বিটরুট পাউডার এর উপকারিতা

 প্রিয় পাঠক,আপনি কি বিটরুট সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? অথবা বিটরুট কি, বিটরুট এর পুষ্টিগুণ, বিটরুট পাউডার এর উপকারিতা, বিটরুট খাওয়ার নিয়ম এবং বিটরুট পাউডার এর দাম কত ইত্যাদি বিষয়ে গুগলে সার্চ করছেন? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য।

বিটরুট পাউডার এর উপকারিতা
এই পোস্টে বিটরুট সম্পর্কে যাবতীয় সকল তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। বিটরুট সম্পর্কে জানতে অবশ্যই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন।
সূচিপত্রঃ

ভূমিকা

বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে বিটরুট একটি ফল হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আসলে বিটরুট একটি সবজি। বিটরুটকে কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায় এবং পাকা অবস্থায়ও খাওয়া যায়। আশ্চর্য এই সবজি নিয়ে সকলের ধারণা পরিষ্কার করতে আজকের এই পোস্ট। আশা করি এই পোস্ট সম্পূর্ণ পড়ার পর বিটরুট সম্পর্কে আপনাদের ধারণা পাল্টে যাবে।

বিটরুট কি

বিটরুট এক ধরনের বিট গাছের মূল অংশ। এটি প্রথমে উত্তর আমেরিকায় সবজি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এটি দেখতে প্রায় শালগম এর মত দেখা যায়। তাই অনেকের এটিকে শালগম হিসেবেই বেশি চেনে। বিটরুতে সবুজ পাতাযুক্ত অংশটিকেও খাওয়া যায়। এই পাতাযুক্ত অংশটি কে কিছুটা শাকের মতো মনে হয়। এইসব যে শীতকালে বেশি পাওয়া যায়। এটি দেখতে লাল রংয়ের হয়ে থাকে। বিটরুট এর গন্ধ সকলে পছন্দ করে না। এর একটি নিজস্ব উৎকট গন্ধ রয়েছে। বিটরুট প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। চলুন তাহলে বিটরুট এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানা যাক।

বিটরুট এর পুষ্টিগুণ

বিটরুট একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার। এতে প্রচুর পরিমাণ এর ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে। যেমন: আয়রন, জিংক, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফোলেট, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি। বিটরুটে আরো রয়েছে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এ সকল উপাদান আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। যদিও বিটরুট খেতে সকলে পছন্দ করে না কিন্তু এর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জানলে সকলেই বিটরুট খেতে আগ্রহ দেখাবে।

বিটরুট পাউডার এর উপকারিতা

বিটরুট একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার বলে এটির উপকারিতা রয়েছে প্রচুর। এটি নিয়মিত খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ শক্তি বেড়ে যাবে। নিচে বিটরুট পাউডার এর উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
  • নিয়মিত বিটরুট পাউডার খাওয়ার ফলে কিডনি ভালো থাকে।
  • বিটরুট পাউডার ফুসফুস ভালো রাখে।
  • বিটরুট পাউডার ব্যবহারের ফলে ত্বক ফর্সা হয়।
  • বিটরুট পাউডার ব্যবহারে শরীরের এলার্জি কমে যায়।
  • উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে বিটরুট পাউডার অনেক উপকারী।
  • বিটরুট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • বিটরুটের জুস লিভার সুস্থ রাখে।
  • বিটের জুস অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
  • বিটরুটে থাকা ভিটামিন ই ও ভিটামিন সি চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • নিয়মিত বিটরুট ব্যবহার করার ফলে ত্বকের বয়সের ছাপ কমে যায়।
  • চোখের নিচে কালো দাগ কমাতে বিটরুট পাউডার অনেক উপকারী।
বিটরুটে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রেট উপাদান রয়েছে। এই নাইট্রেট উপাদান আমাদের শরীরের রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি, পেশি সংকোচন ও শক্তিশালী করা, গ্যাস বিনিময় ও মাইটোকন্ডিয়াল দক্ষতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা এবং এনজাইনা ও হৃদ রোগের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এই নাইট্রেট পদার্থ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আর এই নাইট্রেট পদার্থ পেতে আপনাকে বিটরুট বিশেষভাবে উপকার করবে। বিটরুট ক্যান্সার বিরোধীতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। বিভিন্ন পরীক্ষার নিরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে যে বিটরুট খাওয়ার ফলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। বিটরুটে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পলি ফেনাল যৌগ। যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন প্রদাহকে কমিয়ে দেয়।

বিটরুটে বিদ্যমান ভিটামিন সি, ভিটামিন বি যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন সি আমাদের ত্বককে ও লিগামেন্ট ভালো রাখে। শরীরের বিভিন্ন ক্ষত নিরাময় করে। তাছাড়া বিটরুট খাওয়ার ফলে শরীরের রক্তের পরিমাণ বেড়ে যায়। ধূমপান জনিত সমস্যাও অনেকটা হ্রাস করে। বিটরুটে বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে যেমন: লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ,পটাশিয়াম। এ সকল পদার্থ আমাদের শরীরে অক্সিজেন পরিবহন করে এবং আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে।

আমরা জানি খনিজ পদার্থ শিশুদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই শিশুদের বিটরুট খাওয়ার ফলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি রক্তস্বল্পতা অনেকটা কমে যায়। তাছাড়া বিটরুট খাওয়ার ফলে মহিলাদের ঋতুস্রাব এর ঝুঁকি কমে যায়। ফাইবারের একটি বড় উৎস হিসেবে বিটরুট পাউডার সবার প্রথমেই আসবে। ফাইবার আমাদের শরীরে প্রি -বায়োটিক হিসেবে কাজ করে।

যা অন্ত্রের মধ্যে থাকা অনুজীব কে প্রদাহ ও শারীরিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা করে। সুতরাং বলা যায় যে বিটরুট আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত বিটরুট খাওয়ার ফলে শরীরের বিভিন্ন রোগ থেকে সহজে রক্ষা পাওয়া যায়। বিটরুট পাউডার এর উপকারিতা অপরিসীম।

বিটরুট খাওয়ার নিয়ম

বিটরুট সাধারণত সারা বছরই পাওয়া যায়। এটিকে সকলেই সবজি হিসেবে বেশি চিনে থাকে। তাই অনেকের সবজি হিসেবে এটিকের রান্না করে খায়। বিটরুট কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায় এবং পাকা অবস্থায়‌ও খাওয়া যায়। কাঁচা অবস্থায় এটিকে বিভিন্ন সবজির সাথে দিয়ে তরকারি হিসেবে রান্না করা যায়। এটি আপনি মাছ কিংবা মাংসের সাথে রান্না করতে পারবেন।

বিটরুটকে পাকা অবস্থায় বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। কেউ কেউ এটিকে সালাদ হিসেবে বেশি পছন্দ করে। সালাত আইটেমের সাথে বিটরুট ব্যবহার করলে কিন্তু খারাপ হয় না। অনেকেই আবার বিটরুটের জুস বানিয়ে খেতে পছন্দ করে। বিটরুট, সামান্য মধু কিংবা চিনি, অন্যান্য ফল-ফুট একসাথে দিয়ে ব্লেন্ড করে এটির জুস বানিয়ে খেতে পারেন। দেখতে গেলে বিটরুট খাওয়ার নিয়ম আসলেই অনেক সহজ।

বিটরুট পাউডার কোথায় পাওয়া যায়

বর্তমান সময়ে বিটরুট প্রায় সকল জায়গায় পাওয়া যায়। কিন্তু বিটরুট পাউডার কোথায় পাওয়া যায় এই প্রশ্নের উত্তরে বলতে হবে বিটরুট পাউডার বিভিন্ন বড় সুপার শপ এবং ওয়েবসাইট কিংবা ফেসবুক পেজে বিক্রি করা হয়। ওয়েবসাইট কিংবা বিভিন্ন ফেসবুক পেইজে বিটরুট পাউডার উন্নত মানের প্যাকেজিংয়ের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। আপনি যদি বিটরুট পাউডার কিনতে চান তাহলে অনলাইনে সার্চ করলে বিভিন্ন পেজে পেয়ে যাবেন।

বিটরুট পাউডার এর দাম কত

বিটরুট পাউডার এর দাম বিভিন্ন মার্কেটে এবং অনলাইন প্লাটফর্মে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। কোথাও একটু দাম বেশি এবং কোথাও কম। বিভিন্ন পেজে এবং ওয়েবসাইটে বিটরুট পাউডারের প্যাকেজিং তিন রকম করে থাকে।তা হল ১৫০ গ্রাম ১০০ গ্রাম ও ৫০ গ্রাম। আপনি যদি ১৫০ গ্রাম বিটরুট পাউডার কিনতে চান তাহলে এর দাম পড়বে ৪৫০ টাকা। ১০০ গ্রাম কিনলে তার দাম পড়বে ৩০০ টাকা ও ৫০ গ্রাম কিনলে ১৫০ টাকা। এ দামের কিছুটা কম বেশি হতে পারে।

লেখক এর মন্তব্য

আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে বিটরুট কি, বিটরুট পাউডার এর উপকারিতা,বিটরুট খাওয়ার নিয়ম ও বিটরুট পাউডার এর দাম কত এই সম্পর্কে ধারনা দিতে পেরেছি।বিটরুট আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।তাই বিটরুট সম্পর্কে সকলকে জানাতে অবশ্যই পোষ্টটি শেয়ার করুন।আরো অনেক তথ্য পেতে www.twestinfo.com পেজে চোখ রাখুন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।

comment url