মালবেরি চাষ পদ্ধতি জানলে সাফল্য নিশ্চিত
জুম চাষ কেন করা হয়
প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা মালবেরি চাষ করলে সাফল্য কিভাবে আসবে সেই সম্পর্কে জানব।
মালবেরি চাষ পদ্ধতি, মালবেরি গাছের পরিচর্যা ও মালবেরি গাছের দাম সহ আরো নানান
বিষয়ে আলোচনা করব। মালবেরি একটি বিদেশি ফল।
যা আমাদের কাছে অপরিচিত। কিন্তু আজকালকের অনেক উদ্যোক্তা রয়েছে যারা মালবেরি চাষ
করে লাভবান হয়েছেন। তাই আপনাদেরও এই মালবেরি চাষের গোপনীয় কিছু তথ্য দেব যাতে
আপনারাও একজন সাফল্যবান উদ্যোক্তা হয়ে দাঁড়াতে পারেন। তাই মালবেরি চাষ করে
সাফল্যবান হতে সম্পূর্ণ পোস্টটি অবশ্যই পড়ুন।
ভূমিকা
আমরা সকলেই সাফল্যবান উদ্যোক্তা হতে চাই। কিন্তু কি করলে এই সাফল্যের
দ্বারকাঠিতে পৌঁছাতে পারবো সেই সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্য ভরসা দিয়ে দাঁড়াতে পারি
না। সে ক্ষেত্রে মালবেরি চাষ একটি উপযুক্ত ও লাভবান ব্যবসা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আরো পড়ুন:ব্লুবেরি চাষ করে লাখ টাকা ইনকাম
স্বল্প খরচে ও কম পরিশ্রম দিয়ে আমরা মালবেরি চাষ করতে পারি। কিন্তু মালবেরি
চাষ করার পূর্বে অবশ্যই আমাদের মালবেরি সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য জানা থাকতে হবে।
মালবেরি সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য জানতে নিচের বিষয়গুলো খেয়াল করুন।
মালবেরি ফল কি?
মালবেরি ফলের কথা শুনলে মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে এটি কি ফল। আসলে মালবেরিয়া
একটি বিদেশি ফল। মালবেরি শব্দের বাংলা অর্থ হলো তুত। তুত বা মালবেরি গাছের পাতা
রেশম পোকার প্রিয় খাদ্য। মালবেরি ফল খেতে সুস্বাদু ও রসালো। মালবেরির চাষ
বাংলাদেশের হয় না বললেই চলে।
ছোট ছোট অনেকগুলো ফল মিলিয়ে তৈরি হয় একটি মালবেরি ফল। কাঁচা অবস্থায় এটি
সবুজ রঙের, পাকা অবস্থায় এটি দেখতে লাল রঙের হয় এবং পরিপূর্ণভাবে পাকলে এটি
কালচে রঙের হয়ে যায়। মালবেরি গাছে ফুল হয় ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে।
সেই ফল পাকে মার্চ ও এপ্রিল মাসের দিকে। মালবেরি গাছের ছাটাই করা শাখা প্রশাখা
কলম দিয়ে নতুন গাছ তৈরি করা যায়। তাছাড়া এই ফলের বীজ রয়েছে যার মাধ্যমে ও
গাছ হয়ে থাকে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি মালবেরি বা তুত চাষ করা হয় রাজশাহী ও
চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
মালবেরি চাষ পদ্ধতি
মালবেরি চাষের জন্য তেমন কোন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। তবে কিছু জিনিসের
বিশেষ খেয়াল রাখা প্রয়োজন। এটি সাধারণত গ্রীষ্মকালীন ফল। মালবেরি চাষের জন্য
প্রয়োজনীয় মাটি ও তাপমাত্রার ধরন সম্পর্কে নিচে দেওয়া হল:
মাটির ধরন: সকল ধরনের মাটিতে মালবেরি বা তুত চাষ করা যায়। উর্বর জমি
থেকে সমতল মাটিতে এবং ভালো পানি ধারণ ক্ষমতা বিশিষ্ট মাটিতেও এটি চাষ করা যায়।
মালবেরি ভালো উৎপাদনের জন্য মাটির পিএইচ সমতা থাকতে হবে। অতিরিক্ত সাঁতসাতে
মাটিতে ফলন তেমন ভালো হয় না। তাই রূপন করার আগে অবশ্যই জমিতে মাটি ও পানির
সমতা থাকতে হবে।
জলবায়ু: ২৪ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকা প্রয়োজন এবং বীজ
বপণের জন্য ৩৫ থেকে ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকতে হবে। ২২ থেকে ২৫ মি মি
বৃষ্টিপাত থাকতে হবে। এবং বীজ উত্তরণের সময় তাপমাত্রা থাকতে হবে ৪০ থেকে ৪৫°
সেলসিয়াস।
জমির প্রস্তুতি: মালবেরি চাষের পূর্বে অবশ্যই জমিকে প্রস্তুত করতে হবে।
অতিরিক্ত শক্ত মাটিতে মালবেরি চাষ তেমন ভালো হয় না। জমি প্রস্তুত করার সময়
অবশ্যই আগাছা ও শক্ত পাথর সরিয়ে ফেলতে হবে। অতিরিক্ত শক্ত মাটি হলে লাঙ্গল
দিয়ে চাষ করতে হবে। মাটিকে কিছুটা পরিমাণের নরম করতে হবে যাতে চারা রোপনের পর
মূল অতি সহজে মাটির সাথে খাপ খাইয়ে যেতে পারে।
বীজ বপন: বীজ বপনের সময় অবশ্য প্রস্তুত মাটিতে বপন করতে হবে। জুল ও
জুলাই মাসের মধ্যে মাটি প্রস্তুত করে রাখতে হবে। বীজ বপনের সঠিক সময় জুলাই ও
আগস্ট মাসের মধ্যে। বীজ বপনের সময় কিছু জিনিসে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
একটি বীজ থেকে অন্যটি বীজ কতটুকু দূরত্বে রোপন করা হয়েছে সেই বিষয়ে খেয়াল
রাখতে হবে। প্রতিটি গাছের মাঝে ৯০ সেন্টিমিটার করে ফাঁকা স্থান রাখতে হবে। এবং
৬০ সেন্টিমিটার গর্ততে বীজ রোপন করতে হবে।
বীজের হার: মালবেরি চাষের সময় জমির পরিমাণ এর সাথে বীজের হাড়ের
পরিমাণের সমতা রাখতে হবে। প্রতি এক একর জমিতে ৪ কেজি বীজ বপন করা যেতে পারে।
বীজের সংরক্ষণ: বাজার থেকে বীজ ক্রয় করার পর ৯০ দিনের জন্য বীজকে
ঠান্ডা স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে। ৯০ দিন সংরক্ষণের পর দুই দিন পানিতে ভিজিয়ে
রাখতে হবে। সর্বোচ্চ চার দিন ভিজিয়ে রাখার পর বীজকে আদ্র কাপড়ে তুলে রাখতে
হবে এবং অঙ্কুরোদগম হওয়ার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বীজ অংকুর হওয়ার পর
জমিতে রোপন করতে হবে।
সারের ব্যবহার: প্রতি এক একর জমিতে ৮ মেট্রিক টন FYM সার ব্যবহার করা
যায়। এই সার প্রতি বছর একবার করে ব্যবহার করুন। এই শারকে সমান দুই ভাগে ভাগ
করে জমিতে ভালো করে মিশ্রণ করুন। এর পাশাপাশি NPK ১৪৫:১০০:৬২কেজি/একর / বছরের
আকারে ভি – ১১ জাতের জন্য এবং এনপিকে ১২৫:৫০:৫০ কেজি / একর / বর্ষ এস -৩৬ জাতের
জন্য সার ডোজ প্রয়োগ করুন।
আগাছা দমন: প্রথমদিকে জমি কে আগাছা মুক্ত রাখুন। এতে করে গাছের বৃদ্ধির
দ্রুত হবে। প্রথম ছয় মাসে দুইবার আগাছা দমনে প্রয়োজন হয়। পরবর্তীতে দুই থেকে
তিন মাসে একবার আগাছা দমন করলেই হয়।
সেচ: সপ্তাহে এক থেকে দুইবার সেচ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। প্রায় ৮০ থেকে
১২০ মিমি সেচ দেওয়া লাগে। পানির সংকট দেখা দিলে ড্রিপ পদ্ধতিতে সেচ দেওয়া
যায়। এতে করে কিছুটা পানির সঞ্চয় হয়।
ফল তোলার সময়কাল: সকালবেলা ফল তোলার জন্য সঠিক সময়কাল।মালবেরি ফল যখন
লাল থেকে বেগুনি রং ধারণ করবে তখন এই ফল তুলতে হয়। হাত দিয়ে ফল তোলা উত্তম।
তাছাড়া গাছ ঝাঁকিয়েও ফল তোলা যায়। এ পদ্ধতিতে গাছের নিচে প্লাস্টিক জাতীয়
কিছু বেঁধে গাছকে ঝাঁকানো হয়। গাছের ফল পেকে যাওয়ার কারণে ঝাঁকানোর ফলে
প্লাস্টিকে পড়ে।
আশাকরি মালবেরি চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি। উপরোক্ত নিয়ম
মেনে আপনিও হতে পারেন মালবেরি সে সফল উদ্যোক্তা।
মালবেরি গাছের পরিচর্যা
মালবেরি গাছ শুধু চাষ করলেই হবে না এর বিশেষ পরিচর্যাও রাখতে হবে। উপযুক্ত
পরিচর্যা না পেলে এতে ফল ধরার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। গাছ রুপনের পূর্বে
অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেখানে গাছ রোপন করা হচ্ছে সেখানের রোদ পৌঁছায় কিনা।
রৌদ্র উজ্জ্বল স্থানে গাছ রোপন করতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যাতে সেখানে
প্রচুর পরিমাণে বাতাস না থাকে।
যেকোনো মাটিতে রোপন করা চলে কিন্তু জলাবদ্ধ, লবণাক্ত ও খোলামেলা হওয়া যাবে না।
গভীর ও প্রশস্ত গড়তে গাছ রোপন করতে হবে। গাছ রোপনের পূর্বে অবশ্যই খেয়াল
রাখতে হবে যেন মূল বাঁকানো না হয়। গর্ত করার পর এতে কিছুটা হিউমার কম্পোস্ট ও
অল্প পরিমান সুপার ফসফেট যোগ করতে হবে। প্রথমত গাছটি অতি দুর্বল অবস্থায়
থাকবে।
তাই সামান্য বাতাসও এটি ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা রাখে। তাই রোপনের পর গাছের সাথে
শক্ত লাঠি দিয়ে দিতে হবে। তাছাড়া নিয়ম মত পানি দেওয়া, আগাছা পরিষ্কার করা,
বিভিন্ন রোগ ও পোকামাকড় থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে
হবে।বৃষ্টিপাত না হলে অবশ্যই সময় মেনে গাছে পানি দিতে হবে। অযথা গাছের আকৃতি
সুন্দর করার জন্য গাছের বাকল কাটা যাবে না।
তাদের নিজস্ব আকৃতিতে বড় হতে দিতে হবে। আপনার যদি বড় গাছের সমস্যা মনে হয়
তাহলে নতুন বাকল কাটা থেকে বিরত থাকুন। এবং ছোট আকৃতির কাজ বানানোর জন্য পুরানো
মরা বাকল কেটে দিন। এতে করে আবার নতুন বাকল গজাবে।
অবশ্যই সময় মেনে গাছ থেকে ফল তুলুন। এবং ফল তোলার পর নিয়মিত সার প্রয়োগ
করুন। মালবেরি গাছের পরিচর্যা ঠিকমতো করলে প্রচুর ফল ধরার সম্ভাবনা থাকে। তাই
সকলেই রোপনের পর মালবেরি গাছের পরিচর্যা করব।
মালবেরি গাছের দাম
বিশ্বজুড়ে মালবেরি ফলের চাহিদা বেশ রয়েছে। মালবেরি ফলের চাষ তো সবাই করতে
চায় কিন্তু সঠিক তথ্য জানা নেই বলে সবাই চাষ করতে ভয় পায়। আমরা সবাই জানি
এটি একটি বিদেশি ফল। বাংলাদেশে এর ফলের চাষ আগে ছিল না। কিন্তু বর্তমান সময়ে
প্রায় অনেকেই মালবেরি ফলের চাষ করে লাভবান হয়েছেন।
অনেকের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে মালবেরি গাছের দাম কত? তাই মালবেরি গাছের দাম
সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিব। বর্তমানে বাংলাদেশে মালবেরি গাছের কিছুটা চড়া দাম।
একটি গাছের দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা হয়ে থাকে।
দুইটি গাছের দাম ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা নিয়ে থাকে। পাঁচ পিস গাছের দাম ১৪০০ অথবা
১৬০০ টাকা নিতে পারে। কেউ যদি বেশি গাছ কিনতে চায় তাহলে দশ পিস গাছের দাম ৩০০০
থেকে ৩৫০০ টাকা হতে পারে। ২০ পিচ গাছের দাম ৬০০০ থেকে ৭ হাজার টাকা হতে পারে।
এছাড়া ৫০ পিস গাছের দাম ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকা হয়ে থাকে। এই দাম থেকে বাজারে
কিছুটা কম বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মালবেরি ফলের দাম
মালবেরি ফলের চাহিদা বর্তমানে কিছুটা বেশি। আগে বাংলাদেশের মালবেরি ফল পাওয়া
যেত না। তবে এখন কিছু কিছু জেলায় মালবেরি চাষ করা হচ্ছে। এই ফল সব বাজারে বা
মার্কেটে পাওয়া যায় না। বিশেষ করে বড় বড় মার্কেটে বা সুপার শপে পাওয়া
যায়। প্রতি কেজি মালবেরি ফলের দাম প্রায় ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা। ২ কেজি ফলের
দাম ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা। তাছাড়া জেলা বিভেদে এর দাম কম বেশি হতে পারে।
মালবেরি ফল খাওয়ার নিয়ম
মালবেরি ফল খেতে খুবই সুস্বাদু ও রসালো। গ্রীষ্মকালীন এই ফল বিভিন্ন ভাবে
খাওয়া যায়। আমাদের মধ্যে অনেকেই এই ফল চিনে কিন্তু কিভাবে খেতে হয় তা কেউ
জানে না। তাই মালবেরি ফল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে কিছু তথ্য শেয়ার করব।এই ফল
বিভিন্ন প্রক্রিয়া খাওয়া যায়। যেমন: মালবেরি ফল কাঁচা থাকা অবস্থায় রান্না
করে খাওয়া যায়।
তাছাড়া এই ফল রসালো হাওয়ায় গ্রীষ্মকালে এই ফলের জুস বানিয়ে খাওয়া যায়।
মালবেরি ফল দিয়ে বিভিন্ন পানীয় জাতীয় খাবারও উৎপাদন করা হয়। মালবেরি দিয়ে
তৈরি জনপ্রিয় মালবেরি জ্যাম বানানো হয়। যা আমরা রুটির দিয়ে খেতে পারি।
মালবেরির তৈরি আরো কিছু উৎপাদন পণ্য:
- Mulberry jam
- Mulberry pie
- Mulberry muffins
- Mulberry hazelnut oats with molasses
- Mulberry crumb bars
এ সকল পণ্য সাধারনত দেশের বাহিরে পাওয়া যায়। সম্পূর্ণরূপে পাকা ফল অন্যান্য
ফলের মতোই খাওয়া যায়।
মালবেরি ফলের উপকারিতা
মালবেরি ফল দামে বেশি হলেও এটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার।
এতে বিদ্যমান ভিটামিন এ ভিটামিন ডি এবং বিভিন্ন ধরনের পটাশিয়াম উপাদান। এ সকল
উপাদান আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে। তাছাড়া মালবেরিতে রয়েছে
অসংখ্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে মালবেরি বেশি কাজ
করে। চলুন তাহলে মালবেরি ফলের উপকারিতা সম্পর্কে জানা যাক।
ক্যান্সার রোগে: মালবেরি ফলে বিদ্যমান পলিফেনল ও ফ্লাভোনয়েড যৌগসমূহ
ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করে। এই ফল শরীরে ক্যান্সার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। তাই
ক্যান্সার রোগীদের জন্য মালবেরি ফল একটি উপকারী খাবার।
হজম শক্তি বৃদ্ধি: মালবেরি ফল আমাদের শরীরে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
মালবেরিতে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার থাকে। এই ফাইবার আমাদের শরীরে হজম
শক্তি বৃদ্ধি করে। এটি আমাদের পরিপাকতন্ত্রের খাদ্য কে সচল করে এবং পাকস্থলীতে
মল উত্তোলন করে। এতে করে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: মালবেরিতে থাকা ভিটামিন সি ভিটামিন এ ও
প্রচুর পরিমাণ এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধি করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য মালবেরি ফলের রস খেতে পারেন।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ:মালবেরি ফল আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
হার্টে রক্ত চলাচল শিথিল রাখে। যার ফলে হার্ট অ্যাটাকের মত রোগ থেকে রক্ষা
পাওয়া যায়।
মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা করা: মালবেরিতে থাকা সাইটোপোটেকটিভ আমাদের
শরীরের কোষ কে বিভিন্ন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। যার ফলে স্নায়ুতন্ত্র শিথিল
থাকে। স্নায়ুতন্ত্র শিথিল রাখার কারণে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক থাকে। তাই
মালবেরিকে মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে প্রধান হিসেবে মানা হয়।
ফুসফুসের সমস্যা থেকে রক্ষা:আপনার যদি ফুসফুসে সমস্যা থেকে থাকে তাহলে
আপনি মালবেরি ফলের গাছের মূল খেতে পারেন। মালবেরি গাছের মূলে এন্টিভাইরাল ও
এন্টি ব্যাকটেরিয়াল নামক উপাদান রয়েছে যা আমাদের ফুসফুসের রোগ থেকে রক্ষা
করে।
কিডনির সমস্যা থেকে রক্ষা: আপনি যদি কিডনির সমস্যায় ভুগেন তাহলে
মালবেরি ফলের জুস খেতে পারেন। কিডনির কাজ হল আমাদের শরীর থেকে বিভিন্ন বজ্র
পদার্থ বের করে দেয়া। ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত রোগীরা মালবেরি বা তুঁতের জুস
খেতে পারেন। তুতের জুস ইনসুলিন প্রতিরোধ করে ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়।
রক্তস্বল্পতা: মালবেরিতে বিদ্যমান হিমোলাইট প্রভাব রক্তে হিমোগ্লোবিনের
মাত্রা বাড়ায়। যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন তারা নিয়মিত মালবেরি ফলের জুস
খেতে পারেন।
ঠান্ডার সমস্যা: নিয়মিত মালবেরি ফল খাওয়ার ফলে শরীরে অতিরিক্ত ঠান্ডার
প্রভাব কমিয়ে দেয়। এই ফল আপনার প্রস্রাব ঠিক রাখতেও সাহায্য করবে।
পরিশেষে বলা যায় মালবেরি ফল আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই
আমাদের উচিত নিয়মিত মালবেরি ফল খাওয়া। আশা করি মালবেরি ফলের উপকারিতা
সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতে পেরেছি।
মালবেরি ফলের অপকারিতা
মালবেরি বা তুত ফলের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতাও রয়েছে। অতিরিক্ত
মালবেরি ফল খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। তাই উপকারিতার
সাথে সাথে মালবেরি ফলের অপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে। নিচে মালবেরি ফলের
অপকারিতা সম্পর্কে কিছু ধারনা দেওয়া হল:
১. অতিরিক্ত মালবেরি ফল খাওয়ার ফলে ত্বকের ক্যান্সার সৃষ্টি হতে পারে.
২. আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি মালবেরি ফল রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
তাই অতিরিক্ত মালবেরি ফল খাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা একেবারেই কমে যেতে
পারে। এতে করে চোখে ঝাপসা দেখা ,শরীরে দুর্বলতা, মাথা ঘোরানো ও হাতে পায়ে
শক্তি না পাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩. মালবেরিতে অতিরিক্ত পরিমাণের পটাশিয়াম থাকার কারণে এটি কিডনিতে ও
পিত্তথলিতে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
৪. তাছাড়া যারা ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী এবং কেমোথেরাপি নিচ্ছেন তাদের
মালবেরি ফল খাওয়া একেবারেই উচিত নয়।
লেখকের মন্তব্য
মালবেরি সঠিক নিয়মে চাষ ও পরিচর্যার মাধ্যমে আপনি হয়ে যেতে পারেন লাভবান একজন
উদ্যোক্তা। উপরোক্ত মালবেরি চাষ পদ্ধতি মেনে আপনি চাষ করতে পারেন। আশা করি
আজকের পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে।মালবেরি সম্পর্কে তথ্য সকলকে জানানোর জন্য
অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করুন। আরো অনেক তথ্য জানতে লাইক ,কমেন্ট ও শেয়ার করে
পাশে থাকুন। নিয়মিত
www.twestinfo.com পেজে চোখ রাখুন।
টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।
comment url