নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারন ও প্রতিকার বিস্তারিত জানুন
কোমর ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় হঠাৎ নাক দিয়ে রক্ত বের হলে আমরা অনেকেই ভয় পেয়ে যাই। চিন্তায় পড়ে যাই কি হল। আসলে নাক দিয়ে রক্ত পড়া কোনো রোগ নয় । আবার অনেক সময় রোগ হিসেবে ও ডাক্তারা বলে থাকে।স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা বা আঘাত পাওয়ার কারনে এমনটা হয়ে থাকে।
এই সমস্যার চিকিৎসা ও অনেক সহজ। ৭০% মানুষের এমন হতে পারে। এটি সাধারন সমস্যা
হলেও অনেক সময় জটিল রোগের লক্ষণও হতে পারে। এই বিষয়ে সকল তথ্য জানার জন্য
অবশ্যই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন।
পোস্টটির সূচিপত্র: নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারণ ও প্রতিকার
নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারন:
- নাকের ভিতর টিউমার হলে।
- নাকের হাড় ভেঙে গেলে।
- নাকে কোনো প্রকার অপারেশন করা হলে।
- টানা অনেক দিন সর্দি কাশি লেগে থাকলে।
- খেলাধুলা করার সময় বল বা ভারি জাতীয় কিছুর আঘাত পেলে।
- নাকে নোখ দিয়ে খোঁচালে ঘা সৃষ্টি হয় ফলে নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।
- নাকের মাঝখানের পর্দা ছিদ্র হয়ে গেলে।
- মহিলাদের মাসিকের সময় এবং গর্ভাবস্থায় নাক দিয়ে রক্ত বের হতে পারে।
- রক্তের বিভিন্ন রোগ থাকলেও নাক দিয়ে রক্ত বের হতে পারে যেমন হিমোফিলিয়া , থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া , প্লাস্টিক অ্যানিমিয়া ইত্যাদি।
- নাকের ভিতর এট্রফিক , রাইনোসপোরিডিওসিস , রায়নাইটিস নামে ইনফেকশন হলে।
- উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা থাকলেও নাক দিয়ে রক্ত পরে।
গরমে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারন
গ্রীষ্মকালের গরমে অতিরিক্ত ঘামের কারণে আমাদের শরীর থেকে বিভিন্ন তরল পদার্থ
ঘামের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে। এতে করে শরীরের বিভিন্ন কোষ শুকিয়ে যায়। ফলে আমাদের
শরীর ডিহাইড্রেট হয়ে যায়।
ডিহাইড্রেট হওয়ার কারণে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ঝিল্লি শুকিয়ে যায় তেমনি নাকের
শ্লেষ্মা ঝিল্লি শুকিয়ে গেলে নাক দিয়ে রক্তপাত হয়। গরমে এই ডিহাইড্রেট হওয়া
থেকে রক্ষা পেতে আমাদের প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। বিভিন্ন পানীয় খাবার
যেমন: ডাবের পানি, ফলের রস, স্যালাইন, লেবুর শরবত, আখের রস ইত্যাদি খেতে হবে।
সর্দির সাথে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারন
বাচ্চাদের বা বয়স্কদের অনেক সময় সর্দি লাগার কারণে নাক দিয়ে রক্ত বের হয়।
সর্দি লাগার কারণে আমরা নাক দিয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করি যার
কারণে নাকের শিরাতে বাতাসের চাপ লাগে এবং রক্ত পড়তে থাকে।
আবার জোরে হাচি দেওয়ার সময় ওনাকে শিরায় আঘাত লাগতে পারে এর জন্য রক্ত পড়ে।
অনেকেই নখ দিয়ে নাক পরিষ্কার করে থাকে এমনটা করার কারণে নখের আঘাত বা আঙ্গুলের
স্পর্শ নাকের নরম অংশে লাগে এবং নাকের মাংস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় না দিয়ে রক্ত
বের হতে পারে। তাই আমাদের সকলের উচিত সর্দি লাগলে নখ দিয়ে নাক পরিষ্কার করার
অভ্যাস পরিবর্তন করা।
নাক দিয়ে রক্ত পড়ার রোগের নামঃ
নাকের কাজ হলো শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণ করা। আমরা অনেকেই নাক দিয়ে রক্ত পড়লে ভয়
পেয়ে যাই ভাবি হয়তো অনেক বড় রোগ হতে পারে। আসলে এটা সঠিক নয়, নাক দিয়ে
রক্ত পড়া কোন রোগ নয়। বিজ্ঞানের ভাষায় নাক দিয়ে রক্ত পড়া কে বলা হয়
এপিস্ট্যাক্সিস। এটি কোন রোগ নয় কিন্তু রোগের লক্ষণ। তবে অতিরিক্ত নাক দিয়ে
রক্ত পড়া বড় কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে। নাক দিয়ে অতিরিক্ত রক্ত পড়লে অবশ্যই
ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন।
হঠাৎ নাক দিয়ে রক্ত পড়লে প্রাথমিক চিকিৎসাঃ
হঠাৎ কারো নাক দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হলে নাকে চাপ দিয়ে শুয়ে বা সামনে ঝুকিয়ে
বসিয়ে রাখুন। হাতের আঙ্গুল দিয়ে নাকের দুই ছিদ্র বন্ধ করে দিন এবং মুখ দিয়ে
শ্বাস নিতে বলুন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট একইভাবে নাকে চাপ দিয়ে রাখুন।
এরপরও যদি রক্ত পড়া বন্ধ না হয় তাহলে তার নাকের চারপাশে কাপড় দিয়ে বরফ
পেঁচিয়ে ধরে রাখুন এতে রক্ত পড়া তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া
নাকে অনবরত পানি দিতে পারেন। ২০ থেকে ৩০ মিনিট মতো সময় পার হয়ে গেলে যদি রক্ত
পড়া না কমে তাহলে অতি শীঘ্রই নিকটস্থ হাসপাতালের নাক ও গলা বিভাগের ডাক্তার
দেখাতে হবে।
নাক দিয়ে রক্ত পড়ার প্রতিকারঃ
- বাচ্চাদের এই রোগটি বেশি হতে পারে কারণ তাদের নাকে দুর্গন্ধযুক্ত সর্দি হয়। যার ফলে বাচ্চার মায়েরা শক্ত কাপড় বা কটন দিয়ে নাক পরিষ্কার করে ফলে তাদের নাকের নরম চামড়ায় আঘাত হয় এবং নাক দিয়ে রক্ত পড়ে। অবশ্যই বাচ্চাদের সর্দি হলে শীঘ্রই ডাক্তার দেখানো উচিত এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নাক পরিষ্কার করা ও ওষুধ সেবন করানো।
- খেলাধুলা করার সময় সাবধানতা অবলম্বন করা
- অনেক সময় আমাদের নাকের ভেতরটা শুকিয়ে যায় বা ময়লা জমে যায় যা আমরা পরিষ্কার করার জন্য নখ দিয়ে বা আঙ্গুল দিয়ে খোঁচাখুঁচি করি। এগুলো না করে নাকের ড্রপ বা ভ্যাসলিন জাতীয় পদার্থ দিয়ে নাক আর্দ্র রেখে পরিষ্কার করা উচিত।
- নাকের হাড়ভাঙ্গা থাকলে অবশ্যই সঠিক চিকিৎসা নিন নয়তো হঠাৎ করে নাক থেকে রক্ত পড়া শুরু হতে পারে।
- সর্দি কাশি থাকলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে যান।
- বয়স্ক যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তারা নিয়মিত রক্তচাপ মাপার নিয়ন্ত্রণ রাখুন ও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবন করুন।
- নাক দিয়ে অতিরিক্ত রক্ত পড়লে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করুন।
লেখকের মন্তব্য
আমরা সকলেই জানি স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। সুতরাং অতি ক্ষুদ্র সমস্যাতেও
আমাদের সতর্কতার সাথে চলতে হবে। পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই সকলের সাথে শেয়ার
করবেন এবং তাদেরও এই সমস্যার কথা জানার সুযোগ করে দিবেন। আরো সকল তথ্য
পেতে www.twestinfo.com পেইজে চোখ রাখুন।
টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।
comment url