ভারতের দর্শনীয় স্থানের ভ্রমণ গাইড
এই শীতে কোথায় ঘুরতে যাবেন? অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ভারত। এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং
বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। আমাদের দেশ তথা বাংলাদেশের
পার্শ্ববর্তী দেশ হওয়ায় অল্প খরচের মধ্যে ভারতের অনেক জায়গায় ভ্রমণ করা যায়।
পাহাড়-পর্বত, সমুদ্র- সৈকত এবং একই ঋতুতে ভিন্ন রকমের প্রাকৃতিক ভিউ শুধুমাত্র
ভারতেই দেখা যায়।
ভারতে ভ্রমণ করার মতো অসংখ্য দর্শনীয় স্থান রয়েছে। সেই সকল দর্শনীয় স্থান
সম্পর্কে হয়তো আমরা অনেকেই সম্পূর্ণ জানি না। তাই ভারতের দর্শনীয় স্থানগুলো
নিয়ে আজকে বিস্তারিত এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো।
দিল্লি
ভারতের রাজধানীর দিল্লি বিশ্বের বৃহত্তম মহানগরীর মধ্যে একটি। এই দিল্লির
ব্যস্ত ও জনবহুল শহরের কোনায় কোনায় ছড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের রূপ।
মুঘল আমলের বিভিন্ন পুরাতন স্থাপনা দিল্লির ঐতিহ্যকে আরো সমৃদ্ধ করে তোলে।
তাইতো প্রতিবছর দিল্লির বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখতে দেশ ও দেশের বাহির থেকে
লক্ষ লক্ষ পর্যটক ভ্রমণ করতে আসে।
দিল্লির কিছু দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে নিচের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হলো:
চাঁদনি চকের জামে মসজিদ: ভারতের বৃহত্তম মসজিদ গুলোর মধ্যে চাঁদনীচকের
জামে মসজিদ অন্যতম। প্রায় ৩০ হাজার মুসলিম একত্র হয়ে এখানে নামাজ আদায় করতে
পারে। প্রায় ১২ বছর ধরে মসজিদে নির্মাণ করা হয়েছিল। ১৬৫৬ সালে শাহজাহানের
আমলে এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। এই মসজিদে রয়েছে তিনটি গেট চারটি টাওয়ার ও
প্রায় ৩০ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট একটি মিনার। বিভিন্ন দেশের পর্যটক এই মসজিদটি
দেখতে যায়।
ইন্ডিয়া গেট: বলা হয়ে থাকে ১৯৩১ সালের প্রথম বিশ্বযুদ্ধে শহীদদের
প্রতি সম্মান জানানোর জন্য এই ইন্ডিয়া গেট নির্মাণ করা হয়। হলিডে তে ভারতীয়
অনেক মানুষ সেখানে উদ্যানে পিকনিক করতে আসে। সন্ধ্যার আলোতে ইন্ডিয়া গেটের
সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পায়। রিপাবলিক ডে তে ইন্ডিয়া গেটে একটি অসাধারণ অনুষ্ঠান
করা হয়।
চাঁদনী চক: চাঁদনী চক হল পুরাতন দিল্লি শহরের আদি ও প্রকৃত ইন্ডিয়ানদের
বাজার। সেখানে সুলভ দামের সকল জিনিস পাওয়া যায়। চাঁদনি চকে অসংখ্য মানুষের
ভিড় দেখে বুঝা যায় তাদের ঐতিহ্যের মধ্যে চাঁদনী চক একটি। সেখানে রয়েছে
অসংখ্য রেস্টুরেন্ট, সস্তায় আবাসিক হোটেল, বাজার যেখানে পাওয়া যায় না এমন
কিছুই নেই।
আরো পড়ুন:এই শীতে কোথায় ঘুরতে যাবেন?
কুতুবমিনার: মুঘল যুগের সূচনা ও তাদের বিজয়ের স্মৃতি হিসেবে ভারতের
সবচেয়ে উঁচু কুতুব মিনার কে বিবেচনা করা হয়। কুতুব-উদ-দিন আইবকের হিন্দু
সম্রাজ্যকে পরাজিত করার পর এই মিনাটি তৈরি করা হয়। এটি প্রায় ৭০ মিটার উচ্চতা
বিশিষ্ট ৫ তলা মিনারের মত। কুতুব মিনারের উপর থেকে চারিপাশের দৃশ্য যেন চোখকে
এড়িয়ে যেতে পারেনা।
দ্য ন্যাশনাল মিউজিয়াম: ভারতের বৃহত্তম জাদুঘরের মধ্যে দ্য ন্যাশনাল
মিউজিয়াম অন্যতম। এটি প্রায় চার হাজার ৬০০ বছরের পুরনো বিভিন্ন মন্দিরের রথ
,পোড়ামাটির খেলনা, টেম্পল নাচ, গয়না ,ব্রোঞ্জ ,হাড়ি ও বিভিন্ন ভাস্কর্য,
তলোয়ার, বাদ্যযন্ত্র ইত্যাদি দিয়ে সমৃদ্ধ। এটি দশটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা
পর্যন্ত খোলা থাকে। বিদেশি নাগরিকের জন্য জাদুঘরে টিকেট ৬৫০ রুপি। সোমবার ছুটির
দিন এটি বন্ধ থাকে।
গ্রীষ্মকালে দিল্লিতে অসহনীয় গরম থাকে এবং শীতকালে ও প্রচুর ঠান্ডা থাকে। তাই
খুব গরম ও ঠান্ডার দিনগুলো পরিহার করে দিল্লিতে ভ্রমণে যাওয়া উচিত।
তাজমহল
ভারতের তাজমহল আমাদের কাছে অতি পরিচিত একটি ভ্রমণের স্থান। এটি ভারতের পশ্চিম
উত্তর প্রদেশে আগ্রায় অবস্থিত। যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত তাজমহল বিশ্বের একটি
আশ্চর্য সর্বজনীন শ্রেষ্ঠকর্ম হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত। যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন
দেশের পর্যটক তাজমহল দেখতে এবং ইতিহাস জানতে ভারত ভ্রমণে আসে। তাজমহলকে প্রেমিক
যুগলের ভালবাসার প্রতি শান্তি ও সৌন্দর্যে নিদর্শন হিসেবে পরিচিত।
সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী মমতাজকে ভালোবেসে তাজমহল উপসর্গ করেছিলেন। এটি ১৬৩২
খ্রিস্টাব্দে নির্মাণ কাজ শুরু করে প্রায় ২২ বছর ধরে চলে ছিল। তাজমহল নির্মাণে
প্রায় দুই হাজার জন নকশাকার ও কারিগর মিলে তৈরি করেছিলেন।
তাজমহলটি প্রায় ৪২ একর জায়গা জুড়ে তৈরি করা হয়েছিল। পুরো তাজমহলকে ৫ অংশে
ভাগ করে দেয়া হয় সেগুলো হল প্রধান প্রবেশদ্বার, মসজিদ, অতীথিশালা ও চারটি
মিনার। তাজমহলের চারদিকে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। সেখানে শাহজাহান ও তার অন্যান্য
স্ত্রী ও প্রিয় মমতাজের সমাধি রয়েছে। অসংখ্য ফুলের বাগান গাছ-গাছালি ঘেরা
রাস্তা ও সুন্দর ঝর্ণা রয়েছে।
তাজমহলের প্রতিটি প্রাচীর মার্বেল পাথরের তৈরি। তাজমহলের প্রতিটি দেয়ালে
দেয়ালে রয়েছে পাথরের জ্যামিতিক ও ফুলের নকশায় পবিত্র কুরআনের আয়াত। তথাকথিত
শেষ সময়ে সম্রাট শাহজাহান যমুনা নদীর তীরে তাজমহলের বিপরীতে আরেকটি তাজমহল
নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন যার নাম কালা তাজমহল হিসেবে বেশি পরিচিত। তাজমহলের এই
অপরূপ সুন্দর্য সে সকল মানুষকেই মুগ্ধ করে বলে সব দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বয়সের
মানুষ সেখানে প্রতিবছর ভিড় জমায়।
কাশ্মীর
কাশ্মীর অপার সৌন্দর্যে ভরপুর একটি দর্শনীয় স্থান। এটিকে স্বর্গ ও বলে থাকেন।
ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন এমন কেউ নেই যে কাশ্মীর যেতে পছন্দ করবেন না। অপার
সৌন্দর্যে ভরপুর কাশ্মীর ভারতের স্বর্গরাজ্য হিসেবেও বলা হয়। ভারতের সকল
দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে কাশ্মীর সর্বপ্রথম অবস্থানে রয়েছে। কাশ্মীরের কিছু
উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান রয়েছে সেগুলো হল গুলমার্গ, পেহেলগ্রাম, শ্রীনগর,
সোনা মার্গ।
সাদা তুষার কন্যা ঘেরা শ্রীনগর। চারদিকে বরফের পাহাড় যেন কাশ্মীরে সৌন্দর্যকে
আরো বাড়িয়ে তুলে।শ্রীনগর থেকে ৫২ কিলোমিটার দূরে গোল মার্ক অবস্থিত ।যা সারা
বছরই বরফে ঘেরা থাকে। সেখানে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে প্যারাগ্রাইটিং এর
মজা উপভোগ করা যায়। পেহেল গ্রামও একটি দেখার মতো স্থান ।
শ্রীনগর থেকে প্রায় 97 কিলোমিটার দূরে পেয়ে তেহেল গ্রাম। সেখানের রাস্তায়
রাস্তায় রয়েছে আপেল বাগান। পেহেল গ্রামের পরিচিত বই সারান সুইজারল্যান্ড
হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত। কাশ্মীরে আরো কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে গেলে চোখে
তার সৌন্দর্য লেগে থাকার মত ।
কাশ্মীরের প্রায় অধিকাংশ সময় বরফে ঢাকা থাকে। সাদা তুলার মত সেই বরফ ধরতে এবং
উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন স্থানের প্রচুর পর্যটক প্রতিবছর সেখানে জড়ো হয়।
তাছাড়া কাশ্মীরে এক ধরনের বিশেষ ফুল পাওয়া যায় তা হল টিউলিপ।
এই ফুল এপ্রিল বা মে মাসের দিকে হয়। টিউলিপ ফুল দেখার জন্য অনেক মানুষ কাশ্মীর
যায়। বছরের ডিসেম্বর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বিশেষ করে কাশ্মীরে স্নোফল
হয়। তাই এই সময়ে কাশ্মীরে অনেক পর্যটকের ভীর হয়। শীতকালে ভ্রমণের সময়
অবশ্যই সতর্কতার সাথে যাওয়া উচিত।
কলকাতা
কলকাতা হল সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের একটি শহর। এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের
রাজধানী হিসেবে পরিচিত। কলকাতা সাধারণত বাংলাদেশী পর্যটকের তালিকায় প্রথমে
থাকে। অল্প খরচে চিকিৎসা কেনাকাটা সহ সবকিছুর জন্য বাংলাদেশীদের প্রিয় শহর
কলকাতা। কলকাতাকে আনন্দ নগর হিসেবেও অনেকে বলে থাকেন। এ শহরে পায়ে হেঁটে বা
মেট্রো করে শহরের নানা দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ করা যায়।
কলকাতার ঐতিহাসিক স্থান
১. ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল: রানী ভিক্টোরিয়াকে স্মরণ করে সাদা
মার্বেলের এই ইমারত তৈরি করা হয় যার নাম ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। হেটির
অসাধারণ কারুকার্য বিভিন্ন দেশের পর্যটককে মুখরিত করে।
২. হাওড়া ব্রিজ: কলকাতার সবচেয়ে পুরনো দর্শনীয় স্থান হাওড়া ব্রিজ।
হুগলি নদীর উপর অবস্থিত। হাওড়া ব্রিজের অন্য নাম রবীন্দ্র সেতু। এই ব্রিজ
দেখতে বছরে হাজারো পর্যটক সেখানে ভিড় করে।
৩. মার্বেল প্যালেস: ১৮৩৫ সালে রাজা রাজেন্দ্র মল্লিক বাহাদুর এই
প্রাসাদ তৈরি করেন। এটি দেখতে বিরাট এক অট্টালিকার মত। এ কারুকার্য অবশ্যই
পর্যটকদের ভালোলাগার মত।
কলকাতার পার্ক সমূহ
- নিকো পার্ক
- নলবল বটিং কমপ্লেক্স
- ফানসিটি
- সাইন্স সিটি পার্ক
- ইকোপার্ক
কলকাতা শহরের দর্শনীয় স্থান
- রবীন্দ্রভারতী মিউজিয়াম
- বিরলা ইন্ডাস্ট্রিয়াল মিউজিয়াম
- আশুতোষ মিউজিয়াম
- বোটানিক্যাল গার্ডেন
- আলিপুর চিড়িয়াখানা
- ইডেন গার্ডেন
- ন্যাশনাল লাইব্রেরী
- কফি হাউস
- বেলুড় মঠ
- কলেজ স্ট্রিট
অল্প খরচে ভ্রমণের মতো স্থানের মধ্যে কলকাতা সর্বপ্রথম। কলকাতা শহরের অন্যতম
মার্কেট নিউমার্কেট। সেখানে স্বল্প খরচে সকল প্রকার জিনিস ক্রয় করা যায়।
প্রতিবছর বিভিন্ন দেশের পর্যটক সেখানে গিয়ে অল্প খরচে সকল প্রকার জিনিস কিনে
আনে। এজন্য বরাবরি কলকাতা সকল বাংলাদেশী পর্যটক এর জন্য প্রথম ভ্রমণের স্থান।
মানালি
সমুদ্রপৃষ্ঠে অবস্থিত মানালি বিশেষ সবচেয়ে উঁচু পর্যটন এলাকা হিসেবে স্বীকৃত।
এটি ভারতের উত্তর এই হিমাচল প্রদেশের বিয়াস নদীর তীরে অবস্থিত। দেবতা মনুর নাম
অনুসারে মানালি নামকরণ করা হয়। মানালি কেউ পৃথিবীর স্বর্গ হিসেবে সুখ্যাতি করা
হয়। পাহাড় পর্বতে ঘেরা নদী ও অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর
বিপুল পর্যটকের সমাহার হয়। মানালি শুটিং স্পটের জন্য বিখ্যাত।
মানালির কিছু দর্শনীয় স্থান
১. রোথাং পাস: রোথাং পাস মানালী থেকে ৫১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
তাছাড়া সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৯৭৮ মিটার উচ্চতায় রয়েছে রোথান পাস। শেখানোর
পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তা এবং প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে সকলেই মুগ্ধ হয়। স্নোফলের
কারণে ডিসেম্বর থেকে জুন মাস পর্যন্ত যাতায়াত বন্ধ করে দেয়া হয়।
২. সোলাং ভ্যালি: রোথান পাস যাওয়ার পথ দিয়েই এখানে যেতে হয় ।মানালি
থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে। সেখানে রয়েছে প্যারাসুটিং স্কেটিং সারভিং
প্যারাগ্রাইডিং ইত্যাদি নানা বিনোদনের ব্যবস্থা।
৩. বন বিহার: বন বিহারের নিরিবিলি সুন্দর পরিবেশ মনে শান্তি এনে দেয়।
সেখানে নিরিবিলি এবং পাখির ডাক শুনে সময় কাটানোর জন্য একটি সুন্দর জায়গা।
৪. রেহালা জলপ্রপাত: ওই হালা জলপ্রপাত এক বিশাল চমৎকার ঝরনা দেখা যায়
সেই ঝর্ণার পানি বিলাস নদীতে গিয়ে মিশেছে। বিশাল সেই ঝর্ণা দেখে সকলেই মুগ্ধ
হয়ে যায়।
৫. বিয়াস নদী: মানালি শহরের পাশে বিয়াস নদী ।সেখানে নদীর পানি সারা
বছরই শীতল থাকে। বিয়াস নদীর শীতল পানিতে বিভিন্ন রাইটিং এর ব্যবস্থা রয়েছে।
৬. মানিকরণ: সেখানে রয়েছে মহাদেবের মন্দির। মানিকনগর সাধারণত ধর্ম বর্ণ
সকল মানুষ সেখানে প্রতিবছর ভিড় জমায়।
৭. হিড়িম্বা দেবী মন্দির: হিড়িম্বা দেবীর মন্দির 1553 সালের পৌরাণিক
চারিত্রিক ভিমের স্ত্রী হিড়িম্বাকে উৎসর্গ করে নির্মাণ করা হয়।
৮. গুলাবা: গুলাবা রেহালা ঝরনা থেকে কিছুটা দূরে। সেখানে প্রাকৃতিক
সুন্দয্য দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি বরফে ঘেরা একটি এলাকা।
এসব দর্শনীয় স্থান ছাড়া আরো অনেক সুন্দর পর্যটন এলাকা রয়েছে।
সিকিম
সিকিম হল ভারতের একটি ছোট রাজ্য। এটি ভারতের উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত।
পশ্চিমবঙ্গ নেপাল ভুটান ও তিব্বতের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র সিকিম। সিকিমের
প্রধানত চারটি জেলার নিয়ে গঠিত উত্তর সিকিম ,পূর্ব সিকিম, দক্ষিণ সিকিম, এবং
পশ্চিম সিকিম। সেখানে পাহাড়ি ঝরনা, ঔষধি গাছের বন , পাহাড় হিমবাহ ও হাজারো
ফুলে ভরা। সিকিম শহর টি অপার সৌন্দর্যের ভরপুর।
সিকিমের পর্যটন এলাকা
সিকিমে দেখার মতো অসংখ্য পর্যটন এলাকায় রয়েছে। বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী
রাষ্ট্র হওয়ায় বাংলাদেশী পর্যটকদের প্রথম পছন্দ সিকিম।
১. পেলিং: পেলিং পশ্চিম সিকিমের একটি ছোট শহর। সেখানে পাহাড়ের উপর
ঝুলন্ত ব্রিজ দিয়ে মন্দিরে যাওয়া একটি নতুন ধরনের অভিজ্ঞতার কথা সকলেরই কৌতূহ
জাগায়। রিম্বির নদীর পাশে রয়েছে অরেঞ্জ গার্ডেন। সেখানে বিভিন্ন রকমের গাছ
দেখা যায়। যেমন কমলা গাছ, এলাচ গাছ, বাদাম গাছ ও এলাচ গাছের মত আরো অনেক
জনপ্রিয় গাছ সমূহ।
২. গ্যাংটক: গর্ত যদি গ্যাংটক হল সিকিমের রাজধানী। সেখানে রয়েছে ও
হনুমান টক মন্দির যেখান থেকে পার্বত্য ভ্যালি ও পাহাড়ের সুন্দয্য দেখা যায়।
এছাড়া রয়েছে সিকিম হিমালয়ের জিওলজিক্যাল পার্ক ,মনোশ্রী নাথুলা, রুমটেক
মনাস্ত্রি, গান্ধী মূর্তি লোহাসা ফলাশ ,সারামস গার্ডেন প্রভৃতি। এ সকল জায়গার
সৌন্দর্য আপনার চোখ কেড়ে নেবে।
৩. সাঙ্গু লেক: সাঙ্গু লেক পূর্ব সিকিমে অবস্থিত। গ্যাংটক থেকে প্রায়
চল্লিশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সেখানে রয়েছে বরফের হ্রদ । সেখানের আবহাওয়া
প্রচুর ঠান্ডা, যত পড়ে যাওয়া যায় তত ঠান্ডা বেড়ে যায়। সেখানে বছরে প্রায়
অনেক সময় স্নো ফল হয়ে থাকে।
৪. লাচুং: লাচুং গ্যাংটক থেকে প্রায় ১১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি
উত্তর সিকিমে তিব্বতি আর বর্ডার এর কাছে নদী দিয়ে বিভক্ত। সেখানে যেতে প্রায়
অনেক সময় লেগে যায়। যাওয়ার পথে তিস্তা নদীর স্বচ্ছ পানি ও অসাধারণ দুইটি
ঝরনা দেখে চোখের প্রশান্তি জুটে। সেখানে সুইজারল্যান্ড হিসেবে পরিচিত সিকিম
মিডিল পয়েন্টে বরফে ঢাকা পাহাড় দেখা যায়।
সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর এবং ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাসের সময় পর্যন্ত সিকিম
যাওয়ার অন্যতম সময়।সিকিমে ঘুরার মত আরও অসংখ্য ও পর্যটন স্থান রয়েছে। সারা
বছর ঘুরার মত জায়গা হল সিকিম। অসম্ভব সুন্দর সিকিম পরিবেশ দেখে বিশ্বের সকল
পর্যটকের চোখ অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়।
লেখকের শেষ কথা
ভারত বাংলাদেশে পার্শ্ববর্তী স্থান হওয়ায় সেখানে বাংলাদেশী অনেক পর্যটন বছরের
প্রায় বেশিরভাগ সময় ভারতে গিয়ে থাকে। ভারতে অসংখ্য পর্যটন এলাকায়
রয়েছে।ভারতে ঘুড়ার মতো আরও দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে, কিভাবে যেতে হবে, কত
টাকা লাগবে এবং প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পরামর্শ জানতে অবশ্যই ফলো করুন। আপনাদের
মতামত অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। ভ্রমন সম্পর্কিত আরো তথ্য পেতে
www.twestinfo.com তে চোখ রাখুন।
টুইস্ট ইনফোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়া হয়।
comment url