অনলাইনে জিডি করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় সকল তথ্য

প্রফেশনাল ফেসবুক পেজ খোলার নিয়ম আমরা অনেকেই অনলাইনে জিডি করার নিয়ম, জিডি করতে কি কি লাগে এগুলো সম্পর্কে জানিনা। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেকেই বিভিন্ন হুমকির সম্মুখীন হয়ে থাকি। সে সকল হুমকি থেকে কিভাবে আইনি ব্যবস্থা নিব আমরা অনেকেই জানিনা। তাই আজকের পোস্টে জিডি সম্পর্কে সবকিছু নিয়ে আলোচনা করব।

অনলাইনে জিডি করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় সকল তথ্য
জিডি সম্পর্কে সকল তথ্য পেতে অবশ্যই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন। এখানে আপনি জিডি কি, জিডি করতে কি কি লাগে,কোন কোন ক্ষেত্রে আপনি জিডি করতে পারবেন এবং অনলাইনে জিডি করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
সূচিপত্র:অনলাইনে জিডি করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় সকল তথ্য

জিডি কি?

জিডি হল অপরাধ ও অন্যায় সংবাদ বিশিষ্ট রেজিস্টার। অনেকেই জিডিকে সাধারণ ডায়েরি হিসেবেও চিনে থাকেন। কোনো সমস্যা হবে মনে হলে, জমি সমস্যা হবে মনে হলে বা খারাপ ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা মনে হলে সে বিষয়ে থানায় আইনিভাবে যা রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করা হয় তাকেই জিডি এন্ট্রি বলে। এটি একটি অপরাধ মূলক ব্যবস্থা।
১৮৬১ সালের পুলিশ আইন, ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি ও ১৮১৯ সালের পুলিশ রেগুলেশন অফ বেঙ্গল আইন গুলোতে যিনি সম্পর্কে বর্ণনা করা আছে। দৈনিক জীবনে চলাফেরায় সাধারণ কোনো সমস্যার সম্মুখীন যেমন: যাওয়ার পথে বকাটে ছেলেদের উত্তক্ত্য করা থেকে রেহাই, পাড়া-প্রতিবেশীর হুমকি থেকে রেহাই ও কিছু হারিয়ে গেলে এই ধরনের সাধারণ ডায়েরি থানায় করা হয়।

কোন কোন ক্ষেত্রে জিডি করা যাবে

সকল ক্ষেত্রে সাধারণ ডায়েরি বা জিডি করা যায় না। জিডি তখনই করা যাবে যখন কোন দুর্ঘটনা সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। মেয়েদের রাস্তায় চলাফেরার সময় ইভটিজিং এর শিকার হতে হয়। এই ইভটিজিং থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য থানায় জিডি করা যেতে পারে। তাছাড়া হারানো দলিল, ফোন, ব্যাংক কার্ড ইত্যাদি এসব জরুরী কোন কাগজ হারিয়ে গেলে তখন হারানোর জিডি করা যায়।

চুরি, ডাকাতি ,ছিনতাই, অপহরণ, নারী নির্যাতন ,ধর্ষণ ,নতুন বা পুরান ভাড়াটিয়ার তথ্য,প্রহরী, দারোয়ান,গৃহ কেয়ারটেকার এবং পলায়ন সংক্রান্ত বিষয়ও থানায় জিডি করা যেতে পারে। কেউ যদি আপনাকে কোন হুমকি বা আপনার মূল্যবান কিছু যেমন পাসপোর্ট, পরিচয়পত্র ,সার্টিফিকেট এই সকল হারানো আশঙ্কা তৈরি করে কিংবা বাড়ির কাজের মেয়ে বা ছেলে হারিয়ে যায় তাহলে আপনি প্রথমেই নিকটস্থ থানায় সাধারণ ডায়েরি বা জিডি করবেন। জিডি করার সময় ব্যক্তিগতভাবে থানায় উপস্থিত হয়ে অভিযোগ করলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

জিডি করতে কি কি লাগে

জিডি করতে তেমন কিছু প্রয়োজন হয় না যদি আপনি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ও জাতীয় পরিচয় পত্র অর্থাৎ এনআইডি পাসপোর্ট কিংবা জন্ম সনদ ব্যবহার করে জিডি করতে পারেন। জিডি করার পর ব্যবহারকারীরা একটি কিউআর কোড পাবেন যার মাধ্যমে ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য জিডি ডিজিটাল অথবা মুদ্রিত অনুলিপি সংগ্রহ করতে পারবেন।

জিডি করতে কত টাকা লাগে

অনেকেই মনে করে জিডি করতে টাকার প্রয়োজন। আসলে জিডি করার জন্য থানায় কোন টাকা দিতে হয় না। জিডির জন্য সরকার থেকে কোন ফ্রি নির্ধারণ করা হয়নি। ঘটনা যেখানে ঘটেছে তার নিকটবর্তী থানায় গিয়ে দায়িত্ব রত পুলিশ কর্মকর্তা জিডি নথিভুক্ত করেন। যদি দায়িত্ব রত পুলিশ কর্মকর্তা জিডি নথিভূত করতে টাকা দাবি করেন তাহলে সেই পুলিশের উপর-স্ত্র পুলিশ কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করলে তিনি এটির দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন।

অনলাইনে জিডি করার নিয়ম

অনলাইনে জিডি করা যায় এটির সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা নেই। পুলিশ বাহিনীর আধুনিকতার লক্ষ্যে একটি সফটওয়্যার তৈরি করেন যার মাধ্যমে অনলাইনে জিডি করা সম্ভব। সিডিএমএস প্লাস প্লাস এই সফটওয়ারটির সঙ্গে অনলাইন জিডি প্রকল্পটির এপিআইর মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয়।

এই সি ডি এম এস সফটওয়্যারের মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল থানায় জমা হওয়া এফআইআরও এর সঙ্গে সকল তথ্যকে ডিজিটাল আকারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এই অ্যাপস দেশের সকল নাগরিক গুগলের প্লে স্টোর অথবা পুলিশের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইন জিডিএপে ডাউনলোড করতে পারবেন।

প্রথম ধাপ

আপনাদের ফোনের প্লেস্টোর অথবা পুলিশের ওয়েবসাইট থেকে জিডিএপ ডাউনলোড করুন।
অ্যাপে প্রবেশ করুন>রেজিস্টেশন বাটন এ ক্লিক করুন>জাতীয় পরিচয় পত্র পাসপোর্ট কিংবা জন্ম সনদপত্র এর নাম্বার লিখুন>সঠিকভাবে আপনার বর্তমান ঠিকানা দিন>একটি লাইভ ছবি তুলুন>আপনার মোবাইল নং (যা ইউজারনেম হিসেবে ব্যবহার হবে) দিন অথবা ইমেইল এড্রেস দিন (যদি থাকে)>পাসওয়ার্ড নির্ধারণ করুন।

উপরের সকল সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য এসএমএস এর মাধ্যমে আপনার মোবাইলে একটি OTP কোড পাঠানো হবে।OTP কোডটি সঠিকভাবে মোবাইলে লিখুন। লগ ইন এর ওপর ক্লিক করুন এরপর মোবাইল নং ও পাসওয়ার্ড দিন।

দ্বিতীয় ধাপ

প্রথমে আপনি কি বিষয়ে অভিযোগ করতে চাচ্ছেন তা নির্বাচন করুন> নির্বাচন করার পর জেলা ও আপনি যে থানায় জিডি করতে চান সেই থানা নির্বাচন করুন> এরপর কোথায় এবং কখন কি ঘটনাটি ঘটেছে তা সম্পূর্ণ লিখুন> নেক্সট বাটনে ক্লিক করুন।

আপনার বর্তমান ঠিকানা ও ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করার পর যদি অভিযোগের সঙ্গে কোন নথি থাকে তা সংযুক্ত করুন>সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। অভিযোগ ফর্মে যদি কোন ভুল হয়ে থাকে বা সংশোধনের প্রয়োজন হয় তাহলে এডিট বাটনে ক্লিক করুন এবং সংশোধন করুন। আবেদন সম্পন্ন হলে পরবর্তীতে লগইন করে আপনার জিডির অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

অনলাইনে জিডি করার নিয়ম একটু কঠিন মনে হলেও আপনি যেকোনো সময় যেকোনো জায়গা থেকে জিডি করতে পারবেন। ঘরে বসে জিডি করার জন্য বা যেকোনো সময় জিডি করার জন্য অনলাইনে জিডি করার নিয়ম সকলেরই জানতে ইচ্ছে হয়।

সর্বশেষ কথা

আমাদের সকলেরই জিডি সম্পর্কে বা আইনগত সকল ব্যবস্থা সম্পর্কে কিছু না কিছু ধারণা রাখা দরকার। দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন প্রকার পেরেশানি বা হুমকি থেকে রেহাই পেতে জিডি আমাদের অনেক সাহায্য করবে। এটি একটি সরকারি সেবা সকল নাগরিকের মানবিক অধিকারের মধ্যেই পড়ে। 

আশা করি আমার পোস্টটি আপনার কাজে আসবে। আপনাদের আশেপাশে আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে জিডি সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট করার জন্য অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করুন। আরো অনেক তথ্য পেতে www.twestinfo.com পেজে চোখ রাখুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।

comment url