জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম ও বিয়ের জন্য জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম

দরখাস্ত বা আবেদন পত্র লেখার নিয়ম প্রিয় পাঠক আপনি কি জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম,বাংলায় শিক্ষাগত যোগ্যতা লেখার নিয়ম, ইংরেজিতে জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম, চাকরির জন্য বাংলা জীবন বৃত্তান্ত ও বিয়ের জন্য জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে গুগলে সার্চ করেছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলের সম্পূর্ণ অংশে জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তাই সঠিক নিয়ম জানতে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।
জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম ও বিয়ের জন্য জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম

সূচিপত্র:

ভূমিকা

জীবন বৃত্তান্ত বা CV আমাদের অনেক প্রয়োজন পড়ে। কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য আবেদন করার সময় অবশ্যই জীবন বৃত্তান্ত বা CV সংযুক্ত করতে হয়। মোট কথা জীবন বৃত্তান্ত হচ্ছে আপনার শিক্ষাজীবনের বা পেশাগত জীবনের বিস্তারিত তথ্য সম্মিলিত নথি।যা আপনি যেকোনো চাকরিদাতার নিকট পাঠাতে পারেন। ভালো একটি চাকরির জন্য অবশ্যই আপনাকে সঠিক জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। তাই আজকের আর্টিকেলে এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম

আমাদের পেশাগত জীবনে জীবন বৃত্তান্ত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একজন চাকরি দাতা শুধুমাত্র আপনার জীবন বৃত্তান্ত দেখার মাধ্যমে আপনার চাকরির হবে কিনা তা মূল্যায়ন করবে। তাই আপনাকে সঠিক জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। সঠিক ও সুন্দর করে জীবন বৃত্তান্ত লেখার কারণে অল্প সময়ে নির্বাচক আপনার জীবন বৃত্তান্ত দেখে আকর্ষিত হবে এবং আপনাকে চাকরি দেওয়ার জন্য আগ্রহ দেখাবে। চলুন তাহলে সঠিক জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানা যাক।

১. ব্যক্তিগত তথ্য:

জীবন বৃত্তান্তের প্রথমে আপনাকে ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হবে। ব্যক্তিগত তথ্যগুলো নিম্নরূপ:
  • আপনার পুরো নাম
  • পিতার নাম
  • মাতার নাম
  • স্থায়ী ঠিকানা
  • বর্তমান ঠিকানা
  • জন্মতারিখ
  • এনআইডি নাম্বার
  • ধর্ম
  • জাতীয়তা
  • বৈবাহিক অবস্থা
  • রক্তের গ্রুপ
  • উচ্চতা
  • মোবাইল নাম্বর
  • ইমেইল ঠিকানা
২. পেশাগত যোগ্যতা

এই অংশে আপনাকে আপনার পেশাগত যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে। আপনি যদি পূর্বে কোন চাকরি করে থাকেন তাহলে ওই চাকরি সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশ করবেন। অবশ্যই প্রতিটি শব্দ সহজ ভাবে ব্যবহার করতে হবে এবং শ্রুতিমধুর করতে হবে।
  • পূর্বের চাকরির উপাধি
  • প্রতিষ্ঠানের নাম
  • চাকরির সময়কাল
  • চাকরিতে আপনার দায়িত্বসমূহ
৩. শিক্ষাগত যোগ্যতা

এখানে আপনি আপনার সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার সঠিক তথ্য লিপিবদ্ধ করবেন। অবশ্যই সদ্য সনদ প্রথমে এবং পর্যায়ক্রমে পরবর্তী সনদের তথ্য প্রকাশ করবেন।
  • স্কুল কলেজ ইউনিভারসিটির নাম
  • সকল প্রতিষ্ঠানে ঠিকানা
  • বিষয়
  • পরীক্ষার সন
  • ফলাফল বা পয়েন্ট
৪. ছবি

জীবন বৃত্তান্তে অবশ্যই আপনার ছবি সংযুক্ত করতে হবে। ছবিটি জীবন বৃত্তান্তের বাম পাশে সংযুক্ত করবেন। এবং খেয়াল রাখবেন যাতে ছবিটি পিন দিয়ে আটকানো না হয়। হাটহা জাতীয় পদার্থ দিয়ে ছবিটি আটকানোর চেষ্টা করবেন।
ছবিটি অবশ্যই আপনাকে সাম্প্রতিক সময়ে তোলা হতে হবে এবং পরিষ্কার ছবি হতে হবে যাতে করে আপনার চেহারা স্পষ্ট ভাবে বোঝা যায়। পরি পার্টি চেহারায় থাকতে হবে এবং পোশাক ফরমাল হতে হবে।

৫. কম্পিউটার ব্যবহারে দক্ষতা

বর্তমানের আধুনিক যুগে কম্পিউটারের দক্ষতা থাকা একটি বাধ্যতামূলক বিষয়। যেকোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে কম্পিউটার ব্যবহারে দক্ষতা থাকতে হবে। কম্পিউটার অনেক রকমের দক্ষতা রাখা যায় এর মধ্যে আপনি কোন বিষয়ে দক্ষতা রেখেছেন তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করবেন। তাছাড়া যদি কোন সনদ অর্জন করে থাকেন তাহলে অবশ্যই জীবন বৃত্তান্তের সাথে সংযুক্ত করবেন।

৬. ভাষাগত যোগ্যতা

ভাষাগত যোগ্যতা থাকা ও বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয়। তাই আপনাদের বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষার দক্ষতা থাকাও বেশ প্রয়োজন। এই অংশে আপনার কোন কোন ভাষায় দক্ষতা রয়েছে তা ব্যাখ্যা করতে হবে। এবং কোন সনদপত্র অর্জন করে থাকলে তার সংযুক্ত করতে হবে।

৭.অঙ্গীকারনামা

জীবন বৃত্তান্তে দেওয়া তথ্য এবং সংযুক্ত করা বিভিন্ন সনদপত্র অবশ্যই সঠিক এবং সত্য হতে হবে। এই অংশে আপনাকে এই অঙ্গীকারনামা দিতে হবে যে আপনার দেওয়া সকল তথ্য সত্য এবং সঠিক। অঙ্গীকারনামা দেওয়া হলে আপনাকে তারিখ এবং স্বাক্ষর দিয়ে তা প্রদান করতে হবে।

বাংলায় শিক্ষাগত যোগ্যতা লেখার নিয়ম

                                                      জীবন বৃত্তান্ত

নাম:

পিতার নাম:

মাতার নাম:

বর্তমান ঠিকানা:

স্থায়ী ঠিকানা:

জন্মতারিখ:

এনআইডি নাম্বার:

ধর্ম:

জাতীয়তা:

বৈবাহিক অবস্থা:

রক্তের গ্রুপ:

উচ্চতা:

মোবাইল নাম্বর:

ইমেইল ঠিকানা:

শিক্ষাগত যোগ্যাতা:

পরীক্ষার নাম

পাশের সাল

গ্রুপ

জিপিএ/সিজিপিএ

বোর্ড/বিশ্ববিদ্যালয়

এস এস সি

 

 

 

 

এইচ এস সি

 

 

 

 

স্নাতক

 

 

 

 

স্নাতকোত্তর

 

 

 

 

দক্ষতা:

ভাষাগত যোগ্যতা:

অঙ্গীকারনামা:                                                                                                                                         স্বাক্ষর/নাম      

ইংরেজিতে জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম

                                                            Curriculum vitea

Name:

Father name:

Mother name:

Present address:

Permanent address:

Date of birth:

Religion:

NID number:

Nationality:

Marital status:

Blood group:

Height:

Mobile number:

Email address:

Educational Qualification:

Exam

Year

Subject

G.P.A/C.G.P.A

Board

S.S.C

 

 

 

 

H.S.C

 

 

 

 

Honors

 

 

 

 

Masters

 

 

 

 

Others experience:

Signature/Name: 

চাকরির জন্য বাংলা জীবন বৃত্তান্ত

তারিখ:২৯/০২/২০২৪
বরাবর,
প্রধান কর্মকর্তা,
(প্রতিষ্ঠানের নাম)
(প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা)
বিষয়: সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য আবেদন।
জনাব,
সম্মানপূর্বক সবিনয় নিবেদন এই যে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানতে পারলাম যে আপনার প্রতিষ্ঠানে সহকারী শিক্ষক পদে লোক নিয়োগ করা হবে। আমি উক্ত পদের জন্য আগ্রহী প্রার্থী হিসেবে আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা সংযুক্ত করেছি।

                                                           জীবন বৃত্তান্ত

নাম:

পিতার নাম:

মাতার নাম:

বর্তমান ঠিকানা:

স্থায়ী ঠিকানা:

জন্মতারিখ:

এনআইডি নাম্বার:

ধর্ম:

জাতীয়তা:

বৈবাহিক অবস্থা:

রক্তের গ্রুপ:

উচ্চতা:

মোবাইল নাম্বর:

ইমেইল ঠিকানা:

শিক্ষাগত যোগ্যাতা:

পরীক্ষার নাম

পাশের সাল

গ্রুপ

জিপিএ/সিজিপিএ

বোর্ড/বিশ্ববিদ্যালয়

এস এস সি

 

 

 

 

এইচ এস সি

 

 

 

 

স্নাতক

 

 

 

 

স্নাতকোত্তর

 

 

 

 

দক্ষতা:

ভাষাগত যোগ্যতা:

অঙ্গীকারনামা:                                                                                                                                         স্বাক্ষর/নাম 

বিয়ের জন্য জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম

বর্তমান সময়ে বিয়ের জন্য জীবন বৃত্তান্ত করতে হয়। আধুনিকতার মাঝে এ অন্যরকম একটি বিষয়। বেশিরভাগ বিয়ের ক্ষেত্রে বায়োডাটা বা জীবন বৃত্তান্তের প্রয়োজন হয়। আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো বিয়ের জন্য জীবন বৃত্তান্ত কখনো করিনি। চাকরি বা অন্যান্য ক্ষেত্রে আমরা যেরকম জীবন বৃত্তান্ত তৈরি করি বিয়ের ক্ষেত্রে তা একটু ভিন্ন রকম। চলুন তাহলে বিয়ের জন্য জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম জানাযাক।

১. ব্যক্তিগত পরিচয় বা তথ্য

এখানে পাত্র কিংবা পাত্রীর উভয়ী ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হবে। ব্যক্তিগত তথ্যের মধ্যে আপনি নিম্নোক্ত বিষয়গুলো উল্লেখ করবেন।

নাম, জন্ম তারিখ, উচ্চতা, ওজন, গায়ের রং, রক্তের গ্রুপ, লিঙ্গ, বৈবাহিক অবস্থা, ধর্ম, বংশ, পেশা, বর্তমান ঠিকানা, স্থায়ী ঠিকানা, মাসিক ইনকাম, মোবাইল নম্বর, ইমেইল এড্রেস।

২. পারিবারিক তথ্য

এখানে পাত্র কিংবা পাত্রীর উভয়েরই পরিবারের সকল তথ্য উল্লেখ করতে হবে। এখানে আপনি নিম্নোক্ত বিষয়গুলো তুলে ধরবেন।
  • বাবার নাম, পেশা, বয়স, জাতীয়তা, মোবাইল নাম্বার।
  • মায়ের নাম, পেশা, বয়স, জাতীয়তা, মোবাইল নম্বর।
  • ভাইয়ের নাম, পেশা, বৈবাহিক অবস্থা।
  • বোনের নাম, পেশা, বৈবাহিক অবস্থা। (ভাই ও বোনের ক্ষেত্রে যদি একাধিক ভাই বোন থাকে তাহলে উক্ত নিয়মে প্রতিটি ভাই বোনে তথ্য প্রকাশ করতে হবে।)
  • চাচার নাম ,পেশা। ফুফুর নাম, পেশা।(একাধিক চাচা ও ফুপুর পরিচয় ক্রমানুসারে লিখতে হবে)
৩. শিক্ষাগত যোগ্যতা

এখানে আপনাকে প্রতিটি পরীক্ষার রেজাল্ট উল্লেখ করতে হবে। তার সাথে আপনি কত সালে কোন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং কোন স্কুল অথবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ হয়েছেন তা অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।

৪. অভিজ্ঞতা

এখানে আপনাকে আপনার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তথ্য দিতে হবে। আপনার যদি কোন অভিজ্ঞতা থাকে যেমন: শিক্ষকতা, কম্পিউটার, ড্রাইভিং, আর্টিস্ট, রান্নাবান্না ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য দিতে হবে।

৫. ব্যক্তিগত পছন্দ

এখানে আপনাকে আপনার কিছু পছন্দের বিষয় সম্পর্কে তথ্য উল্লেখ করতে হবে যেমন: সমাজসেবা, বই পড়া, কোরআন তেলাওয়াত করা ইত্যাদি।

৬. কেমন পাত্র বা পাত্রী পছন্দ

এখানে আপনাকে আপনার পছন্দের মত পাত্র ও পাত্রীর বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করতে হবে। এ সকল বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আপনি নিম্নোক্ত বিষয়গুলো তুলে ধরতে পারেন।ধর্ম, শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স, গায়ের রং, উচ্চতা, রক্তের গ্রুপ, ওজন, পেশা, আর্থিক অবস্থা ,বৈবাহিক অবস্থা ইত্যাদি।

উপরোক্ত নিয়ম মেনে যদি আপনি বিয়ের জন্য জীবন বৃত্তান্ত লেখেন তাহলে একটি আদর্শ জীবন বৃত্তান্ত মত হবে। আশা করি বিয়ের জন্য জীবন বৃত্তান্ত লেখা নিয়ম সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।

পরিশেষে কথা

জীবন বৃত্তান্ত আমাদের বিভিন্ন কাজে বেশ উপকারে আসে। তাই জীবন বৃত্তান্ত লেখার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে সকলেরই ধারণা রাখা দরকার। আজকের আর্টিকেলে জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম, বিয়ের জন্য জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম, চাকরির জন্য ইংরেজিতে জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

আশা করি আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে আসবে। জীবন বৃত্তান্ত লেখার নিয়ম সম্পর্কে সকলকে জানাতে অবশ্যই আর্টিকেলটি শেয়ার করুন। এরকম আরো তথ্য পেতে www.twestinfo.com পেজে চোখ রাখুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।

comment url