ইউরিক এসিডে নিষিদ্ধ খাবার ও ইউরিক এসিড কমানোর ঘরোয়া উপায়

মানবদেহের তন্ত্রের তালিকা প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলে ইউরিক এসিডে নিষিদ্ধ খাবার, ইউরিক এসিডের লক্ষণ, ইউরিক এসিডের নরমাল রেঞ্জ, ইউরিক এসিড কমানোর ঘরোয়া উপায় ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করব। ইউরিক এসিড যদিও আমাদের সকলের পরিচিত নয়।
ইউরিক এসিডে নিষিদ্ধ খাবার ও ইউরিক এসিড কমানোর ঘরোয়া উপায়

তবুও এই রোগটি প্রায় সকল বয়সের মানুষেরই হতে পারে। তাই ইউরিক এসিড সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।
সূচিপত্র: ইউরিক এসিডে নিষিদ্ধ খাবার ও ইউরিক এসিড কমানোর ঘরোয়া উপায়

ভূমিকা

বর্তমান সময়ে ইউরিক এসিড রোগ সকলেরই হয়ে থাকে ‌‌। এই রোগ সাধারণত দৈনন্দিন অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের জন্য হয়ে থাকে। সকল বয়সের মানুষেরই এই রোগ হয় তবে এর চিকিৎসাও বেশ সহজ। তাই আপনারা যারা ইউরিক এসিড সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তারা এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।
এই আর্টিকেলে ইউরিক এসিডের ডায়েট চার্ট, ইউরিক এসিডে নিষিদ্ধ খাবার, ইউরিক এসিড কমানোর ঘরোয়া উপায়, ইউরিক এসিডের টেস্ট খরচ, ইউরিক এসিড কেন হয় ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হবে। আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা উপকৃত হবেন।

ইউরিক এসিড কি?

আমরা যারা ইউরিক এসিড সম্পর্কে পরিচিত নই তাদের মনে প্রশ্ন উঠবে যে ইউরিক এসিড কি? ইউরিক এসিড হলো রক্তে এক ধরনের রোগ। রক্তে অতিরিক্ত বজ্র পদার্থ বেড়ে গেলে এই রোগ দেখা যায়। ইউরিক এসিড শরীরের ভেতর প্রক্রিয়াকরণ করে এবং পিউরিন নামের রাসায়নিক পদার্থগুলোকে ভেঙে দিয়ে রক্তে দ্রবীভূত হয়। 
এরপর কিডনির মধ্য দিয়ে প্রস্রাবের সাথে মিশে যায় এবং শরীর থেকে বের হয়ে যায়। যদি কোন কারনে ইউরিক এসিড শরীর থেকে বের না হতে পারে তাহলে শরীরে এর ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গগুলোর ক্ষতি করতে থাকে। ইউরিক এসিড সাধারণত মানব দেহের ক্ষারের জয়েন্টে দেখা দেয়। ইউরিক এসিড বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে শরীরে বিভিন্ন হারে ব্যথা অনুভূত হয়।

ইউরিক এসিডে নিষিদ্ধ খাবার

ইউরিক এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে অবশ্যই আপনাকে খাবারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই রোগে আক্রান্ত হলে আপনি সকল খাবার খেতে পারবেন না। ইউরিক এসিডে আক্রান্ত হলে একেবারেই যে সকল খাবার নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে তা হল কলিজা, মগজ, গরুরমাংস, খাসির মাংস ইত্যাদি। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
আর আপনার যদি মাংস পছন্দ হয় বা আপনি খেতে চান তাহলে চর্বি ছাড়া মাংস অল্প পরিমানে খেতে হবে। মাছের মধ্যে আপনাকে সামুদ্রিক মাছগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। বিশেষ করে বলা হয়ে থাকে শক্ত খোসাযুক্ত মাছ খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। আমিষ খাবারের মধ্যে আপনার ডাল একেবারেই খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। 
আর শাক সবজির মধ্যে মটরশুঁটির, সিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি ইত্যাদি জাতীয় খাবার এবং পালং শাক, পুঁইশাক, ফুলকপি, ব্রকলি খাওয়া বন্ধ করতে হবে। মিষ্টি জাতীয় খাবারের মধ্যে আপনি মধু ও চিনি ও চিনি যুক্ত খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে আপনাকে মাশরুম খাওয়া বন্ধ করতে হবে। এই সকল খাবার যদি আপনি খাওয়ার নিয়ন্ত্রণে করতে পারেন তাহলে সহজেই ইউরিক এসিডের মত মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা পেতে পারবেন।

ইউরিক এসিডের ডায়েট চার্ট

অনেকেই আবার ইউরিক এসিডের মত রোগ থেকে মুক্তি পেতে ডায়েট চার্ট খুঁজে বেড়ায়। তাদের জন্য ইউরিক এসিডের ডায়েট চার্ট সম্পর্কে আর্টিকেলে প্রকাশ করা হলো। ইতোমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি ইউরিক এসিডের নিষিদ্ধ খাবার গুলো কি কি । চলুন তাহলে জানাযাক ইউরিক এসিডের ডায়েট চার্ট সম্পর্কে।

ডায়েট করার পূর্বে আপনাকে জানতে হবে আপনি কি কি খেতে পারবেন। ইউরিক এসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে আপনাকে বিশেষ কিছু খাওয়ার প্রয়োজন নেই। নিয়মিত যদি কিছু খাবার সময়মতো খেতে পারেন তাহলে সহজে ইউরিক এসিড থেকে রক্ষা পেতে পারেন। ইউরিক এসিডে আক্রান্ত হলে আপনাকে প্রথমে সাদা ভাত খাওয়া বন্ধ করতে হবে। 
এর পরিবর্তে আপনি লাল চালের ভাত কিংবা রুটি খেতে পারেন। সবজির মধ্যে আপনি আলু, টমেটো খেতে পারেন। টমেটোতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম জাতীয় পদার্থ ইউরিক এসিড কমাতে বেশ সাহায্য করে। প্রতিদিন দুধ এবং দুধ জাতীয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। দুধ আমাদের শরীরের রক্তকে পরিষ্কার করে এবং ইউরিক এসিড কমাতে সাহায্য করে। 

এরপর আপনি লেবু ও কমলা খেতে পারেন। লেবু ও কমলা তে থাকা ভিটামিন সি রক্তকে পরিষ্কার করে এবং ইউরিক এসিডের মাত্রা কমায়। এ সকল বিষয় খেয়াল রাখলে আপনি সহজে ইউরিক এসিডের মত সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারেন। আশা করি ইউরিক এসিডের ডায়েট চার্ট সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।

ইউরিক এসিডের লক্ষণ

আপনার শরীরে যদি ইউরিক এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তাহলে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তবে সকলের ক্ষেত্রে এই লক্ষণগুলো দেখা নাও দিতে পারে। যখন শরীরে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বেড়ে যায় তখন এর উপসর্গ আপনার শরীরে দেখা দিতে পারে। 

তবে অতিরিক্ত ইউরিক এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে আপনার কিডনিতে পাথরের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। যা একসময় কিডনি বিকলের প্রধান কারণ হতে পারে। চলুন তাহলে ইউরিক এসিডের লক্ষণ গুলো জানা যায়।
  • শরীরের বিভিন্ন জয়েন্ট ফুলে যাবে এবং ব্যথা অনুভূত হবে।
  • জয়েন্ট গুলোর আশেপাশের চামড়ার বিবর্ণতা দেখা দিবে।
  • কিডনিতে সমস্যা হলে পিঠের দুই পাশে ব্যথা অনুভূত হবে।
  • ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে।
  • বমি বমি ভাব অনুভূত হবে।
  • প্রস্রাব ঘন হয়ে যাবে এবং প্রস্রাবের সাথে রক্ত বা গন্ধ হতে পারে।
উপরোক্ত লক্ষণ গুলো দেখা দিলে অবশ্যই আপনাকে বুঝতে হবে আপনার শরীরে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউরিক এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে দ্রুত আপনাকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। যদি ইউরিক এসিডের পরিমাণ কম থাকা অবস্থায় আপনি বুঝতে পারেন তাহলে ইউরিক এসিড কমানোর ঘরোয়া উপায় মানতে করতে পারেন।

ইউরিক এসিড কমানোর উপায়

আপনি চাইলে অতি সহজে ইউরিক এসিডের মাত্রা কমাতে পারবেন। এই মাত্রা কমানোর জন্য আপনাকে প্রথমত দৈনন্দিন জীবনের কিছু নিয়ম পরিবর্তন করতে হবে। ইউরিক এসিড কমানোর প্রথম উপায় হল ওজন ঠিক রাখা। আমরা অনেকেই অতিরিক্ত ওজনের মতো সমস্যায় ভুগি যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন কার্যকলাপে প্রায় বাধা সৃষ্টি করে।
অতিরিক্ত ওজন থাকার কারণে আমাদের কিডনির কর্মক্ষতায় বাধা হয়। সে ক্ষেত্রে ইউরিক এসিড ফিল্টার করার জন্য নানারকম অসুবিধা দেখা দেয় এবং এক পর্যায়ে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই আমাদেরকে প্রথমে ওজন কমাতে হবে। এরপর আপনি ইউরিক এসিড কমানোর জন্য বেশি করে পানি পান করতে পারেন।

পানি পান করার কারণে আমাদের কিডনি সুস্থ থাকে এবং কিডনির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে রক্ত থেকে ইউরিক এসিড পরিস্রাবণ হয়ে শরীর থেকে নিষ্কাশিত হয়। তাই আমাদেরকে প্রচুর পরিমাণে তরল পানি পান করতে হবে। এরপর আপনাকে ইউরিক এসিড এ নিষিদ্ধ খাবার গুলো মেনে চলতে হবে।

 ইউরিক এসিডে আক্রান্ত হলে যে সকল খাবার খাওয়া নিষেধ তা থেকে বিরত থাকতে হবে। সাধারণত বলা হয়ে থাকে উচ্চ পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে ইউরিক এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই আমাদেরকে কম পিউরিন খাবার খেতে হবে। আশা করি ইউরিক এসিড কমানোর উপায় সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।

ইউরিক এসিডের ব্যায়াম

আপনার যদি ইউরিক এসিডের পরিমাণ একেবারেই না কমে তাহলে আপনি ইউরিক এসিডের ব্যায়াম করার মাধ্যমে এর পরিমাণ কমাতে পারেন। যদিও এটি আমাদের শারীরিক গত কোন সমস্যা নয় কারণ আমাদের অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের জন্যই একসময় ইউরিক এসিডের মত রোগ দেখা দেয় তাই প্রথমেই আমাদেরকে জীবনযাপনের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সেজন্য আপনি বাসায় বসে ব্যায়াম করতে পারেন। চলুন তাহলে ইউরিক এসিডের ব্যায়াম সম্পর্কে জানা যাক।

অর্ধ মৎসে্যন্দ্রসন:এ ব্যায়ামের প্রথমে আপনাকে সামনের দিকে দুই পা ছড়িয়ে বসতে হবে। এরপর একটি পায়ের ওপর অন্য একটি পা তুলে সোজা করে রাখুন, পা যেদিকে রেখেছেন তার উল্টোদিকে ঘাড় ঘুরিয়ে বসুন। এরপর সামনে পায়ে হাত দিয়ে স্পর্শ করুন অন্য হাতি ঘুরিয়ে রাখুন কোমরে কিছুক্ষণ এভাবে বসে থাকুন তারপর আগের অবস্থায় ফিরে আসুন। এভাবে আপনি অর্ধ মৎসে্যন্দ্রসন ব্যায়ামটি করতে পারবেন।

ভুজঙ্গাসন:এই ব্যায়ামের প্রথমে আপনাকে শুয়ে পড়তে হবে এরপর দুই হাত ভাঁজ করে বুকের দুই পাশে রাখতে হবে। বারবার শ্বাস নিতে হবে এবং একই সাথে মাথা ও বুক মাটির উপর থেকে তোলার চেষ্টা করতে হবে। যতটুকু সম্ভব মাথা ও ক্ষার পিছন দিকে ঝুলিয়ে রাখুন। এই অবস্থায় ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড থাকুন ব্যাস হয়ে গেল আপনার ভুজঙ্গাসন ব্যায়াম।

পশ্চিমোত্তাসন:এই ব্যায়ামের প্রথমে আপনাকে সামনের দিকে পা ছড়িয়ে বসতে হবে এবং পায়ের পাতা আপনার দিকে রাখতে হবে। মেরুদণ্ড সোজা করে রাখুন এবং বারবার শ্বাস নিন। এরপর দুই হাত উপরে তুলুন এবং শ্বাস ছাড়ুন আস্তে আস্তে সামনের দিকে ঝুকুন। 

মাথা আপনার হাঁটুতে রাখতে হবে এবং এরপর আবার শ্বাস ছাড়তে হবে। এমন ভাবে এই ব্যায়ামটি করতে হবে যাতে আপনার মেরুদন্ড সামনের দিকে থাকে। এই ব্যায়ামটি করার মাধ্যমে আপনি মানসিকভাবে স্বস্তি পাবেন এবং ইউরিক এসিড কমাতে বেশ সাহায্য করবে।

সাঁতার:প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ মিনিট করে যদি সাঁতার কাটতে পারেন তাহলে আপনার শরীরে ইউরিক এসিডের পরিমাণ অনেকটা কমে যাবে। তাই আপনি যদি এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে নিয়মিত সাঁতার কাটার চেষ্টা করুন এবং ধীরে ধীরে এই সময় থেকে বাড়িয়ে আরো বেশি সময় নিয়ে সাঁতার কাটুন।

সাইকেলিং:সাইকেলিং করার মাধ্যমে আমাদের শরীরের বিভিন্ন হাড় গুলোর কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং রক্ত চলাচল ভালো রাখে। তাই আপনার যদি এই রোগ থেকে থাকে তাহলে প্রতিদিন বিকেলে ১০ থেকে ২০ মিনিট করে সাইকেলিং করুন।

উপরোক্ত ব্যায়ামগুলো মেনে যদি আপনি জীবন যাপন করতে পারেন তাহলে ইউরিক এসিডের মত সমস্যা থেকে সহজে রক্ষা পাবেন। আশা করি ইউরিক এসিডের ব্যায়াম সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।

ইউরিক এসিড বাড়ে কোন খাবারে

ইউরিক এসিড বাড়ে সাধারণত উচ্চ পিউরিন যুক্ত খাবার খাওয়ার কারণে। উচ্চ পিয়রিনযুক্ত খাবার গুলোর মধ্যে রয়েছে পালং শাক, বরবটি, গাজর, সিম, মসুর ডাল, মাটন সমুদ্রের মাছ ইত্যাদি। তাছাড়া আরও রয়েছে কিছু অস্বাস্থ্যকর খাবার যেমন: আচার, চানাচুর, নুনুত মাছ ইত্যাদি। এ সকল খাবার খেলে সাধারণত ইউরিক এসিড বাড়ে। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন ইউরিক এসিড বাড়ে কোন খাবারে।

ইউরিক এসিডের নরমাল রেঞ্জ

আমরা অনেকেই হয়তো জানি না ইউরিক এসিডের রেঞ্জ কত। ইউরিক এসিড নরমাল রেঞ্জ মহিলা ও পুরুষদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। স্বাভাবিক অবস্থায় একজন মানুষের শরীরে ইউরিক এসিডের মাত্রা হল: পুরুষের ক্ষেত্রে-৩.৪-৭.০mg/dl এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে-২.৪-৬.০ mg/dl । 

এই নর্মাল রেঞ্জের বেশি যদি কোন মহিলা বা পুরুষের ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে যায় তাহলে অবশ্যই এর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নিয়ন্ত্রণ না করলে ইউরিক এসিডের প্রভাব আমাদের হার এবং কিডনির উপরে বেশি পড়ে। আশা করি ইউরিক এসিডের নরমাল রেঞ্জ সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।

ইউরিক এসিড টেস্ট খরচ

আপনার ইউরিক এসিডের সমস্যা হয়েছে কিনা তা নির্ণয় করতে অবশ্যই আপনাকে হসপিটাল বা ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন হাসপাতালে ইউরিক এসিড টেস্ট খরচ বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে ইউরিক এসিড টেস্ট খরচ সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। আপনার নিকটস্থ কোন হাসপাতালে গিয়ে যদি ইউরিক এসিড টেস্ট করাতে চান তাহলে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা খরচ হতে পারে। তবে এই টাকার পরিমাণ কিছুটা কম হতে পারে কিন্তু বেশি হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম।

ইউরিক এসিড কমানোর ঘরোয়া উপায়

বর্তমান সময়ে সকল বয়সের মানুষরা ইউরিক এসিড জাতীয় সমস্যায় ভুগে। ইউরিক এসিড বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে শরীরে বিভিন্ন জয়েন্ট ব্যথা অনুভূত হয়। এই সমস্যাটি হয়ে থাকে আমাদের অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের কারণে। তবে ইউরিক এসিড কমানোর ঘরোয়া উপায় রয়েছে যা মানলে আপনি সহজেই এই সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে পারেন। চলুন তাহলে ইউরিক এসিড কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানা যাক।

অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকা: আমরা যারা অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করি তাদের অবশ্যই অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকতে হবে। অ্যালকোহল খাওয়ার কারণে আমাদের রক্তে বিভিন্ন উপাদানের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং রক্তে বজ্র পদার্থ বেড়ে যায় ফলেই ইউরিক এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই প্রথমত আমাদেরকে অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকতে হবে।

বেশি বেশি পানি পান করা: পানি পান করার কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন উপাদানের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় থাকে। পানি পান করলে আমাদের কিডনি পরিষ্কার থাকে এবং অপ্রয়োজনীয় উপাদান প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যায়। তাই আমাদেরকে বেশি বেশি পানি পান করতে হবে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করা: অতিরিক্ত ওজনের কারণে আমাদের শরীরে চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। যার ফলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্ত চলাচলে বাধা গ্রস্থ হয়। ফলে শরীরে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। তাই আমাদেরকে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়া: ভিটামিন সি আমাদের শরীরে ইউরিক এসিডের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। তাই আপনি যদি ইউরিক এসিডের সমস্যায় ভুগেন তাহলে বেশি বেশি ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাবেন।

কফি পান করতে হবে: কফিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা আমাদের শরীরে ইউরিক এসিডের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। তাই এই রোগে আক্রান্ত হলে নিয়মিত আপনাকে কফি খেতে হবে।

মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা: রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ইউরিক এসিডের পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। তাই আমাদেরকে চিনি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

শক্ত খাবার বর্জন করা: আমরা অনেকেই শক্ত আর যুক্ত মাছ খেতে পছন্দ করি যেমন: চিংড়ি, কাকড়া, লবস্টার ইত্যাদি। এই রোগে আক্রান্ত হলে প্রথমত আমাদেরকে এই খাবারগুলো বাদ দিতে হবে।
উপরোক্ত উপায়ে মেনে চললে আপনি সহজেই ইউরিক এসিডের পরিমাণ কমাতে পারবেন।

 আশা করি ইউরিক এসিড কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন যা আমাদেরকে বিভিন্ন প্রকার মেডিসিন খাওয়া থেকে একেবারেই রক্ষা করবে।

ইউরিক এসিড বেশি হলে কি হয়

ইউরিক এসিড নামটি যদিও আমাদের সকলের পরিচিত নয় তবে এই রোগের লক্ষণ সম্পর্কে আমরা সকলে অবগত। শরীরে ইউরিক এসিড বেশি হলে হাড়ের জয়েন্টে ব্যথা হয় যেমন: আঙ্গুল প্রচুর ব্যথা সৃষ্টি হয়। প্রথমত অবস্থায় ইউরিক এসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ না করলে পরবর্তীতে এটি মারাত্মক রোগে আক্রান্ত করতে পারে। 

দীর্ঘদিন ইউরিক এসিড শরীরে বৃদ্ধি পেলে কিডনি সমস্যা বা বিকল হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। তার সাথে প্রস্রাবের রক্ত বের হয় এবং ইউটিআই ইনফেকশন সৃষ্টি হয়। আশা করি ইউরিক এসিড বেশি হলে কি হয় সেই সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।

ইউরিক এসিড কেন হয়

ইউরিক এসিড সাধারণত রক্তে পাওয়া বজ্র পদার্থ থেকে তৈরি হয়। যদি প্রশ্ন করা হয় ইউরিক এসিড কেন হয় তাহলে এর উত্তরে বলতে হবে যদি আপনার শরীরের রক্তের বজ্র পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং কিডনিতে বজ্র পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে ইউরিক এসিডের সমস্যা দেখা দেয়।

ইউরিক এসিড কোথায় তৈরি হয়

ইউরিক এসিড সাধারণত মানবদেহের যকৃতে তৈরি হয়। রক্তে বজ্র পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের যকৃতে তখন ইউরিক এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। তবে অনেক সময় প্রোটিন বিপাকেও ইউরিক এসিড তৈরি হতে পারে।

ইউরিক এসিডের ব্যথা কমানোর উপায়

ইউরিক এসিডে আক্রান্ত ব্যক্তি তার শরীরে প্রচুর পরিমাণ এর ব্যথা অনুভূত করে। তখন এই ব্যাথা কমানোর জন্য আপনি ব্যায়াম করতে পারেন। নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে ক্রমশই আপনার ইউরিক এসিডের ব্যথা কমাতে পারবেন।

তাছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে যদি ইউরিক এসিডের ব্যথা কমাতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিয়ম মেনে খাওয়া-দাওয়া করতে হবে। তবে বলা যেতে পারে ইউরিক এসিডের ব্যথা কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে প্রথম হল ব্যায়াম। তাই আপনি ব্যথা কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন।

পরিশেষে কথা

ইউরিক এসিড একটি কমন সমস্যা যা আমরা অনেকেই বুঝতে পারিনা যে আমাদের কি ইউরিক এসিডের সমস্যা হয়েছে কিনা। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের ইউরিক এসিড সম্পর্কে কিছু ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

আশা করি আপনারা ইউরিক এসিডে নিষিদ্ধ খাবার ও ইউরিক এসিড কমানোর ঘরোয়া উপায় , ইউরিক এসিড টেস্ট খরচ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের কোন মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে শেয়ার করুন। এরকম আরো তথ্য পেতে www.twestinfo.com পেইজে চোখ রাখুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।

comment url