ষণ দেখা দিবে। সাধারণত ক্যালসিয়ামের অভাব মানবদেহে হাড়ের মধ্যে বেশি ক্ষত করে। তাছাড়া ক্যালসিয়ামের অভাবে আমাদের ত্বক সূক্ষ্ম ও রুক্ষ হয়ে যায়, নখ ভেঙে যায়, ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি হয়, তাছাড়া তোকে এলার্জি ও সোরিয়াসিসের মত সমস্যা দেখা যায়। 
ক্যালসিয়ামের অভাবে আমাদের মাংসপেশীতে ব্যথা অনুভূত হয়। ক্যালসিয়ামের অভাব হলে সবচেয়ে বেশি বড় যে লক্ষণগুলো দেখা যায় তা হল নখ ভেঙ্গে যাওয়া এবং খিচুনি হওয়া। এ লক্ষণ গুলো যদি আপনার মধ্যে দেখা যায় তাহলে অবশ্যই আপনাকে বুঝতে হবে আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব হয়েছে। আশা করি ক্যালসিয়ামের অভাবে কি হয় সেই সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।

ক্যালসিয়াম ঘাটতির লক্ষণ

শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব হলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে কিছু কিছু লক্ষণ আছে যা দেখলে বুঝতে হবে যে আপনার শরীরে প্রচুর ক্যালসিয়ামের অভাব রয়েছে। চলুন তাহলে ক্যালসিয়াম ঘাটতির লক্ষণ গুলো কি কি জানা যাক।
  • ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিলে প্রথমত আপনার ক্লান্তি অনুভব হতে পারে। রাতে ঘুম কম হবে এবং কাজে মনোযোগের অভাব দেখা দিবে।
  • তাছাড়া মাথাব্যথা মাথা ঘোরানো এ সকল লক্ষণও দেখা দিতে পারে।
  • ক্যালসিয়ামের অভাবে শরীরে দুর্বলতা অনুভব হয় এবং মাংসপেশীতে ব্যথা হয়।
  • অতিরিক্ত ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিলে খিচুনি হতে পারে।
  • বেশিক্ষণ হাঁটলে এবং নড়াচড়া করলে আপনার পায়ে এবং হাতে ব্যথা অনুভূত হবে।
  • ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাবে এবং তাকে এলার্জি ও সোরিয়াসিসের সমস্যা দেখা দিবে। তাছাড়া ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি হবে।
  • চুল মোটা হয়ে যাবে এবং হাতের নখ ও পায়ের নখ ভেঙ্গে যাবে।
  • ক্যালসিয়ামের অভাব বেশিরভাগ সময় হাড়ের মধ্যে বেশি ক্ষয় করে থাকে। তাই আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিলে হার ভেঙ্গে যাবে এবং অস্টিওপরেসিস রোগ শরীরে দেখা যাবে।
উপরোক্ত লক্ষণ গুলো আপনার শরীরে দেখা দিলে বুঝতে হবে ক্যালসিয়াম ঘাটতির লক্ষণ। অবশ্যই এই সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণের ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

ক্যালসিয়াম অভাব জনিত রোগ

ক্যালসিয়াম অভাবজনিত রোগ এরমধ্যে রিকেট রোগ সকলের পরিচিত। রিকেট রোগ ক্যালসিয়ামের অভাবে হয়ে থাকে এবং এই রোগ শিশুর হাড় দুর্বল করে তোলে। রিকেট রোগ সাধারণত শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। তাছাড়া ক্যালসিয়াম অভাবজনিত রোগের মধ্যে আরেকটি হলো অস্টিওপোরোসিস।
এ রোগটি সাধারণত বয়স্ক পুরুষ ও মহিলাদের বেশি হয়ে থাকে। পুরুষদের স্টেরয়েড ঔষধ সেবনের কারণে এবং মহিলাদের মেনোপজ হওয়ার পর অস্টিওপোরোসিস রোগ দেখা দেয়। উপরোক্ত রোগ গুলো সাধারণত ক্যালসিয়াম এর অভাবে হয়ে থাকে।

ক্যালসিয়ামের অভাব কেন হয়

একজন মানুষের শরীরে নানান কারণে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিতে পারে। ‌তা হতে পারে অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন বা অসাস্থ্যকর জীবন যাপন। বেশিরভাগ মানুষেরই খাবারের তালিকায় ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার এর পরিমাণ কম থাকার কারণে শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দেয়। আবার অনেক সময় উচ্চ মাত্রায় ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার কারণেও ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দেয়। মহিলাদের ক্ষেত্রে তা অন্যরকম হতে পারে।
আমাদের মধ্যে অনেক মহিলারা রয়েছে যারা ডায়েট করার কারণে পুষ্টিকর খাবার খেতে পারে না। তাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিতে পারে। তাছাড়া কিছু কিছু নারীদের হরমনের কারণে এবং জেনেটিক কারণে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দেয়। আশা করি ক্যালসিয়ামের অভাব কেন হয় আপনারা বুঝতে পেরেছেন।

গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় আমাদেরকে প্রচুর পরিমাণ এর ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ যুক্ত খাবার খেতে হয়। এ সকল ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ গুলোর মধ্যে ক্যালসিয়াম অন্যতম। ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার কারণে নবজাতক শিশুর হাড় মজবুত হয়। এবং শিশুর পর্যাপ্ত বিকাশে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম শিশুর দাঁত মজবুত করবে এবং স্নায়ু, হৃস্পন্দন, মাংস পেশির সঠিক গঠন করতে সাহায্য করবে।
তাই গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে প্রচুর। গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়ামের অভাবে গর্ভবতী মহিলার উচ্চ রক্তচাপ এর সমস্যা দেখা দিতে পারে। ক্যালসিয়ামের অভাব থাকলে শিশুর মস্তিষ্ক এবং শারীরিক গঠন সঠিক মত হবে না। শিশুর হাড় মজবুত হবে না।
তাই প্রতিটি গর্ভবতী মহিলাকে পর্যাপ্ত পরিমাণের ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট খেতে হবে তাছাড়া আপনারা চাইলে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার ও খেতে পারেন। তাই বলা যায় গর্ভাব অবস্থায় ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার উপকারিতা অনেক এবং আমাদেরকে অবশ্যই ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া আর কিছু পর্যাপ্ত নিয়ম রয়েছে। অবশ্যই আমাদেরকে নিয়ম মেনে ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট খেতে হবে। গর্ভবতী মহিলা কিংবা ক্যালসিয়ামের অভাবে ভুগছেন এমন কেউ যদি ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেতে চান তাহলে অবশ্যই খাওয়ার একঘন্টা আগে খেতে হবে। তাছাড়া আপনি চাইলে খাবার পরেও খেতে পারবেন কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে যে খাবার খাওয়ার সাথে সাথে আপনি ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেতে পারবেন না।
অবশ্যই আপনাকে খাবার পর এক থেকে দেড় ঘন্টা পর ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেতে হবে। তাছাড়া আপনি যদি কোন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের কথা অনুযায়ী আপনাকে ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট খেতে হবে। আশা করি ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনারা বুঝতে পেরেছেন।

ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট এর উপকারিতা

ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করার জন্য ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট বেশ ভূমিকা পালন করে। তবে ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট সকলের জন্য কার্যকর হয় না। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় মহিলাদের ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট দেওয়া হয়। তখন তাদের জন্য ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। 
তাছাড়া যারা প্রাথমিক অবস্থায় ক্যালসিয়ামের অভাবে ভুগছেন তারা অবশ্যই ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খেতে পারেন। ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। তা হল:
ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার কারণে আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব দূর হবে। এতে করে শরীরের তাড়াতাড়ি ক্যালসিয়াম এর ঘাটি পূরণ করে বিভিন্ন শারীরিক কার্যক্রম সঠিকভাবে চলতে সাহায্য করবে। তাছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম খাওয়ার ফলে রক্তচাপ ডায়াবেটিস ও কোলন ক্যান্সারের মতো সমস্যা থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। 
ক্যালসিয়াম এই পদার্থটি শরীর নিজে উৎপাদন করতে পারেনা। ফলে আমাদেরকে পর্যাপ্ত পরিমাণের ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খেতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় অবশ্যই আপনাকে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খেতে হবে। তবে গর্ভাবস্থায় ও বৃদ্ধ বয়সে আপনি ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট খেতে পারেন। 
এতে করে আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হবে এবং শারীরিক কার্যকলাপ সঠিকভাবে চলতে থাকবে। তাই বলা যেতে পারে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণের জন্য ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট এর উপকারিতা রয়েছে প্রচুর।

ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে যে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় নাকি? আমরা জানি ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরে হার কি মজবুত করে এবং প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কার্যকলাপ সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। তবে আপনি যদি মনে করেন ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার কারণে আপনি মোটা হয়ে যাবেন বা মোটা হওয়ার জন্য আপনি ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেতে চান তাহলে আপনার এটা ভুল ধারণা হবে।
মোটা হওয়ার জন্য ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট কোন উপকার করবে না। কারণ ক্যালসিয়াম মোটা করার জন্য কাজ করে না এটি আমাদের শরীরে হাড় মজবুত করতে এবং ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে। তাই মোটা হওয়ার জন্য আপনি ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট খেলেও কোন কাজ হবে না। আর যদি মনে করে থাকেন ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট খাওয়ার কারণে আপনি মোটা হয়ে যেতে পারেন তাহলে বলব ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট খেলে কেউ মোটা হয় না।

ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট বেশি খেলে কি হয়

ক্যালসিয়াম যেমন আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় তেমনি অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির দিক টেনে নিয়ে আসতে পারে। আমরা যারা অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেয়ে থাকি তাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে সমস্যা দেখা দিতে পারে। সে সমস্যা গুলোর মধ্যে কিছু প্রাথমিক সমস্যা হল পেটে ব্যথা হওয়া, অবসাদ ও বমি ভাব অনুভূত হওয়া। 
এরকম সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই আপনাকে ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। দ্বিতীয় তো আপনার যে সকল সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে তা হলো হার্টের বিভিন্ন রোগ এবং কিডনিতে পাথর হওয়া। পুরুষের ক্ষেত্রে একটি রোগ বেশি দেখা যায় তা হল প্রোটেস্ট ক্যান্সার।
অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম খাওয়ার কারণে এই সকল সমস্যা গুলো আপনার শরীরে দেখা দিতে পারে তাই অবশ্যই আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণের ক্যালসিয়াম সেবন করতে হবে। আশা করি ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট বেশি খেলে কি হয় তা বুঝতে পেরেছেন।

কোমরের ব্যথা কমানোর ক্যালসিয়াম

আমাদের মধ্যে অনেকেরই কোমরে প্রচুর ব্যথা অনুভূত হয়। তখন আমরা মনে করি কোমরের ব্যথা অনুভূত হওয়ার কারণ হলো ক্যালসিয়ামের অভাব। ক্যালসিয়ামের অভাবে ও কোমরে ব্যথা অনুভূত হতে পারে এর জন্য অবশ্যই আপনাকে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খেতে হবে। আপনি প্রতিদিন খাবারের মধ্যে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারগুলো বেশি রাখতে পারেন। নিয়মিত ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার কারণে কোমরের ব্যথা অনেকটাই কমিয়ে আসবে।

ক্যালসিয়াম বৃদ্ধির উপায়

ক্যালসিয়াম বৃদ্ধির উপায় গুলোর মধ্যে আপনি প্রথমে বাছাই করে নিতে পারেন ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খাওয়া। ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খাওয়ার কারণে আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হবে। আমরা জানি প্রতিদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রায় ৭০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়।
এই ৭০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পূরণ করতে আপনি বিভিন্ন সুষম খাবার এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন যেমন: দুধ, শাকসবজি, ফল, মাছ ইত্যাদি। এসকল খাবার খেলে আপনার শরীরে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম বৃদ্ধি পাবে। তাছাড়া যারা অতিরিক্ত ক্যালসিয়ামের অভাবে ভোগেন তারা ক্যালসিয়াম বৃদ্ধির উপায় হিসেবে ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট খেতে পারে। যা আপনার ক্যালসিয়াম বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।

পরিশেষের কথা

ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকলে নানান ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আমাদেরকে প্রতিদিন ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার তালিকা মেনে খাবার খেতে হবে। আশা করি গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন এবং কমেন্টের মাধ্যমে মতামত প্রকাশ করবেন। এমন আরও তথ্য পেতে www.twestinfo.com পেজে চোখ রাখুন। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।

comment url