কোলেস্টেরল কি,কোলেস্টেরল বাড়লে কি হয় ও কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা
ইউরিক এসিড কমানোর ঘরোয়া উপায়
প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলে কোলেস্টেরল কি, কোলেস্টেরল লক্ষণ, কোলেস্টেরল বাড়লে
কি হয়, কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা ও কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায়
সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। বর্তমান সময়ে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া একটি
নিত্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই আমরা অনেকেই কোলেস্টেরল সম্পর্কে জানতে গুগলে সার্চ করে থাকি। আজকের
আর্টিকেলে কোলেস্টেরল সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। তাই কোলেস্টেরল
সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।
সূচিপত্র: কোলেস্টেরল কি,কোলেস্টেরল বাড়লে কি হয় ও কোলেস্টেরল
কমানোর খাদ্য তালিকা
ভূমিকা
মানব দেহে কোলেস্টেরল একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। প্রতিটি মানুষের দেহে
কোলেস্টেরল রয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু মানুষের কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার
কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সেই সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার
জন্য আজকের আর্টিকেলে কোলেস্টেরল বাড়লে কি হয়, কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা,
কোন কোন মাছে কোলেস্টেরল রয়েছে, কোলেস্টেরল নরমাল রেঞ্জ, রক্তে কোলেস্টেরলের
স্বাভাবিক মাত্রা কত ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
কোলেস্টেরল কি
প্রথমে আমাদের জানতে হবে কোলেস্টেরল কি। কোলেস্টেরল হলো এক ধরনের চর্বি জাতীয়
স্টেরয়েড যা সেল মেমব্রেনে পাওয়া যায় এবং প্রাণীর রক্ত দিয়ে পরিবাহিত হয়।
কোলেস্টেরল স্তন্যপায়ী প্রাণীদের কোষ ঝিল্লির একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান।
কোলেস্টেরলের প্রধান কাজ হল মেমব্রেন এর মধ্য দিয়ে তরল পদার্থের ভেদ্যতা সচল
রাখা,স্টেরয়েড হরমোন এবং স্নেহ জাতীয় পদার্থের দ্রব্য ভিটামিন এ জৈবসংশ্লেষণ
ঘটানো।
আরো পড়ুন:ইউরিক এসিড কি?
কোলেস্টের অল কোষের মধ্যে কিছু জৈব রসায়নীকে যোগাযোগের কাজ করে। তাছাড়া
কোলেস্টের অল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবেও কাজ করে থাকে। কোলেস্টেরল মানবদেহের
একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। আশা করি কোলেস্টেরল কি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
কোলেস্টেরল লক্ষণ
অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের জন্য কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। আর কোলেস্টেরলের
মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরে বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কোলেস্টেরল এমন
একটি পদার্থ যা ভালো এবং খারাপ দুই ধরনের ব্যাধি শরীরে নিয়ে আসতে পারে।
আরো পড়ুন:ইউরিক এসিডের লক্ষণ
কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরে নানাবিধ লক্ষণ প্রকাশ পাবে। যে সকল লক্ষণ
দেখলে আপনারা বুঝতে পারবেন যে আপনার শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
চলুন তাহলে কোলেস্টেরল লক্ষণ সম্পর্কে জানা যাক।
- শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে চোখে হলুদ ভাব দেখা দিবে। আমরা জানি জন্ডিস হলেও চোখ হলুদ হয়ে যায়। কিন্তু সব সময় জন্ডিসের জন্যই শুধু চোখ হলুদ হয় না কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলেও চোখ হলুদ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন যদি আপনার চোখ হলুদ হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
- কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ঘাড় ও মাথার পেছনে ব্যথা অনুভূত হয়। এই ব্যথা সাধারণ ব্যথা হবে না। ঘাড় ও মাথার পেছনে ব্যথা অনুভূত হলে আপনার বমি বমি ভাব হতে পারে। তখন বুঝতে হবে আপনার শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
- কোলেস্টেরল রক্তনালী দিয়ে রক্ত পরিবহনে বেশ সহায়তা করে। কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে আপনার রক্তনালী বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফলে আপনার শরীরে ও মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে বাধাগ্রস্ত হবে। এরকম সমস্যা দেখা দিলে বুঝতে হবে আপনার শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
- কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে যেহেতু রক্তনালীতে রক্ত চলাচলে বাধা গ্রস্থ হয় তাই আপনার হার্টের ঠিকমতো রক্ত চলাচল করতে পারেনা ফলে অনিয়মিত হার্টবিট হয় এবং স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- আমাদের অনেক সময় পায়ে ঝিঝি ধরে থাকে। সাধারণত এরকম সমস্যা যদি আপনার নিয়মিত অনেকক্ষণ যাবত হয় তাহলে বুঝতে হবে যে আপনার শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
- কোলেস্টেরলের মাত্রায় বৃদ্ধি পেলে পায়ে যন্ত্রণা অনুভূত হবে। অল্প হেঁটে আপনি পায়ে শক্তি পাবেন না এবং মাঝে মাঝে পা অবশ হয়ে যাবে।
উচ্চ কোলেস্টেরল জমার কারণে শরীরে মেদের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। উপরোক্ত লক্ষণ গুলো
আপনার মধ্যে দেখতে পেলে বুঝতে হবে আপনার শরীরেও কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি
পেয়েছে। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে কোলেস্টেরল লক্ষণ দেখলেই আপনারা
সনাক্ত করতে পারবেন।
কোলেস্টেরল কেন হয়
আমরা অনেকেই জানিনা কোলেস্টেরল কেন হয়। কোলেস্টেরল হওয়ার পেছনে আপনার
অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন ও প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। কোলেস্টেরল বৃদ্ধি
পাওয়ার একটি কারণ হলো চর্বি। আমরা দৈনিক নানা ধরনের চর্বি জাতীয় খাবার খেয়ে
থাকি যার কারণে শরীরে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া আমাদের শরীরে এক
ধরনের ইনসুলিন নামক হরমোন রয়েছে।
আরো পড়ুন:বুকে ব্যাথা কেন হয়?
এই ইনসুলিন নামক হরমোন যকৃতের বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোলেস্টেরলের মাত্রা
বাড়ি তোলে। এরপর অগ্ন্যাশয় থেকে এই পদার্থ রক্তের মাধ্যমে মিশ্রিত করে এবং
রক্তের শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। তাই অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের জন্য আপনার
শরীরেও ইনসুলিন নামক হরমোন। এবং এই হরমোন বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে শরীরে কোলেস্টেরল
এর মাত্রা ও বৃদ্ধি পেতে পারে।
কোলেস্টেরল এর সংকেত
কোলেস্টেরল এর সংকেত হল C27H46O ।
কোলেস্টেরল বাড়লে কি হয়
শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কোলেস্টেরল আমাদের শরীরের রক্ত বিভিন্ন ভাবে পরিবহন করে থাকে। আর এই কোলেস্টেরলের
মাত্রা বৃদ্ধি পেলে আমাদের রক্তনালীতে রক্ত চলাচলে বাধাগ্রস্থ হয়। ফলে মস্তিষ্কে
এবং হার্টের ঠিকমত রক্ত চলাচল করতে পারেনা।
তাই রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে হার্টের সমস্যা দেখা
দিতে পারে ফলে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই আমাদের অবশ্যই কোলেস্টেরলের
মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।কোলেস্টেরল বাড়লে কি হয় এই প্রশ্নের উত্তরে বলা
যায় কোলেস্টেরল বাড়লে আমরা মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়তে পারি।
কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয়
যাদের কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পেয়েছে তারা প্রতিনিয়ত অনলাইন প্লাটফর্মে কোলেস্টেরল
বেড়ে গেলে করণীয় কি শেষ সম্পর্কে সার্চ করে থাকে। তাই আজকে আলোচনা করব
কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয় কি এবং আপনি কিভাবে কোলেস্টেরল কমাতে পারবেন সেই
সম্পর্কে। চলুন তাহলে দেরি না করে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয় কি সে সম্পর্কে
জানা যাক।
আরো পড়ুন:নাক দিয়ে রক্ত পড়ার প্রতিকার
কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে অবশ্যই আমাদের অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন থেকে বিরত থাকতে
হবে। দৈনন্দিন ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং সঠিক খাদ্য
তালিকায় তৈরি করতে হবে। যে সকল খাবারে চর্বি জাতীয় বা তৈলাক্ত পদার্থ রয়েছে সে
সকল খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। রান্নায় অল্প তেল ব্যবহার করতে হবে।
ধূমপান বা বিভিন্ন বদ অভ্যাস বাদ দিতে হবে। ভিটামিন যুক্ত সবজি খেতে হবে
এবং যে সকল খাবারে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে সে সকল খাবার না খেয়ে মৌসুমী ফল ও
শাক-সবজি খেতে হবে। গরুর মাংস খাসির মাংস হাঁসের মাংস অথবা দুধ জাতীয় খাবার বাদ
দিতে হবে। তাহলে আমরা কোলেস্টেরল থেকে সহজে মুক্তি পেতে পারবো।
কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা
কোলেস্টেরল কমাতে হলে অবশ্যই আমাদেরকে খাদ্য তালিকা সঠিক রাখতে হবে। সঠিক উপায়ে
খাবার না খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনাকে খাবারের
প্রতি আলাদা নজরদারি রাখতে হবে। চলুন তাহলে জানাজা কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য
তালিকা কি কি।খাদ্য তালিকায় প্রথমে আপনাকে রাখতে হবে পুষ্টি গুণ সমৃদ্ধ ও
ভিটামিন জাতীয় খাবার।
আরো পড়ুন:মানবদেহের তন্ত্রের তালিকা
যেমন: পালং শাক, পুঁই শাক, কচু শাক ,কলমি শাক ইত্যাদি। এ সকল শাকই রয়েছে প্রচুর
পরিমাণ এর ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ। এরপর আপনি খাদ্য
তালিকায় রাখতে পারেন বিভিন্ন ধরনের ফল। আমরা জানি ফলে প্রচুর পরিমাণ এর ভিটামিন
এবং ক্যালোরি রয়েছে যা আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে বেশ উপকার
করবে।
আরো পড়ুন:ব্রাজিল বাদামের উপকারিতা জানুন
ফলের মধ্যে আপনি খেতে পারেন তরমুজ, আপেল, কমলা, পেঁপে, কলা, পেয়ারা, ব্রাজিল
বাদাম, কিউই, খুবানি ইত্যাদি। এ সকল ফল খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে অতিরিক্ত
কোলেস্টেরল জমা থেকে মুক্ত করবে। তাছাড়া আপনি খেতে পারেন ডিম। ডিমের মধ্যে
প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। আশাকরি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর খাদ্য
তালিকা সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
কোলেস্টেরল যুক্ত খাবার তালিকা
আমাদের অজান্তেই আমরা প্রতিনিয়ত কোলেস্টেরল যুক্ত খাবার গুলো খেয়ে থাকি। এ সকল
খাবার আমরা খুব আনন্দের সাথে খাই। কিন্তু এই খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে কি
রকম প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে সেই সম্পর্কে আমরা কেউ চিন্তা করি না। তাই কোলেস্টেরল
কমাতে দ্বিতীয়ত্ব আপনাকে জানতে হবে কোলেস্টেরল যুক্ত খাবার তালিকা গুলো কি কি।
আরো পড়ুন:খুবানি বা এপ্রিকট ফলের উপকারিতা
অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবারে প্রচুর পরিমাণ এর কোলেস্টেরল রয়েছে। তাই আমাদেরকে
তেলযুক্ত খাবারগুলো প্রথমে বাদ দিতে হবে। কেক, কুকিজ, পেস্টি, ঘি, মাখন, জ্যাম,
পুরি, পিয়াজু ও পনির ইত্যাদি খাবারে প্রচুর পরিমাণ এর কোলেস্টেরল রয়েছে।
আরো পড়ুন:বিটরুট পাউডার এর উপকারিতা
তাছাড়াও গরুর মাংস হাঁসের মাংস খাসির মাংস ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণের চর্বি
থাকায় এগুলো খেলেও শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। তাই আমাদের কে প্রথমে
এই খাবারগুলো বাদ দিতে হবে। আশা করি কোলেস্টেরল যুক্ত খাবার তালিকা সম্পর্কে
আপনারা জানতে পেরেছেন।
কোন কোন মাছে কোলেস্টেরল আছে
মাছের মধ্যেও প্রচুর পরিমাণ এর কোলেস্টেরল রয়েছে। এই কোলেস্টেরল যুক্ত মাছগুলো
আমাদের অনেকের কাছেই বেশ প্রিয়। কোলেস্টেরল যুক্ত মাছগুলো হলো স্যালমন, টোনা,
সার্ডিন, পাংঙাস ইত্যাদি। যাদের শরীরে অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের বেড়ে গেছে তারা
উপরোক্ত মাছগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কোন কোন মাছের কোলেস্টেরল রয়েছে আশা
করি বুঝতে পেরেছেন।
কোলেস্টেরল হলে কি কি খাওয়া নিষেধ
কোলেস্টেরল হলে অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার গুলো খাওয়া নিষেধ। অতিরিক্ত
চর্বিযুক্ত খাবার গুলোর মধ্যে রয়েছে গরুর মাংস, খাসির মাংস ইত্যাদি। তাছাড়া
তেলে ভাজা খাবার খাওয়াও নিষেধ। যে সকল খাবার প্রক্রিয়াজাত করা হয় যেমন: কেক,
পেস্টি, পনির, মাখন, জ্যাম ইত্যাদি খাবার খেলেও কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
তাই বলা যায় কোলেস্টেরল হলে তৈলাক্ত খাবার ও চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া একেবারেই
নিষেধ।
কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায়
অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হলে আপনি ঘরোয়া উপায় এর মাধ্যমেও কোলেস্টেরলের মাত্রা
কমাতে পারবেন। ঘরে থাকা বিভিন্ন উপাদান দিয়ে সহজেই এ ক্ষতিকারক রোগ থেকে রক্ষা
পাওয়া যায়। চলুন তাহলে কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানা যাক।
ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমেও আপনি শরীর থেকে অতিরিক্ত
কোলেস্টেরল কমাতে পারবেন। ব্যায়ামের মধ্যে প্রতিদিন কিছু সময় হাটা, সাঁতার
কাটা, সাইকেলিং করতে পারেন। নিয়মিত এক থেকে দুই ঘন্টা ব্যায়াম করার মাধ্যমেও
আপনার শরীর থেকে কোলেস্টেরল কমে যেতে পারে।
গ্রিন টি: গ্রিন টিতে প্রচুর পরিমাণ থাকে। যা আমাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত
কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া গ্রিন টি খাওয়ার ফলে শরীরে কোন বাজে
পদার্থ উৎপন্ন হলে তাও নিষ্কাশন করা যায়। গ্রিন টি খাওয়ার ফলে আপনি হৃদরোগ ও
ক্যান্সার থেকেও মুক্তি পেতে পারেন।
রসুন: রসুলে প্রচুর পরিমাণ এর অ্যামাইনো এসিড ভিটামিন খনিজ পদার্থ রয়েছে।
যা আমাদের শরীর থেকে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে এবং উচ্চ রক্তচাপ সমস্যা থেকেও
রক্ষা করে। ঔষধি গুনাগুন সম্পূর্ণ এই খাবার আপনি সহজেই বাসায় পেয়ে যাবেন।
মেথি: মেথি তে প্রচুর পরিমাণ এর ঔষধিগুণ রয়েছে। নিয়মিত মেথি ভেজানো এক
গ্লাস পানি খাওয়ার ফলে শরীরের বিষাক্ত রোগ জীবাণু মরে যায়। তাছাড়া প্রতিদিন
কিছুটা মেথি চিবিয়ে খেলে শরীর থেকে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল বা চর্বির মাত্রা কমে
যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মেথি বেশ কার্যকর হিসেবে কাজ করে।
হলুদ: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে হলুদ আমাদের শরীর থেকে বজ্র
পদার্থ নিষ্কাশনে সাহায্য করে। তাই আপনি প্রতিদিন হলুদের সাথে দুধ দিয়ে খেতে
পারেন। এতে করে আপনার রক্তনালী পরিষ্কার হবে এবং কোলেস্টেরল কমে যাবে।
আমলকি: আমলকিতে প্রচুর পরিমাণ এর ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে। যা
বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে আমাদের কে রক্ষা করে। তাই প্রতিদিন একটি কিংবা দুইটি
আমলকি যদি চিবিয়ে খান তাহলে আপনার শরীরের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যাবে।
তাছাড়া আমলকি হার্টের সমস্যা থেকেও রক্ষা করে।
উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে আপনি ঘরোয়া উপায় কোলেস্টেরল থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
ঘরোয়া উপায় চিকিৎসা করার মাধ্যমে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে না। আশা করি
কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
কোলেস্টেরল কমানোর ব্যায়াম
কোলেস্টেরল কমানোর ব্যায়ামগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কার্যকরী ব্যায়াম হল হাটা।
প্রতিদিন কিছুটা সময় করে যদি আপনি হাটেন তাহলে শরীরের বিভিন্ন রক্তনালী গুলো
রক্ত চলাচল সচল হয়। হাঁটার মাধ্যমে শরীরে বিভিন্ন উপাদান তৈরি হয় এবং
কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এরপর আপনি কোলেস্টেরল কমানোর ব্যায়াম হিসেবে
সাইক্লিং করতে পারেন।
সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন কিছুটা সময় করে সাইক্লিং করলে শরীরের বিভিন্ন মাংস
পেশীগুলোর সচল হয়। হলে সহজেই শরীরে রক্ত চলাচল করতে পারে এবং কোলেস্টেরল জমার
কোন ঝুঁকি থাকে না। তাই আপনি কোলেস্টেরল কমানোর ব্যায়াম হিসেবে হাটা ও সাইক্লিং
দুইটি জিনিস করতে পারে। নিয়মিত বেয়াম করার মাধ্যমে সহজে আপনি এই রোগ থেকে
মুক্তি পেতে পারবেন।
কোলেস্টেরল নরমাল রেঞ্জ
কোলেস্টেরল নরমাল রেঞ্জ এর বেশি যদি বেড়ে যায় তাহলে শরীরে নানাবিধ সমস্যা দেখা
দিতে পারে। কোলেস্টেরল রেঞ্জ জুডি ১৯০ মিলিগ্রাম/ডি এল এর বেশি হয় তাহলে হৃদ রোগ
জাতীয় সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। কোলেস্টেরলে সর্বনিম্ন মাত্রা এবং স্বাভাবিক
মাত্রা হিসেবে ১৫০ মিলিগ্রাম/ডিএল ধরা হয়। তবে ২৫০ মিলিগ্রাম/বিএল হলো সর্বোচ্চ
মাত্রা যা অতিক্রম করলে একজন মানুষ মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
রক্তে কোলেস্টেরলের স্বাভাবিক মাত্রা কত
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা ২০০ এর কম ধরা হয়। ২০০ বেশি হলে অবশ্যই আপনাকে সতর্ক
হতে হবে। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ডায়াবেটিস জাতীয় রোগ দেখা দিতে
পারে। ডাক্তারদের মধ্যে রক্তে ২৪০ মিলিগ্রাম/ডিএল হলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন
করতে হবে।
কোলেস্টেরল কত থাকা উচিত
সুস্থ ভাবে জীবন যাপন করার জন্য কোলেস্টেরল এর মাত্রা অবশ্যই কম রাখতে হবে। সে
ক্ষেত্রে স্বাভাবিক কোলেস্টেরলের মাত্রা ১০০ এর মতো হতে হবে। ১০০ মিলিগ্রাম/ডিএল
হলে একজন মানুষের শরীরে স্বাভাবিক কোলেস্টেরল থাকে। সুতরাং বলা যায় যে
কোলেস্টেরল ১০০ মিলিগ্রাম/ডিএল হলে স্বাভাবিক অবস্থা বলা যায়।
পরিশেষে কথা
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়। অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের
জন্য কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায় এবং কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে নানান ধরনের সমস্যা দেখা
দেয়। আশা করি কোলেস্টেরল কি,কোলেস্টেরল বাড়লে কি হয়, কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য
তালিকা,কোলেস্টেরল নরমাল রেঞ্জ,রক্তে কোলেস্টেরলের স্বাভাবিক মাত্রা কত ও
কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।আরো তথ্য পেতে
www.twestinfo.com
পেজে চোখ রাখুন।
টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।
comment url